অদ্ভুত সমস্যায় শিশু বীথি
দেশ-বিদেশের হৃদয়বান মানুষের কাছে আব্দুর রাজ্জাক সহায়তা চেয়েছেন। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের মানুষ আবেদনে সারা দিয়ে আব্দুর রাজ্জাকের বিকাশ নম্বর ০১৭২০৩৬৬৭৮৩-এ অনেকেই বিকাশের মাধ্যমে ১০০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা পাঠিয়েছেন। এতে যে পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে বীথির চিকিৎসার জন্য তা সন্তোষজনক নয় বিধায় আরো সাহায্যের প্রয়োজন।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের জয়ভোগ গ্রামের দিনমজুর আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে বীথি আক্তার (১২)। টাঙ্গাইলের স্থানীয় জয়ভোগ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। জন্ম থেকে সারা শরীরে বড় পশম। মুখমণ্ডলসহ পুরো শরীর পশমে ঢেকে রয়েছে।
গত এক বছরে বীথির শরীরে দেখা দেয় নতুন সমস্যা। তার স্তন অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে। এখন তা নেমে গেছে পেটের নিচ পর্যন্ত। স্তনের ভারে সোজা হয়ে হাঁটতে পারে না। প্রচণ্ড ব্যথার যন্ত্রণায় চিৎকার করে সবসময় কান্নাকাটি করে বীথি। অবশেষে দিনমজুর বাবা মেয়ের কষ্ট আর সহ্য করতে না পেরে ঋণ করে মেয়েকে নিয়ে আসেন ঢাকায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বীথি বর্তমানে হরমোন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফরিদ উদ্দিনের অধীনে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা বলছেন-হরমোনজনিত কারণে তার এ সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসায় এ সমস্যা কিছুটা দূর হবে। কিন্তু প্রচুর টাকার প্রয়োজন।
বীথির বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বীথিকে নিয়ে খুবই বিপদের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। বীথি আমার বড় মেয়ে। জন্ম থেকে পশমের সমস্যা ছিল। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। এ অবস্থায় সে পড়ালেখা চালিয়ে গেছে। কিন্তু গত বছর থেকে তার স্তন অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে। এখন এর ব্যথায় সে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।’
বাবা বলেন, ‘টাঙ্গাইলে ভাড়ায় মোটরসাইকেল (অন্যের) চালিয়ে যা রোজগার করেন তাতে ছয়জনের সংসার কোনোমতে চলে যায়। বীথির চিকিৎসার জন্য ব্যাংক থেকে ২০ হাজার ও মানুষের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। সে টাকাও শেষ। সহায়-সম্বল বলতে আছে মাত্র বাড়ির জমিটুকু।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মুখে যেমন পশম দেখছেন, তেমনি বীথির সারা শরীর পশমে ঢাকা। ১১ বছর বয়সে তার মাসিক হয়েছে। এই এক বছরে তার স্তন এত বড় হয়েছে যে, হাঁটাচলাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। সেই চিকিৎসাও ডাক্তাররা করবেন বলেছেন। ডাক্তাররা বলেছেন, হরমোনের কারণে তার শরীরে পশম হয়েছে।’
বীথির মা বিউটি আক্তার বলেন, ‘গাইনি বিভাগের ডাক্তাররা দেখছেন। আমার মেয়ের দুটো স্তন বড় হয়ে পেট পর্যন্ত নেমে গেছে। পশমের চাইতে এইডাই বড় সমস্যা। সে ঠিকমতো দাঁড়ায়ে থাকতে পারে না।’
আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা যায়, তার সংসারে মা, স্ত্রী বিউটি আক্তার, বীথিসহ আরো দুই ছেলে রয়েছে। বীথিই তাদের বড় মেয়ে। মেজো ছেলের বয়স ৯ বছর। সে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। ছোট ছেলের বয়স সাত বছর। সে ক্লাস ওয়ানে পড়ে।
অন্যের মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে আব্দুর রাজ্জাক দিনে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা রোজগার করেন। মোটরসাইকেলের মালিককে প্রতিদিন ৩০০ টাকা দিতে হয়। বাকি দুই-আড়াই শ’ টাকা তার সংসারের খরচ চালাতেই ব্যয় হয়ে যায়।
বীথির জন্য সহায়তা পাঠানো যাবে এই বিকাশ নাম্বারে : 01720366783
মাহবুব এইচ শাহীন/প্রকাশক ও সম্পাদক/কাগজ২৪