ইহকাল গেলেই পরকাল

 

 

ইহকাল গেলেই পরকাল
-আওলাদ হোসেন

দেখতে দেখতে ইহকাল শেষ হয়ে এল। পূর্বেরা আমাদের জন্য অনেক করে গেলেও শেষ রক্ষা করে যেতে পারেননি। অল্পের জন্য আটকে আছে। কথার যাদুকরেরা এখন পরপারে। একটা জোটবদ্ধ জাতি দুই পক্ষেই জোরালো সম্পর্ক গড়ে উঠার পর পিরামিডের মত চূড়া থেকে ঝুর ঝুর করে ভেঙ্গে সমান হয়ে যাচ্ছে। মানুষ মানুষকে জাতি সত্ত্বার অংশ হিসেবে রাষ্ট্র গড়ে, স্বাধীনতা চায়্ সেই মানুষই আপন সত্ত্বাকে মাথা চারা দিয়ে উঠতেই দেয় নাই। বৃহৎ শক্তিরা কি আনন্দ যে পায়। স্রষ্টা কোন শক্তিই দেন নাই। যুগে যুগে ছোট খাট কিছু একটা ঘটতে পারে কিন্তু প্রলয়ংকারী কিছু হয় না। ব্যক্তি জীবনে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে তিলে তিলে ক্ষয় হয় পাহাড় পর্বত, নদ-নদী খাল বিল শুকিয়ে যায় যান্ত্রিক সভ্যতায় এখন কলে-কারখানায় সবই মজুত থাকে। এখনও অবশ্য মাছ ধরার দৃশ্য, পলো চাপানো বাঙালি সুযোগ পেলেই নেমে পড়ে সে এক দুরন্তপনা। শিক্ষাঙ্গনে গ্রাম থেকে উঠে আসারা শারীরিক কসরৎ চালিয়ে যায় মাছ ধরা, পলো চাপানোর পরিবর্তে। এতে বিপদে দেশকে রক্ষা করার মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। এখানেও বুদ্ধিবৃত্তি, কুটকৌশল আর চতুরতা ও প্রতারণা জোটবদ্ধ হয়ে গড়ে উঠেছে। আমাদেরকে বলা হয় আপনারা বুঝবেন না। বর্তমানে আন্দোলনের জোয়ার বইছে। বাঙালি দেখে থেকেই শিখে। প্রাথমিক শিক্ষায় দীর্ঘদিনের চাকুরির অভিজ্ঞতা আমার আছে। আন্দোলন ছাড়া প্রাপ্তি যোগ নেই। এখন প্রাইমারি শিক্ষকগণ আন্দোলনের মাধ্যমে যদি মান উন্নয়ন করে থাকেন ভাল কিন্তু এর পরিবর্তে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অতিরিক্ত টাকা ও অতিরিক্ত পাঠ্যদান বন্ধ করতে হবে। যাকে জাতীয় জাগরণ এবং ব্যাপক পরিবর্তন, আলোড়ন সৃষ্টি হওয়ার কথা। অন্যান্য দের সমপর্যায়ের দাবী ছাড়াই আন্দোলনের অংশ বিশেষ ছড়িয়ে দেয়ার কথা, অন্যথায় সামাজিক বৈষম্য দেখা দিবে বিশেষ করে পেনশনধারীদের আন্দোলনের সামর্থও নেই শক্তিও নেই। চিকিৎসাভাতা যথেষ্ট হওয়ার পরেও ডায়াবেটিস সব খেয়ে নিচ্ছে। উপরন্ত মান সম্মান আন্দোলনকারী সমান থাকছে কিনা তা রক্ষা করা দরকার, হবে হয়তো। আমার মনে হয় পরকাল পেনশন হতেই শুরু হয়। এখানে মানুষ বুঝতে পারে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে কোন সম্মান বোধ নেই, মানবতাবোধ নেই, পেনশন প্রদান কোন ক্রমেই পূর্বে প্রদত্ত পদ মর্যাদার যেন খেলাফ না হয়, অমর্যাদা যেন না হয়। টাকা পাওয়াটাই বড় কথা নয়, অনেকের সন্তানই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সিভিল সার্জেন্ট যারা পিতা/মাতার সামান্যতম কষ্টও করতে রাজী নয়, পেমেন্ট ডেতে একটু কর্তাব্যক্তি নজরদেন কাউকে বাইরে ২/৩ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা না হয়। এটা জাতির জন্য অসম্মান। যে বাঘ, যে সিংহ ঘুমিয়ে আছে তারা আর জাগবে না, তাদের আর খোঁজ খবর নিবেনা, পরকালই তাদের একমাত্র ঠিকানা। প্রাথমিক শিক্ষকদের পদমর্যাদা ও বেতন আশাতীত হয়ে থাকে, আমি তাদের উপদেশ দেব এর মর্যাদা রক্ষাকরার জন্য। পরিদর্শনের যে ছক বাধা নিয়মকানুন আছে তার হাত থেকে রক্ষা পায় এবং পরিদর্শনে নিয়োজিতদের পরিদর্শনে আগ্রহী এবং অভ্যর্থনা জানাতে পারে এবং সমাজে তার স্বীকৃতি মেলে এবং কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে যায়, অন্যথায় কোনটিই টিকবেন্ ানমুনা জরিপ করলে সত্যতা মিলবে। ইহকালের পরেই পরকাল শুরু। কিভাবে শুরু হবে আল কুরআনে তার বর্ণনা দেয়া আছে। সে ভয়ঙ্কর বর্ণনা দিতে গেলে ঠ্যাং কাঁপে, চক্ষুস্থীর হয়ে আসে মাথা কাজ করে না। পরকাল আসবে কিভাবে? উত্তর খুবই সহজ, প্রথম কাল এল কিভাবে? বৃষ্টিতে ঘাস যেমন গজিয়ে উঠে, পরকালে মানুষ তেমনি গজিয়ে উঠবে। অনন্ত জীবন পাওয়া যাবে। হুরদের পদচারনা সারাক্ষণ মুখর করে রাখবে। সেখানে মানুষের শরীরের যে পরিবর্তন হবে তাতে দু:খ কষ্ট চিন্তা ভাবনা যে থাকবে না তা বলাই যায়। হুরদের আগমন যে মহিলাদের আগমন আর তাতে মহিলা ও পুরুষদের অধিকার যে সমান সমান হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সেখানে কোন কাজ করতে হবে না শুধু আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে। পৃথিবীতে আল্লাহকে তো পাাওয়া গেল ন া তবে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভই হবে একমাত্র কাম্য। সেই স্রষ্টার সন্ধান করাই ধর্মের কাজ। ধর্মের আর কোন কাজ আছে বলে মনে করি না। এখন ধর্মান্তরিত করা নিষিদ্ধ। ধর্মের জন্য যুদ্ধ করাও নিষিদ্ধ। রাষ্ট্রের সংজ্ঞা এসব নির্ধারণ করে জীবন যাপন অত্যন্ত সহজ করে দিয়েছে। অশান্তি কারো কাম্য নয়। অতএব ব্যক্তি জীবনে স্রষ্টাকে খুঁজতে হবে, সাধনা করতে হবে, বাংলা কুরআন সংগে রাখতে হবে অনেকে মোবাইলে ডাউন লোড করে রাখে। তাতে সমস্ত কুরআন খাঁটি জ্ঞান হাতের কাছেই থাকে। তবে ২নং জ্ঞানের বৃদ্ধি বেশি এ থেকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। শয়তান আমার আপনার জ্ঞানকে বিভ্রান্তি করার জন্য সর্বক্ষণ সচেষ্ট থাকবেই এটা আল্লাহর হুকুম। প্রথমে মৃত্যর পর বলা হবে মিনহা খালাকনাকুম ওয়াফিহা নুইদুকুম ওয়া মিনহা নুখরেজুকুম তারাতান উখরা… মাটি থেকে বের করে আনা হবে। সময়তো গেল শেষ পর্যন্ত স্বাধীন দেশ হলো কিন্তু ফেরকা ফাসাদ গেল না। আমি মনে করি শয়তান এখানে বাঁশ গেড়েছে আর বাঁশ দিচ্ছে বিনা কারনে বিনা পয়সায় যাকে মাগনা কামলা বলে। এক পক্ষকে বলে কষে ধর অপর পক্ষকে বলে ছেড়ে দিস না আছি দুই পক্ষেই সুবিধামত সুযোগ পেলেই ছেড়ে দেব। মুশকিল হচ্ছে ইসলামী পার্টি নিয়ে এরা সময় সময় লা হাাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়ে থাকে, ফলে আমার গায়ে আগুন ধরে যায় ভয় পাই পালিয়ে বেড়াই। তবে আমার আশ্রয় দাতা আছে অনেক তারা আমাকে আশ্রয় দেয় তখন ঐ দোয়া পড়েও কাজ হয় না। ইরাক ও লিবিয়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তা প্রমাণ করে ছেড়েছে। ওআইসি আছে বটে কিন্তু আল-কুরআন নেই। আল-কুরআন থাকতে হলে মাটির আসনে বসে দেশ শাসন করতে হবে জনগণই চাইবে কাকে দিয়ে দেশ শাসনের ভার দিতে হবে ইত্যাদি কিন্তু জানগণই এখন চায় না। কারণ এক কবি বলে ছিরেন যখন গায়িকা এসে মঞ্চে স্থান নিল তখন আমি আর রইলাম না, উপরন্ত বেড়ায় খেত খায়, পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহার করে শক্তির পরীক্ষা দেখায় শুধু কোরআন থেকে দূরে থাকার জন্য। কোরআন হাতে থাকলে পারমানবিক অস্ত্র কিছু না কারণ এর যে শক্ত তা মানুষ কে এতটাই নীতিবান, ধৈর্যশীল, আল্লাহর ভয়ে ভীত ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নারী, মদ, জুয়া বন্ধ, হত্যা, অপহরন এবং শক্তি বিচার করে থাকে যে বিধর্মীরা সহজেই হার মানে। কিন্তু আমরাই সে পথ বন্ধ করে দিয়েছি। এরই নাম হচ্ছে ইসলামের ইতিহাস, কিন্তু পরকাল যাবে কোথায়? ইহকালতো শেষ, এখন পরকালের চিন্তা করতে হবে। আল্লাহর পরীক্ষা নেয়া শেষ যা চেয়েছে বাঙালিকে তাই দিয়েছে, এখন আল্লাহর নাম নিতে হবে, মসজিদে অবশ্য স্থান পাওয়া যায় না, টঙ্গীতেতো কথাই নাই তাহলে পরকালের আলামত কোথায় গেল? বাঙালির কথা বার্তায় কাজে কর্মে সব বিদেশী চাল যা বলে মিথ্যা বলে, যা প্রতিজ্ঞা করে তার বিপরীতটা করে, পরাশক্তিকে যমের মতভয় পায়। আল কুরআনে যা বলা আছে পরকালে নিশ্চয়ই তা প্র্যাকটিক্যাল হবে অর্থাৎ আঙ্গুলির নির্দেশে চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হবে, সমুদ্র দুই ভাগ হবে ইত্যাদি। ইহকালে হয় না কারণ এটা যাদু বিদ্যা না, তাছাড়া একটা নিয়মের মধ্যে পৃথিবীটা চলছে। তবে আল্লাহ্ সাহায্য করবেন যদি সাহায্য পাওয়ার উপযুক্ত হয়। পৃথিবীতে যৌন জীবন সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দদায়ক ও দৈহিক মানসিক প্রশান্তি যা দুনিয়াতেই হারিয়ে যায় পরকালে সেই সঞ্জীবনী সূধার প্রাথমিক স্তরই হবে “সেথায় রয়েছে উত্তম চরিত্রের সুন্দরীরা তারা তাবুতে সুরক্ষিতা গৌর বর্ণের হুর;….।” এভাবেই জীবনের শেষ অধ্যায় শুরু হবে এবং সুখের হবে যদি সত্যের সন্ধান মিলে। সবশেষে বলতেই হচ্ছে আলায়ছাল্লাহু বি আহকামিল হাকিমীন (সব হাকিমের উপরের হাকিম), এবং লাতাকনাতু মিররহমাতিল্লাহ (আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়োনা। পৃথিবী নির্ভর করছে আল্লাহর নির্দেশে আর এটাই হচ্ছে ইহকাল ও পরকাল যা অধিকাংশ মানুষ বুঝতে পারে না। আর আমরা ইহকাল হারাই লাভে ও লোভে, পরকাল হারাই অবিশ্বাসে।


 

  • প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

 


 

কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!