আমরা মুসলমান হওয়ার গর্ব করলেও রাষ্ট্রের আইনে কুরআন মানতে রাজি নই : হামিদ মীর
আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আমরা নিজেদের মুসলমান হওয়া নিয়ে গর্ব করি। কিন্তু কুরআন শরিফকে রাষ্ট্রের আইন আখ্যায়িত করা থেকে দূরে থাকি। কেননা কিছু শক্তিধর মানুষের ব্যক্তিস্বার্থ কুরআনের শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক।’ পাকিস্তানের দৈনিক জং এ প্রকাশিত কলামে হামিদ মীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, উদাহরণস্বরূপ কুরআন সুদকে হারাম ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের সংবিধানের ৩৮-এফ ধারাতে অঙ্গীকার করা হয়েছে, সুদ উঠিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু যখন কোনো আদালত সুদ উঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন, তখন গণতান্ত্রিক সরকারও রিভিউর আপিল করে এবং সেনা সরকারও রিভিউর আপিল করে। অথচ সুদকে বহাল রাখা শুধু কুরআনি নির্দেশ নয়, বরং পাকিস্তানের সংবিধানেরও পরিপন্থী। আমার জানা আছে, আমার এ উক্তিকে মৌলবাদীদের সমর্থন বলে আখ্যায়িত করা হবে। আমার আবেদন, ওই কথাই বলছি, যা কুরআনে আছে; যা পাকিস্তানের সংবিধানে আছে, এমনকি যা কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর শিক্ষার হুবহু রূপ।
এটা বড় নির্মম উপহাস, আমাদের কিছু মধ্যপন্থী নেতা এমন কথা বলেন, ইসলামে বাড়াবাড়ি নেই, কোনো অমুসলিমকে জোরজবরদস্তি মুসলমান বানানো যায় না। কিন্তু যখন আদালত বলেন, সুদ উঠিয়ে দিন, কেননা এটা আল্লাহ তায়ালার বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামান্তর, তখন তারা রিভিউর আপিল করে বসেন। অথচ এখন অমুসলিম রাষ্ট্রগুলোতেও সুদবিহীন কার্যক্রম পরিচালনাকারী ব্যাংক বেশ লাভজনক ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শুধু এতটুকু বলতে চাই, মডারেট বা মধ্যপন্থার অর্থ এটা নয় যে, আপনি শুধু কুরআনের ওই শিক্ষাগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে যাবেন যেখানে অমুসলিমদের অধিকার সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। ওই শিক্ষাগুলোরও আলোচনা করা হোক, যেখানে মুসলমান-অমুসলমান উভয়েরই অধিকার সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। সুদ উঠিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ধনিক শ্রেণীর থাবা থেকে বাঁচানো। আইন ও সংবিধানের ওপরওয়ালা প্রশাসনিক মুখপাত্রদের সব মনে থাকে, কিন্তু ৩৮-এফ ধারা মনে থাকে না। মনেই বা থাকবে কেমন করে? কেননা, মনে করিয়ে দেয়া যাদের দায়িত্ব, তাদের কাছে ’ফাটা’কে পৃথক প্রদেশ বানানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।