খানসামায় ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে চলছে আমনের নতুন চারা রোপন
ভূপেন্দ্র নাথ রায়, খানসামা(দিনাজপুর) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দিনাজপুরের খানসামায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে নতুন করে আবার আমনের গোছা লাগাতে শুরু করেছে। ধান চাষের জমিগুলোতে রোপা আমনের চারা রোপনের পর চাষিরা মাঠে সবেমাত্র সার প্রয়োগ করেছে। ঠিক এ সময় হানা দেয় আকষ্মিক বন্যা। এতে প্লাবিত হয় শত শত পরিবার সহ বিভিন্ন ফসলক্ষেতসহ দিশেহারা হয়ে পড়ে সাধারণ কৃষক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তারের সাথে কথা হলে জানায়, চলতি বছর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৫৭টি গ্রামে প্রায় ১২ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চারা রোপন করা হয়েছে। আর হঠাৎ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর ফসলী জমি এবং নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির সদ্য লাগানো রোপা আমন ক্ষেত। এছাড়াও বেগুন, পটল, করলা ও অন্যান্য শাক-সবজি চাষ হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমিতে। আর নষ্ট হয়েছে ৮ হেক্টর জমিতে থাকা বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায় ৪৫টি গ্রাম ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়। এতে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫শ হেক্টর জমির রোপা আমন এবং ১৫ হেক্টর জমিতে থাকা শাক-সবজির ক্ষেত।
কৃষকরা আমন তোলার পর ওই জমিতে আগাম রবি শস্য চাষের তাগাদা করে। একারনে মোক্ষম সময়কে উপেক্ষা করে নিচু জমিগুলোতেও আগাম রোপা আমনের চারা রোপন করে থাকে। সেদিক লক্ষ্য রেখে এ বছরও চাষিরা আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ বন্যায় আকষ্মিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা। বর্তমানে বন্যার গ্রাস থেকে পরিত্রাণের পর আবার উঠে দাঁড়াতে চাষিদের অনেকে এসব জমিতে নতুন করে রোপা আমনের চারা রোপন শুরু করেছে। আর চারা সংগ্রহ করতে তাদেরকে ছুটতে হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু সহজে মিলছে না আমনের চারা।
ফলে, বাধ্য হয়ে অনেক চড়া দামে কিনতে হচ্ছে অন্যের রোপা আমনের গোছা। চাষিদের দেয়া তথ্য মতে এক বিঘা জমির গোছা কিনতে দাম দিতে হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকার মত। আর এক বিঘার গোছা দিয়ে চারা লাগানো যাচ্ছে মাত্র ৪ বিঘা জমিতে।
কায়েমপুর গ্রামের কৃষক গিয়াস উদ্দিন, শুশীল চন্দ্র, জহুরুল হক ও নজরুল ইসলাম, হাসিমপুরের সাইদুল ইসলাম, মনিন্দ্রনাথ রায়, সামাদ ও নগেন চন্দ্র, আগ্রার বিধান চন্দ্র ও মোহাম্মদ আলী, জোয়ার গ্রামের লিটন চন্দ্র, সুরেশ রায় ও আব্দুল জব্বার, রামনগরের হিটলার এবং মারগাঁও গ্রামের মনছুর আলী, আব্দুর রহমান সহ অনেকের সাথে। তারা বলেন, তীব্র শ্রমিক সংকটের কারণে প্রথমবার আমন চারা রোপনে বিঘা প্রতি খরচ করেছি প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এখনও আমাদের আর্থিক সংকট কাটেনি। কিন্তু হঠাৎ বন্যায় ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। চড়া দামের পরও ঠিকমতো চারা পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যের জমিতে লাগানো আমন ক্ষেত তুলে লাগাতে হচ্ছে। আবারও প্রতি বিঘায় খরচ হচ্ছে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মত। এরপরও নতুন আশায় বুক বেধে খানসামার চাষীরা রোপন করছে আমনের চারা।
- কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।