পঁচিশে মার্চ গণহত্যা দিবসঃ এক ভয়াবহ স্মৃতি
পঁচিশে মার্চ গণহত্যা দিবসঃ এক ভয়াবহ স্মৃতি
সিডনীর কথামালা
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সাম্প্রতিকতম অধিবেশনের সমাপ্তি দিনে একটি সর্বস্মত প্রস্তাব নিয়ে পঁচিশে মার্চকে “গণহত্যা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এ জন্যে জাতীয় সংসদ, তার নেতা শেখ হাসিনা ও সংসদের সকল সম্মানিত সদস্য বৃন্দকে আন্তরিক অভিনন্দন।
অভিনন্দন জানাই বিশেষ ভাবে জাতীয় সংসদের অন্যতম সদস্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারকে এই প্রস্তাবটি সংসদে উত্থাপন করার জন্যে-যা না করলে আর কোন সদস্য এমন একটি বেদনা জড়িত রাতকে জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে স্মরণে আনার মাধ্যম হিসেবে মহান জাতীয় সংসদে আকারে প্রস্তাব উত্থান করার কথা ভাবতেন কি না তা নিয়ে সংশয় আছে।
যা হোক, দিনটি কিভাবে সরকার পালনের কথা সরকার ভাবছেন তা আমার এখনও জানা নেই, জানার সুযোগও ঘটেনি। তবে ২৫ মার্চের ভয়াবহ রাতটির নানা কাহিনী আজকের প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে যে নেহায়েতই অজানা তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই এটা তাদের দোষে ঘটে নি-ঘটেছে নেহায়েতই আমাদের দোষে। আমাদেরই অবহেলায়। আকুণ্ঠচিত্তে এ কথা স্বীকার করে নিতে বিলম্ব করা উচিৎ নয় – সরকারেরও নয়।
এই নিবন্ধ লেখার উদ্দেশ্য কাউকে অযৌক্তিক কোন অভিনন্দন জানানো নয় – তেমন অহেতুক কোন সমালোচনাও নয়। বরং বিক্ষিপ্তভাবে ঐ ভয়াবহ রাতের স্মৃতিটুকু আমার প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের কাছে তুলে ধরা।
অনেকেরই জানা – আমি ঢাকাবাসী নই। আজীবনই পাবনাতে থেকেছি ইচ্ছে, মৃত্যুটা যেন আমার পাবনাতেই ঘটে। ঐ ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের রাতেও কেটেছে আমার পাবনাতেই।
অনেকেই ১৯৭২ সালের শুরু থেকে শেষ পর্য্যন্ত ৩৭৫ টি দিনই ছিল নানা উত্তেজনায় ভরা-সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য। ঐ বছর ছিল সবে পাকিস্তানের প্রথম দেশজোড়া অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনোত্তর বছর। নির্বাচনটি ছিল নানা কারণে ঐতিহাসিক সমগ্র পাকিস্তান বাসীর জীবনে।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৪ এর আগষ্টে বাঙ্গালী জাতির সমুদ্র প্রমান রক্তের বিনিময়ে। সে রক্ত সাতচল্লিশ পূর্বে বেশ কিছু বছররে ক্ষরণ হয় বন্যার ¯্রােতের মত । ভ্রাতৃঘাতী হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা একাধিকবার ঘটে এবং অখ- বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই ঘটেছিল তার বিস্তার। সেদিগুলিতেও মৃতের দেশগুলি যাথাযথভাবে সমাধিস্থ বা স্মশানে অগ্নিদদ্ধ করা তার যথাবিহিত সৎকার করা সম্ভব হয়েছিল কি না জানা নেই।
তবে ঐ দেশ জোড়া অসংখ্য মৃত্যুর মিছিল আমাদের একাত্তরের নয় মাসের লক্ষ লক্ষ মৃত্যুর চাইতে সংখ্যায় অনেক বেশী ছিল। একাত্তরের মৃতদেরকে আমরা যথার্থই শহীদের মর্য্যাদা দিয়েছি কিন্তু ঐ যুদ্ধহীন অপরাধহীন অগণিত নির্দোষ মানুষকে চেতনা ভাবে ঠা-া মাথায় শিশু-কিশোর-যুব-বৃদ্ধ ধর্মীয় বিশ্বাস লিঙ্গ নির্বিশেষে যাঁরা হত্যার নির্মম শিকারে পরিণত হলেন দিব্যি তাঁরা হারিয়ে গেলেন ইতিহাসের পাতা থেকে যদিও হত্যাগুলির বিনিময়ে গঠিত হয়েছিল পাকিস্তান নামক ‘বেহুদা’ রাষ্ট্রটি।
কিন্তু সেই একই বাঙালি মুসলিম সমাজ যাঁরা ভোট দিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে পরম মমতায় রায় দিলেন সেই মুসলিম সমাজের পাকিস্তান আন্দোলনের নামে ইসলামের নামে ধাপ্পাবাজিটা ধরতে আদৌ সময় লাগে নি। পাকিস্তান হলোই শেষ পর্য্যন্ত। দু’টি অংশে বিভক্ত এক কিম্ভূত কিমাকার অদ্ভূত এক রাষ্ট্র-পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব – পাকিস্তান। আমরা বাঙালিরা পড়লাম পূর্ব পাকিস্তানে যা আমলে পূর্ব বাংলা নামেই খ্যাত ছিল।
বলা হয়েছিল, মুসলমানদের জন্যে পাকিস্তান নামে একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হলে সামপ্রদায়িকতার অবসান হবে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাগুলি আর ঘটবে না। মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান নির্বিশেষে সবাই মিলে এক আস্থাসূচক পারস্পারিক গভীর মিত্রতার সম্পর্ক পুন: প্রতিষ্ঠিত হবে।
এই ঘটনা ১৯৪৭ সালের। আজ থেকে ৭০ বছর আগের। ইতিমধ্যে আমরা যে দনিগুলি পার করে এলাম পাকিস্তান আমলে – তখন সেদিনের সেই কথগুলি কি বাস্তবে ফলেছিল? সেই সম্প্রীতির সংসার বা সমাজ কি সত্যই গড়ে উঠেছিল? না, রক্তবন্যা তবুও বয়েছে-বয়েছে পাকিস্তানের ২৩ টি বছর ধরেই।
শুধু সাম্প্রদায়িকতা বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাই না নানাবিধ নির্য্যাতনও নেমে এসেছিল পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলার বাঙালিদের বুকে। তাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্য্যাদা অস্বীকৃত হয়েছিল – বলা হয়েছিল বাংলাভাষা মুসলমানের নয় ওটা হিন্দুদের ভাষা আর হিন্দুরা তো ভারতের দালাল ও ইসলামের শত্রু।” তাই “ইসলাম” রাষ্ট্রে “ইসলাম-বিরোধী ” কোন ভাষা রাষ্ট্র ভাষার স্বীকৃতি পেতে পারে না। পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে একটাই এবং সেটা হলো ঊর্দু।
এ জাতীয় আরও অসংখ্য ধরণের সাম্প্রদায়িক প্রচারণা পাকিস্তানের ২৩ টি বছর ধরেই রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরস্তর চালানো হয়। কাঠমোল্লারাও কিছু কমে ছাড়ে নি। অবশ্য আজকের যুগের মত ইসলামের নামে বিশ্ব জোড়া উগ্রবাদী জঙ্গী সংগঠনগুলির জন্ম তখনও হয় নি।
কিন্তু তাদের ঐ ধরণের সাম্প্রদায়িক প্রচারণা, যার নির্ঘাত পরিণতি স্বরূপ গণতন্ত্র হরণ, মানবাধিকার লংঘন, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা হরণ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সবই ঘটতে থাকলো পূর্ব বাংলা ও পাঞ্চাব জুড়ে। এবং তার পরিণতিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের , বিশেষ করে হিন্দুদের, গণ-দেশত্যাগ, তাদের বাড়ীঘর, সহায়-সম্পদ লুণ্ঠন, নারী অপহরণ ও ধর্ষণ প্রভৃতি অব্যাহত গতিতে চলছিল। এর প্রতিটি ঘটনাই যদিও ফৌজদারী আইনে শুরুতর অপরাধ এবং কঠোরভাবে শাস্তিযোগ্য-তবু পরিকল্পিত ভাবেই কোন একটি মামলাও দায়ের করতে এগিয়ে আসে নি তদানীন্তন সামরিক বেসামরিক বা নির্বাচিত অনির্বাচিত কোন সরকারই। বিচারের বানী নিরবে নিভৃতে কাঁদছিল দশকের পর দশক ধরে।
এগুলি র বিরুদ্ধে, বিশেষত: সাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রহনিতার বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার গোড়া থেকেই বামপন্থী ছাত্র-যুবক ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্দীপ্ত জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, শেখ মুুজিবর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ মিলে বিশে সুরু করেন ১৯৪৮ থেকেই পাকিস্তানের রাজনৈতিক ভাবাদর্শ সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিত্ত্বের ভিত মারাত্মকভাবে নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
অত:পর নানামূখী আন্দোলন অব্যাহত ভাবে ও ধারাবাহিকতার সাথে পরিচালিত হতে থাকে সমগ্র পূর্ববাংলা ব্যাপী যার মাধ্যমে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবী নূরুযল আমিনের মুসলিম লীগ সরকার মেনে নিতে বাধ্য হয়। শেরে বাংলা একে ফজলুল হক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় মুসলিম লীগ – বিরোধী যুক্তফ্রন্ট। নির্বাচনে ভরাডুবি হয় মুসলিম লীগের। মুসলিম লীগ তার পর আর কদাপি মথা তুলে দাঁড়াতে পারে নি। ক্রমান্বয়ে পাকিস্তান শ্রষ্ঠা এই দলটির চির বিলুপ্তি ঘটেছে পাকিস্তান আমলেই পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে।
কিন্তু সকল কিছুর পরেও সত্য পাকিস্তানের অস্তিত্ব বজায় থাকা পর্য্যন্ত সাম্প্রদায়িকতার প্রচার থামে নি-ধর্মীয় সমানাধিকারের স্বীকৃতি জোটে নি, ন্যূনতম গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠিত হয় নি বরং তা সুদীর্ঘ কালের জন্য সামরিক জাস্তার নির্মম শাসন-শোষনের যাঁতাকলে ফেলে একের পর হরণ করা হয়েছে তাকে অব্যাহতও রাখা হয়েছে। তাবৎ গণ-আন্দোলনের নানা সময়ে বিজয় সূচিত হলেও মৌলিক আদর্শ যথা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, বাংলাভাষার প্রকৃত মর্য্যাদা, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, আইনের শাসন-শোষণ-বৈষম্যের অবসান কদাপি অর্জন করা সম্ভব হয় নি। এমন কি, সমগ্র পাকিস্তান ব্যাপী সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সাধারণ নির্বাচন ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭০ এর অর্ধাংশ পর্য্যন্ত কয়েকটি দশক চলে গেলেও অনুষ্ঠিত হয় নি।
অবশেষে ১৯৭০ এর শেষ দিকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও বামপন্থীদের দৃড় সমর্থন ও আন্দোলনে সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে বাধ্য হয়। প্রতিশ্রুতি দিতেও বাধ্য হয় নির্বাচনের অঙ্গনে সংখ্যাসাম্য (দুই অঞ্চলের মধ্যে) বাতিল করে সবজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিটি প্রদেশে একযোগে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ এবং বৃহত্তম দলের হাতে নির্বাচনোত্তর কালে শান্তিপূর্ণ ভঅবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।
ফলে নির্বাচনে দু’একটি ছোট দল ব্যতীত আওয়ামী লীগ, ওয়ালী-মোজাফ্ফরের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি সহ সকলে অংশ গ্রহণ করলে বিপুল ভোটাধিক্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে সমগ্র পাকিস্তানের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদীয় দল হিসেবে আত্ম প্রকাশ করে শুধুমাত্র পূর্ববাংলা থেকেই। তদুপরি ওয়ালী ন্যাপ বেলুচিস্তান ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে অনুরূপ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ একক দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাতে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীর প্রতি সৃদৃঢ় সমর্থন ঘোষণা করে। ফলে, নির্বাচনী নীতিমালা অনুযায়ী পাকিস্তান সরকার গোটা পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা বঙ্গবন্ধুর হাতে হস্তান্তর করতে বাধ্য। কিন্তু দেশটা পাকিস্তান তো। তাও আবার “ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান।” ইসলামিক রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা যেন এক “সোনার পিতুলে ঘুঘু”।
শাসকগোষ্ঠী নানা টালবাহানা করতে থাকলে বঙ্গবন্ধুও হুমকি দেন। অবশেষে ইয়হিয়া-ভু্েট্টা গোটা করণীয় নির্ধারণে বঙ্গ বন্ধুর সাথে ডায়লাগ এর প্রস্তাব দিলে দেশের অভ্যন্তরে তার তীব্র বিরোধিতা সত্বেও শান্তিপূর্বভাবে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে পশ্চিম পাকিস্তানী নেতাদের ও ইয়াহিয়া গোষ্ঠীর সাথে আলোচনায় বসতে বঙ্গবন্ধু সম্মত হন।
বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলে দৃশ্যত: কার্য্যকর কোন অগ্রগতি ব্যাতিরেকেই। আর ইয়াহিয়া গাষ্ঠী সময় ক্ষেপনের ঐ কৌশল নিয়ে গেহাপনে পাশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিপুল সংখ্যক পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ নানা পথে আমদানী করতে থাকে এবং ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় তারা আলোচনার সমাপ্তি ঘোষণা না দিয়েই গোপনে ঢাকা ছেড়ে চলে যায়।
ন্যাপ সভাপতি খান আবদুল ওয়ালী খান বঙ্গবন্ধুকে ইয়াহিয়া ভূট্টোর গোপন নিদ্ধান্তের খবর (গণহত্যা সংক্রান্ত) অবহিত করে সতর্ক হতে অনুরোধ জানিয়ে চলে যান।
ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা লোকমারফত চট্টগ্রামে পৌঁছান। আর তাঁকে তাঁর ৩২ নং ধানমন্ডীন্থ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।
ও দিকে বাঙালি তরুনেরা পরিস্থিতি উপলব্ধির আগে থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের জন্য অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে থাকে।
আর ইয়াহিয়া “অপারেশন সার্চ লাইট” নামক বাংলাদেশে নির্মম গণহত্যার রুরেখা আদেশ দিয়ে চলে যাওয়ার এবং বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার কতিপয় ছাত্রাবাস ও শিক্ষকদের বাসায় পীলখানায় ই.পি.আর বাহিনীর (আজকের বিজিবি) হেডকোয়ার্টার এবং রাজার আগের পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অতর্কিতে রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত মানুষগুলির উপর ভয়াবহ একতরফা গুলিবর্ষন করে। ঢাকা শহরে একই সাথে কারফিউ জারী করে পথে-ঘাটে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। একরাতে (২৫ মার্চ) একমাত্র ঢাকা শহরেি প্রায় দশ হাজার বাঙালী নর-নারী শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
বাঙালি জাতিও এই হত্যার প্রতিশোধ নিতে নয় মাসব্যাপী কঠিন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে অত:পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। এ নয় মাস ব্যাপীও অবরুদ্ধ বাংলাদেশর নানা অঞ্চল ব্যাপক গণহত্যা সংঘঠিত হয়।
কিন্তু ২৫ মার্চ রাতের ঘটনা যেমন নির্মম, যেমন ভয়াবহ, যেমন অতর্কিত এবং ঘঘোষিত যে পৃথিবীর ইতিহাসে তার কোন নজির নেই। বিদেশী সংবাদ মাধ্যমগুলিতে তার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সংলাপ কভার করতে আসা বিদেশী সাংবাদিকেরা অত্যন্ত গোপনে নানা স্থঅনে লুকিয়ে থাকে।
দীর্ঘ দিন পর হলেও এই দিন গণহত্যা দিবস ঘোষিত হওয়া নিশ্চয়
- প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪–এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।