গোপালপুরে পুলিশের ধাওয়ায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু ৮ পুলিশ প্রত্যাহার
মো. সেলিম হোসেন, গোপালপুর প্রতিনিধি। কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে পুলিশের ধাওয়ায় হাকিম (৫০) নামের এক মাংস ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের ঝাওয়াইল বাজারের পাশের একটি জমিতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি জুয়ার আসর থেকে পালানোর সময় আহত হয় হাকিম, পরে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
তবে পরিবারের দাবি আটকের পর নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত হাকিমের মেরুদণ্ডের হাড়ের পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হারুন অর রশিদ।
বিচারের দাবিতে হাসপাতালের মূল ফটকে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। হাসপাতালের ভিতরেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয় ওসিসহ পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যকে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয় এতে রোকন নামে এক পুলিশ সদস্য ও ৫ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের এসআই আবু তাহের ও এএসআই আশরাফুল আলমসহ ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়।
জানা গেছে, উপজেলার ঝাওয়াইল গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আবদুল হাকিম কয়েকজন লোক নিয়ে স্থানীয় একটি জমিতে তাস খেলছিলেন। এ সময় এসআই আবু তাহের ও এএসআই আশরাফুল আলম একদল পুলিশ নিয়ে সেখানে অভিযান চালায়। চারজনকে আটক করলেও হাকিম দৌড় দেয়। পরে পুলিশ তাকে আটক করে নির্যাতন চালায়।
এ সময় হাকিমের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে কিছুদূরে নিয়ে ফেলে রাখা হয়। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী এক রাখাল জানান, আমি গরু রাখছিলাম। এ সময় এসআই আবু তাহেরের বুটের আঘাতে হাকিম ঢলে পড়ে। ওই অবস্থাতেই তাকে তাহেরের নিজস্ব মাইক্রোবাসে তোলা হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর তাকে রাস্তায় ফেলে পুলিশ চলে যায়।
গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হারুন অর রশিদ জানান, মৃত অবস্থাতেই হাকিমকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার মেরুদণ্ডের নিচে আঘাতের কারণে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।
গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, যদি আঘাতের কারণে হাকিমের মৃত্যু হয় তাহলে ময়নাতদন্ত সাপেক্ষে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।