চিকিৎসা খরচ পরিশোধে ব্যর্থ হলে মরদেহ আটকে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া অসচ্ছল ব্যক্তির লাশ চিকিৎসার খরচ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল জিম্মি করে রাখতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। গরিব রোগীদের এসব বিল পরিশোধে তহবিল গঠনে স্বাস্থ্য সচিব ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কয়েকটি নির্দেশনাসহ এ রায় দেন।

‘নবজাতকের লাশ হাসপাতালে রেখে চলে গেলেন বাবা-মা’ শিরোনামে ২০১২ সালের ১০ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে চিকিৎসা ভাতা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ হস্তান্তরের অস্বীকৃতি জানায় বলে উল্লেখ করা হয়। এটি যুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ওই বছরের জুনেই একটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সে বছরের ১৪ জুন হাইকোর্ট রুল দেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরেসদ। অন্যদিকে সিটি হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নাবিল আহসান।

আদালত লাইসেন্স করা সব ক্লিনিক ও হাসপাতালকে চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার কারণে লাশ জিম্মি করে না রাখার নির্দেশনা অবহিত করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে একটি সাকুর্লার জারি করতে বলেছেন। একই সঙ্গে ২০১২ সালের ৮ জুন সিটি হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর পর অভিভাবকের কাছে দ্রুত লাশ হস্তান্তরে ব্যর্থতার বিষয়টি অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে আদালত সিটি হাসপাতালকে আঞ্জুমান মফিদুলকে ৫ হাজার টাকা দান করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

রায়ের নির্দেশনার বিষয়গুলো জানিয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ গণমাধ্যমকে বলেন, একজন গরিব মানুষ তার সন্তানকে মোহাম্মদপুরে সিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন ও ১৫ হাজার টাকা জমা দেন। পরে কয়েক দিন চিকিৎসার পর নবজাতকের মৃত্যু হলে তার চিকিৎসা বাবদ আরও ২৬ হাজার টাকা বিল পরিশোধের কথা বলা হয়। শিশুটির বাবা এই বিল পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়, যা অত্যন্ত অমানবিক ও চরম মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে শুনানিতে তিনি উল্লেখ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!