দেলদুয়ারে প্রথম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা বৃদ্ধের

 

 

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী, টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। বয়স ছয়ের মতো। স্পষ্ট করে শ্রেণীর নামটাও বলতে শিখেনি শিশুটি। লম্বা সময় পড়ে আছে শিশুটির সামনে। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেতে হল শিশুটিকে। দেখতে হলো পশুত্বের বৈশিষ্ঠ্য। অর্জন হলো নতুন অভিজ্ঞতা। সুন্দর পৃথিবীর নোংড়া চিত্রে পাল্টে গেল নিস্পাপ শিশুটির ধারণা। ছয় বছরের একটি শিশুটিকে ধর্ষনের চেষ্টায় এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে জেলার দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের বর্ণী গ্রামের একটি শিশু। শিশুটি বর্ণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। তবে পাশ্ববর্তী একজন নারী দেখে ফেলায় ধর্ষণের হাত থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছে ওই শিশুটি।
অভিযোগ উঠেছে, গত রোববার দুপুরে শিশুটি স্কুল শেষে বাড়ি ফিরছিল। পথে পাশের একটি লেবু বাগানে শিশুটিকে আটকে ফেলে পাশের বাড়ির সৈয়দ আলী নামের এক বৃদ্ধ। বেঁধে ফেলে তার মুখ। শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা অবস্থায় দেখে ফেলে এক নারী। ফলে বেঁচে যায় শিশুটি।
শিশুটির মা সোনিয়া বেগম ও বাবা শাহজাহান জানান,শিশুটি এখনও ভয়ে আছে। স্থানীয়রা মিমাংশার আশ্বাস আর মেয়েলি বিষয় বলে এখনও থানায় মামলা করেননি শিশুটির পরিবার। এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে আগেও এধরণের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তারা। পাশের বাড়ির পলাশ নামের এক ছেলেকেও বলৎকার করার অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির নামে। পলাশের মা স্বীকার করলেন পলাশের সেই ঘটনার সত্যতা।

শিশুটি স্পস্ট করে কথা বলতে না পরলেও বার বার বলছে, তাকে লেবু বাগানে নগ্ন করা হয়েছিল। এমনকি জড়িয়ে ধরেছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি।

ধর্ষণ হয়নি। ধর্ষণের চেষ্টা ভেবে বিষয়টি মিমাংশার দায়িত্ব নিয়েছে একটি মহল। কিন্তু এখন ঘরোয়া বৈঠকে মিমাংশা করতে পারেনি ওই মহলটি। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু-রাতেই মিমাংশার জন্য স্থানীয়রা একত্র হয়েও মিমাংশায় ব্যর্থ হয়েছে উপস্থিতিরা।

ইতোমধ্যে এলাকার একটি মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপর একটি মহল বিষয়টি মিমাংশা করে দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সম্ভাবনার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত সৈয়দ আলীর বাড়ি গিয়ে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। কথা হলো তার ভাই আতোয়ার রহমানের সাথে। তিনি ঘটনার মৌন স্বীকারেক্তি দিয়ে বললেন, তার জন্য আমি, আমার পরিবারের সদস্যরা বাইরে বেরুতে পারছি না। কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। যেকোন উপায়ে বিষয়টি মিমাংশার দাবি জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, তার ভাই সৈয়দ আলী এরকম আর কোন ঘটনা ঘটালে তার বাড়ি উচ্ছেদ করে শহরে পাঠিয়ে দিবেন তিনি। তবুও এবারের মতো মিমাংশার অনুরোধ করেন তিনি।

স্থানীয়রা বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করলেন। পুরো উপজেলাতেই বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় শিশুটির স্বজনরা থানায় মামলা না করলেও দেলদুয়ার থানা পুলিশের এসআই হান্নান পরিদর্শন করেছে ওই শিশুটি বাড়ি। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলছেন, শিশুটি ধর্ষিত হয়নি। তবে ধর্ষণের চেষ্টা হতে পারে বলেও তিনি অস্বীকার করেননি। এছাড়া শিশুটিকে নগ্ন করার কথাও শিশুটি পুলিশকে জানিয়েছে বলে স্বীকার করলেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন মামলা হয়নি। মামলা দিলে পুলিশ মামলাটি গুরুত্বে সাথে তদন্ত করবেন বলেও তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!