জলাবদ্ধতার কি দেখেছেন, কলকাতা বোম্বে যান: খন্দকার মোশাররফ
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
ঢাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে সমালোচনাকারীদের ভারতের কলকাতা বা মুম্বাই শহরে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেছেন, ঢাকার জলাবদ্ধতা কী দেখেছেন, কলকাতা যান, বোম্বে যান। পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান সিটিতে এটা একটা সমস্যা। আমরা এর সমাধান করব।
আজ রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।
ডিএনসিসির প্যানেল মেয়র মো. ওসমান গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকার ভেতরে থাকা ৪৭টি খালের সবগুলো পুনরুদ্ধার হলেই সরকার সেগুলো খননের মাধ্যমে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে এবং এক বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতার সমস্যা ঢাকায় আর থাকবে না। এক বছর আগেও এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন- এক সাংবাদিকের এমন মন্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আমি এটা তিন মাস আগে বলেছি। আমাদের সময় দেন।
জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলা যাবে? এটা তো বিরাট ব্যাপার। আজকে যদি আপনি হিসাব দেখেন, ঢাকায় জনসংখ্যা হওয়া উচিত ছিল ৭৫ লাখ থেকে এক কোটি। সে জায়গায় ঢাকার জনসংখ্যা তিন গুণ বেড়ে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে ঢাকা মহানগরীর বৃদ্ধির কারণেই পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা ‘তাল মেলাতে পারছে না’।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সিটি করপোরেশনকে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের নেতৃত্বে ওয়াসা কাজ করলে পর্যায়ক্রমে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে সক্ষম হবে এবং করতেই হবে। এর কোনো ব্যাখ্যা দেয়া উচিতও না। জলাবদ্ধতার প্রতিটি ঘটনার সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের লোকজন সমস্যাগুলো চিহ্নিত করছে এবং তা নিরসনের উপায় খুঁজে বের করছে বলে জানান খন্দকার মোশাররফ।
তিনি বলেন, আমাদের সময় দেন। সমস্যা নিরসনে মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে এবং কিছু ড্রেনেজও আমাদের আছে। আরো ছয়টি সংস্থা ঢাকা শহরের পানি নিষ্কাশনের কাজে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এটার মূল দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার।
মেয়র বলেন, যেসব কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে, সমন্বয়ের মাধ্যমে সেগুলোর নিরসনের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তবে তা সময়সাপেক্ষ বিষয়। তবে দুই দিনে যদি ২৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় তাহলে জলাবদ্ধতা হবে এটাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, বৃষ্টি কমে গেছে, পানিও নেমে গেছে। তারপরও নাগরিক ভোগান্তি আগামীতে যাতে তীব্র না হয়, মানুষ যাতে সুন্দরভাবে চলতে পারে সেজন্য মন্ত্রীর (স্থানীয় সরকার) নেতৃত্বে কমিটি আছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ পরিস্থিতি ‘দুই চার পাঁচ দিনে’ হয়নি, ‘পঁচিশ, ত্রিশ, চল্লিশ বছরে’ সমস্যা এ পর্যায়ে এসেছে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমাদের একটু সময় দিন।’
ওয়াসার সাথে সিটি করপোরেশনের সমম্বয়হীনতার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, মন্ত্রীর নেতৃত্বে সবগুলো সংস্থা এক সাথে কাজ করে। কিন্তু সবাই যে এক সাথে কাজ করবে তা নয়। হাতের পাঁচ আঙ্গুল সমান নয়। তিনটি সংস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ করলে আর একটা সংস্থা দুর্বল হতে পারে। সে জায়গাটুকু মন্ত্রীর নেতৃত্বে সময়মত ঠিক হয়ে যাবে।