ঢাকার এই রেস্টুরেন্টে বিদেশিদের প্রবেশ নিষেধ!
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বাংলাদেশিদের আতিথেয়তায় সুনাম বিশ্বব্যাপী। কিন্তু তা সত্ত্বেও এবার জানা গেল রাজধানী ঢাকার একটি ছাদ রেস্টুরেন্টে (রুফটপ রেস্টুরেন্ট) বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এ জন্য নোটিশ দিয়েছে রেস্টুরেন্টটির কর্তৃপক্ষ। তবে রেস্টুরেন্টে কর্তৃপক্ষের দাবি, হোলি আর্টিজান হামলার পর ভবন মালিকের চাপে তারা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। অন্যদিকে, বিদেশিদের ওপর নানা হামলার ঘটনার পর এখানেও কোনোরকম অঘটন এড়াতে রেস্টুরেন্টের মালিকদের ওই অনুরোধ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন ভবনটির মালিক। উত্তরায় লেকের পাশে একটি পাঁচ তলা ভবনের ছাদে লেক টেরেস নামের ওই রেস্টুরেন্টটি অবস্থিত। এখানে মূলত সামুদ্রিক মাছ এবং স্টেক পরিবেশন করা হয়।
রেস্টুরেন্টের নিচতলায় এবং প্রবেশ মুখে ইংরেজিতে টাঙানো নোটিশে বলা হয়েছে, ‘হোলি আর্টিজান হামলার প্রেক্ষাপট এবং ভবন মালিকের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা কোনো বিদেশিকে আমাদের রেস্টুরেন্টে সেবা দিতে পারছি না। এজন্য আমরা সর্বান্ত:করণে লজ্জিত এবং ক্ষমা প্রার্থী।’
এই নোটিশের বিষয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বলছেন, ‘হোলি আর্টিজান হামলার পর, ভবন মালিক আমাদের নিষেধ করেছে যেন এখানে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে অনুমতি দেয়া না হয়। এজন্যই আমরা নোটিশটি দিয়েছি।’
এজন্য তারা নিজেরাও খুব লজ্জিত কিন্তু তাদের কিছু করার নেই বলে তিনি জানান। এই রেস্টুরেন্টে প্রতিমাসে মোট গ্রাহকের মধ্যে ১৫ শতাংশ বিদেশি আসতেন বলে তিনি জানান।
ভবনের মালিক ওয়ালিউল হাসনাত বলেন, ‘গুলশানের হামলার পর সব আবাসিক এলাকা থেকে রেস্টুরেন্ট বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেয়ার একটি আদেশ দিয়েছিল রাজউক। তখন আমি ওই রেস্টুরেন্টের লোকজনকে এখান থেকে সরে যেতে বললাম। কিন্তু তারা বললো এত তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা কীভাবে সরিয়ে নেবে। তখন তাদের বললাম, যতদিন তারা সরে যেতে না পারছে, ততদিন বিদেশিদের যেন এখানে অ্যালাউ (প্রবেশে অনুমতি) করা না হয়।’
হাসনাত বলন, ‘এটা যে লজ্জার বিষয়, তা আমিও উপলব্ধি করি। কিন্তু নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি এটা করতে বাধ্য হয়েছি। একটা দুর্ঘটনা যদি ঘটে যায়, তখন আমি দায়ী হয়ে যাব। এজন্য আমার নিজের দিক থেকে এই সতর্কতা নিতে বাধ্য হয়েছি।’
রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এখন চেষ্টা করছেন, নোটিশটি প্রত্যাহারে ভবন মালিককে রাজি করানোর। অন্যদিকে, ভবন মালিক হাসনাত বলছেন, তারা চেষ্টা করছেন, এটিকে বাণিজ্যিক ভবন হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের। সেটা হলে হয়তো রেস্টুরেন্টটি এখানে তাদের মতো চলতে পারবে আর তারও আপত্তি থাকবে না।
ততদিন পর্যন্ত বিদেশিদের জন্য বন্ধই থাকছে লেক টেরেস।
সূত্র: বিবিসি বাংলা