দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চা অঞ্চল পঞ্চগড়
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত পঞ্চগড় এলাকা ইতোমধ্যে দেশের তৃতীয় চা-অঞ্চল হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে তৎকালীন জেলা প্রশাসক রবিউল হোসেনের ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষামুলকভাবে প্রথমে টবে চা চাষে সফলতা অর্জন করলে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের একটি বিশেষজ্ঞ দল এসে পরীক্ষা করে পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁও এলাকার মাটিতে চা চাষ সম্ভব। পরে ২০০০ সালে তেঁতুলিয়ায় কাজী এন্ড কাজী বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু করে সীমান্ত এলাকা তেঁতুলিয়ায়।
পঞ্চগড়বাসী আজ থেকে ২০ বছর আগে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু এখন চা চাষে নীরব বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের দ্বার উম্মোচন করেছে চা। একই সাথে দেশে অর্গানিক চা উৎপাদন হচ্ছে শুধু পঞ্চগড়েই।
জেলায় চা চাষ হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের যেমন আয়ের পথ তৈরি হয়েছে তেমনি সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান। চা চাষে প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১২ হাজারসহ গরীব দুখি নারী পুরুষ ২ হাজার লাভবান হচ্ছে। এই চা দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
চা বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতি নিয়ত আসছে পর্যটক। মুগ্ধ হচ্ছে তেঁতুলিয়ার সমতল ভূমির চা বাগান দেখে। মাত্র কয়েক বছরে ভরে গেছে সবুজের সমারোহে।
শালবাগানের আকবর আলী বলেন, চা চাষে অধিক লাভবান তিনি। এখন তেঁতুলিয়ার মানুষ চায়ের উপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় অফিস সুত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলায় ৫ হাজার ১৯৯ দশমিক ৭৯ একর। এ পর্যন্ত নিবন্ধিত বড় চা-বাগান ৭টি ও অনিবন্ধিত বড় চা-বাগান ১৮টি। ছোট চা-বাগান ৬৬২টি, অনিবন্ধিত প্রায় ৩ হাজার ৫ শত চা বাগান রয়েছে । চা প্রক্রিয়াজাতের জন্য কারখানা চালু রয়েছে ১২ টি।
বাংলাদেশ চা বোর্ড, পঞ্চগড়ের প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল-মামুন জানান, পঞ্চগড় জেলায় ২০১৭ সালে চা উৎপাদন হয়েছে ৫৪ দশমিক ৪৬ লাখ কেজি। চলতি বছরে প্রায় ৭০ লাখ কেজি চা উৎপাদন ছাড়িয়ে যাবে । আমরা নিবন্ধিত চাষিদের স্বল্পমূল্যে চা চারা দিচ্ছি, চা বাগান পরিদর্শন করে ট্রেনিং ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। চা চাষ অধিক লাভবান বিক্রিতে ঝামেলা নেই তাই পঞ্চগড়ের মানুষ ঝুঁকে পড়েছে চা চাষে। আমাদের এটুআই কর্মসুচির আওতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক “দুটি পাতা একটি কুড়ি” নামে মোবাইল অ্যাপ্স রয়েছে সেখান থেকে চা সম্পর্কে যেকোন তথ্যের পরামর্শ পাওয়া যাবে।