নিমতলী থেকে চকবাজার ! দায়ী কে ?
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
২০১০ থেকে ২০১৯। সময়ের ব্যবধান থাকলেও ঘটনার কোনো ব্যবধান নেই। সেই একই ট্র্যাজেডি, বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ, বার্ন ইউনিটে দগ্ধ মানুষের আহাজারি। তখনকার নিমতলীর পর আজকের চকবাজার। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তরের কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি গত আট বছরেরও অধিক সময়ে। তাই কর্তৃপক্ষ চকবাজার ট্র্যাজেডির দায় এড়াতে পারে না।
২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নবাব কাটরার নিমতলীতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান ১২৪ জন। ওই ঘটনায় নিঃস্ব হয়েছিল ৬২ পরিবার। নিমতলীর ঘটনায় আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে। তারপর মুহূর্তের মধ্যেই আশপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ বলেছিল, আশপাশের দোকানগুলোতে থাকা রাসায়নিক দ্রব্যাদি ও দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আগুন আরও দ্রুত বিস্তৃত হয়। এ ছাড়া আক্রান্ত এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সে এলাকায় যেতে ও কাজ করতে বাধার সম্মুখীন হতে হয়, যা দ্রুত অগ্নিনির্বাপণ বাধাগ্রস্ত করে। এ ছাড়া পুরান ঢাকা এলাকার সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে তাদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও অগ্নিনির্বাপক গাড়ি প্রবেশ করতেও যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
প্রায় ৯ বছর পর গত বুধবার রাতে চকবাজার অগ্নিকাণ্ডের পরও একই সুরে কথা বলেছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। সংস্থার পরিচালক এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে রাস্তা সরু, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি নেই, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, বৈদ্যুতিক ওয়ারিং এলোমেলো। সবমিলিয়ে এখানে একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার কারণে অগ্নিনির্বাপণ করতে গিয়েও আমরা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছি।’ ফায়ার সার্ভিসের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নিমতলীর ঘটনার পর অন্য একটি স্থানে আলাদা করে কেমিক্যাল পল্লী হওয়ার কথা ছিল, যা বাস্তবায়ন হয়নি। এখানে গভীর রাতে কেমিক্যালের কাজগুলো হতো। ঘরের মধ্যে কে কী কাজ করত তা জানার কথা নয়। আমরা যদি এখনো সতর্ক না হই, তবে এর চেয়েও বড় দুর্ঘটনা আসছে।’