পঞ্চগড়-ঢাকা ট্রেন চলাচল শুরু
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে সরাসরি ঢাকা ট্রেন যোগাযোগ শুরু হযেছে। এর মাধ্যমে পঞ্চগড় বাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরন হলো। এ নিয়ে পঞ্চগড়ে বইছে আনন্দের বন্যা। ট্রেন ষ্টেশনে হাজারো মানুষের ভীর। যেন আনন্দঘন উৎসব পালন করছেন তারা। দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, ও স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচী আয়োজন করেছে।
আজ শনিবার সকাল ৭.টা ২০ মিনিটে দেশের দীর্ঘতম রেলপথের শুরুর এই ষ্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় দ্রুতযান এক্সপ্রেস। রেলের পতাকা উড়িয়ে ঢাকা-পঞ্চগড় আন্তনগর ট্রেনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পঞ্চগড় ২ আসনের সাংসদ এ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সূজন, রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট প্রমুখ।
উদ্বোধনী ট্রেন দেখতে শুক্রবার রাত থেকে এলাকার সর্বকনিষ্ঠ শিশু থেকে শুরু করে বয়োজেষ্ঠরা সহ নানা পেশা নানা বয়সি মানুষ আসেন ষ্টেসনে। শুক্রবার রাতেই উদ্বোধনী ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেসের একটি কোচ এসে পৌছে ষ্টেসনে। আজ রাত ৯ টায় ছাড়বে একতা এক্সপ্রেস। এদিকে এখন থেকে প্রতিদিন ঢাকা থেকে দ্রুতযান ছাড়বে রাত আটটায় এবং একতা ছাড়বে সকাল দশটায়।
৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের আওতায় পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটারের এ রেললাইনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। ঐ বছরের ৩১ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেল লাইনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করে কাজের সূচনা করেন। রেললাইনের কাজ শেষ হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালের ১৭ জুন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক দিনাজপুর পর্যন্ত একটি শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন। পরে এই নিয়ে স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আন্দোলন শুরু করে। তারা সরাসরি ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচলের দাবী করে।এ বছরের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ের এক জনসভায় এ জাতীয় দাবী সম্বলিত ব্যানার দেখতে পেয়ে তার বক্তব্যে বলেন,ব্যানার নামিয়ে ফেলুন পঞ্চগড় ট্রেন যাবে।প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি আগামীকাল সকালে বাস্তবায়নের ফলে সকল শ্রেণীপেশার মানুষ আনন্দিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত সচিব বলেন, এই ট্রেন লাইনকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে সমিক্ষা হবে। তারপরেই কাজ শুরু হবে। এই বন্দর দিয়ে আশেপাশের দেশগুলোর সাথেও রেল যোগাযোগের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পঞ্চগড় রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ট্রেন যাত্রার এই শুভক্ষনটিকে নানা আয়োজনে করছে পঞ্চগড়বাসী।