পনেরোই আগস্টের শিক্ষা
পনেরোই আগস্টের শিক্ষা
সিডনীর কথকতা-৪৫
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ
দীর্ঘকাল পর সমাবর্তন উৎসবের আয়োজন হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বঙ্গবন্ধু তখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপাচার্য্যও। তাই তিনি সম্মতি দিয়েছিলেন সমাবর্তন উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে যোদানের।
যেহেতু রাষ্ট্রপতি যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাই স্বভাবতই কঠোর নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছিল ধানমন্ডীর ৩২ নং বাড়ী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন তাবৎ এলাকায়-ছাত্রাবাস ছাত্রীবাসগুলিসহ। সেনা বাহিনীর যানবাহন ও চলাচল করছিল তাদের ট্যাংকসহ। ট্যাংক যদিও এ জাতীয় কর্মসূচীতে রাজপথে নামানোর কথা নয় তবুও তাকে ততটা অস্বাভাবিক বলে বিবেচনা করেন নি অনেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিরাপত্তার কথা ভেবে। তিনি তো শুধুমাত্র একজন রাষ্ট্রপতি ছিলেন না ছিলেন বাংলাদেশের জনগণের জীবন মরণের সাথী। স্বাধীন এই দেশটির স্থপতি। আজ প্রশ্ন জাগে ১৫ আগষ্ট, ১৯৭৫, এ প্রকৃতই কি বাংলাদেশে ভোর হয়েছিল ? রাতের নিকষ কালো অন্ধকার কেটেছিল আদৌ ? সূর্য্য ? প্রখর উত্তাপ নিয়ে সূর্য্য করোজ্জল প্রভাতের উদয় কি ঘটিয়েছিল ? অন্তত: বাংলাদেশের আকাশে ? আকাশে সেদিন কি বাতাস বইতে দেখেছিল বাঙালি ? নদীর জল বা সমুদ্রের ঢেউ এ কি দোলা দিয়েছিল প্রবল বাতাস তার নিত্যদিনের অভ্যাসমত ? পাহাড় কি সেদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল পাহারা দিচ্ছিল কি বাংলাদেশকে অপর পাড় থেকে কোন শত্রু যেন এসে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে না পারে তা নিশ্চিত করতে ?
জীব-জন্তু প্রাণীকূল ? তারাই বা কি করছিল ঐ ১৫ আগস্টের ভোরে ? নিদ্রিত ছিল কি ? শত্রুর আগমন টের পেয়ে ‘ঘেউ’ ঘেউ’ করে আর্তনাদ করে গৃহস্থকে সজাগ করতে সচেষ্ট ছিল কি পোষা কুকুরেরা ? ফোঁস ফোঁস করে উঠেছিল ঘরের বেড়ালগুলো ? সাপ কি ফণা তুলতে উদ্যত হয়েছিল শত্রুর দেহে ছোবল মেরে দেহগুলিকে নীলাভ করে দিত ?
আর বঙ্গবন্ধু প্রিয় মানুষগুলি ? নেতা কর্মী মুক্তিযোদ্ধারা কৃষক মজুর খেটে খাওয়া মানুষেরা ? তাঁরা কি রোজকার মত নিরুদ্বিগ্ন ¯িœগ্ধ একটি ভোরের সুবাতাস ও প্রাকৃতিক সবুজ দৃশ্য অবলোকন করেছিলেন। জেলেরা কি নিত্যদিনের মত নদীতে মাছ ধরছিল ? বাজারে কি দোকান পাট খোলা হয়েছিল ? কাঁচা বাজারে কি মাছ মাংস তরী তরকারী শাক সবজির দোকানগুলি খোলা ছিল ? কেনা-বেচা কি স্বাভাবিক ছিল সেদিন ?
কিষাণ কিষাণীরা কি মাঠে শস্য বুনন-কর্তন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল ? কিষাণীরা কি ঠেকিতে পার ফেলে চাপ দিয়ে ধান ভানছিলেন ? শ্রমিকেরা কি তাদের নিজ নিজ কারখানায় কাজ করতে, মেসিনের চাকা ঘুরাতে হাজির হয়েছিলেন ?
ছাত্র-ছাত্রীরা কি তাদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে পাঠগ্রহণ করতে উপস্থিত হয়েছিলেন ? শিক্ষক শিক্ষিকারা ও কি এসেছিলেন শিক্ষাঙ্গণে পাঠদান করতে ? যেমনটি তাঁরা নিত্যদিন করে থাকেন ?
না। কেউ আসেন নি । উপরের সবগুলি প্রশ্নেরই উত্তর হলো, না। কেউ সেদিন কাজ করে নি। কাজে যাবার মত মানসিক পরিস্থিতি কারওই ছিল না। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সবই অঘোষিত বন্ধ। সব শিক্ষাঙ্গণ নিস্তব্ধ হয়েছিল সারাদিন সেদিন তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় নিত্যদিনের মত মুখরিত হয় নি বাংলাদেশের কোন শিক্ষাঙ্গণ।
আকাশ-বাসাস-পাহাড়-পর্বত-নদ-নদী-সমুদ্র সাগর মহাসাগর সবই ছিল নিস্তরঙ্গ, নিস্তবদ্ধ।
আর হাজার হাজার কর্মীরা ? মুক্তিযোদ্ধারা ? বেতারে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যার খবর এক মেজরের কণ্ঠে (মেজর ডালিম) বারবার শুনলেও বিশ্বাস করতে কেউই পারছিলেন না প্রথমত:। শেষ অবধি যখন বুঝাই গেলা সত্যই ওরা হত্যা করেছে জাতির দিশাহীন বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ কর্মীরা ঘরে বসে হাহুতাশ না করে ছুটলেন একের পর এক নেতার বাড়ীতে। অনেকেই দেখতে পেয়েছেন নিজ নিজ বাসভবনে নেতারা অনুপস্থিত। হয়তো বা তাঁরা কোথাও গোপন কোন সভায় মিলিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছেন করণীয় নির্ধারণ করছেন। আবার কেউ কেউ হয়তো আতœগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মোট কথা, কর্মীরা, সারাদিন অতিবাহিত হলেও কোন দিক নির্দেমনা না পেয়ে হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়লেন।
আবার অওয়ামীলীগেরই একটি মহল প্রচার করে বসলেন, বঙ্গবন্ধু নেই বটে, কিন্তু ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ্ই আছে কারণ বাকশালের দুই নম্বর নেতা এবং সাবেক আওয়ামীলীগের প্রথম সহ-সভাপতি খোন্দকার মোশতাক আহমেদই রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
বস্তুত: বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাঁর রক্তাক্ত লাশ ধানমন্ডী ৩২ নম্বরের দ্বিতল বাড়ীর সিঁড়িতে রক্ত ঝরাছিল একদিকে অপর দিকে খোন্দকার মোমথাক আহমেদ শপথ নিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে। একই দিন একের পর এক সামরিক বাহনিীর প্রধানেরা আনুগত্য প্রকাশ করছিলেন তথাকথিত রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাকের উপর।
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীসভার সদস্যদের সিংহভাগ অংশও খোন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রীসভার সদস্য হিসেবে একের পর শপথ নিলেন। অসহনীয় সেই দৃশ্যাবলী বেদনাদায়কও বটে। কিন্তু নেতাদের এহেন আপোষ কামিতা ও সুবিধাবাদী ক্রিয়াকলাপ তরুণ কর্মীদের মনে একদিকে যেমন চরম বিভ্রান্তি-অপরদিকে মারতœক হতাশাও দানা বেঁধেছিল। ফলে তাৎক্ষণিক কোন প্রতিবাদ সংগঠিত করতে দেখা যায় নি। প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছে কিন্তু তা অনেক দেরীতে।
যাঁরা ঐ মুহুর্তে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসতে পারতেন সেই সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমেদ, এম. মনসুর আলী, এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান প্রমূখ তাৎক্ষণিকভাবেই সামরিক বাহিনীর প্রহরাধীনে থাকাবস্থায় স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মুশতাকের নির্দেশে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁদের সকলকে আটকে রাখা হয়। প্রস্তাব দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণের তাদেরকে একে একে জেলাখানার অফিসকক্ষে ডেকে এনে। সবাই তাঁরা এমন প্রস্তাব দার্নাভরে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তাঁরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল। তাঁর নীতি, আদর্শ বাস্তবায়ন করা হবে মর্মে প্রথমে সরকারীভাবে ঘোষণা করা হোক। তারপর তাঁরা ভেবে দেখবেন। নতুবা নয়।
পরিণতি দাঁড়ালো ৩রা নভেম্বরের মর্মান্তিক হত্যালীলা। ঐ দিন ভোররাতে খোন্দকার মুশতাকের নির্দেশে সামরিক বাহিনীর সশস্ত্র কয়েকজন কারা আইন, দেশের প্রচলিত আইন-সকল কিছু লংঘন করে কারারুদ্ধ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম. মনসুর আলী ও এ.এইচ. এম. কামরুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করে কাপুরুষের মত। ওরা এতটাই ভীত-সন্ত্রস্ত ছিল যে এই হত্যালীলার খবর দেশের কোন সংবাদ পত্রে, বেতার টেলিভিশনে প্রচার করতেও দেওয়া হয় নি।
কিন্তু যে দিন ভোরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, ঐদিনই সন্ধ্যাবেলায় প্রদত্ত আকষ্মিক এক বেতার ভাষণে খোন্দকার মুশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি বলে দাবী করে বঙ্গবন্ধুকে “গণতন্ত্র ও ইসলাম বিরোধী ” ভূমিকা অবলম্বেনের দায়ে অভিযুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ও মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার প্রতৗয় ঘোষনা করেছিলেন অথচ তাঁর নিদেশেই দেশের সকল প্রথম স্থানের নেতাকে বঙ্গবন্ধুসহ নির্মমভাবে বিনাবিচারে হত্যা, আটক ও কারাগারে হত্যা প্রভৃতি চালানো হলো-সমস্ত মিডিয়ার ন্যূতম স্বাধীনতা ও হরণ করা হলো। স্তম্ভিত হলো বাঙালি জাতি স্তম্ভিত হলো গোটা বিশ্ব।
ফলে, এই সকল নির্মম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দেশবাসী, হাজার হাজার কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সকল বিভ্রান্ত দূর হলো এবং দেশের নানাস্থানে সংগঠিতভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ ধ্বনিত হতে থাকলো। যখন প্রকৃতই সকলের উপলদ্ধিতে এলো যে, এই দুটি হত্যালীলার অন্তর্নিহিত অঘোষিত উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশকেই হত্যা করা, বাংলাদেশকে নেতৃত্বহীন করা মুক্তিযুদ্ধ ও তার পূর্ববর্তী দুই দশকেরও বেশীকাল ধরে ধারাবাহিক ভাবে পরিচালিত বাঙালি জাতির গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার আইনের শাসন, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্রের সুমহান সংগ্রামী আদর্শগুলিকে হত্যা করে, উধাও করে দিয়ে তার পরিবর্তে ১৯৪৭ এর আগস্ট পরবর্তী পাকিস্তানী ভাবাদর্শ ফিরিয়ে আনা হলো।
এবারে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়। ফিরে তাকাতে হয় নেহায়েতই এত কিছু দুর্ঘটনার উৎসবে সন্ধানে। সেই উৎসবে যা পাওয়া যাবে-যা দেখা যাবে-তেমন ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীদিনে দেশ পরিচালনার মধ্য দিয়ে শুধু বাংলাদেশকে বাঁচানো তার আদর্শমালাকে াঁচানো, তার সঠিক ইতিহাসকে পুনরুদ্ধার করতে পারবো সেগুলিকে স্থায়ীভাবে সর্বক্ষণও করতে পারব।
ইতিহাসে দেখেছি যে খোন্দকার মুশতাককে বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে আস্থা বিশ্বাস করে আওয়ামীলীগ ও পরবর্তীতে বাকশালের দুই নম্বর নেতা বানিয়েছিলেন সেই মুশতাকই ছিল প্রকৃত বিশ্বাসঘাতক, স্বাধীন বাংলাদেশের বিরোধী এবং পূরোপুরি পাকিস্তান পন্থী ও সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্ববাসী। আওয়ামী মুসলিমলীগের অসাম্প্রদায়িকীকরণ তিনি চান নি-তিনি তার বিরোধিতা করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের তিনি বিরোধী ছিলেন তাই, কলকাতায় বসেও ১৯৭১ এ তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে গোপন সলাপরামর্শ করছিলেন কোন একটি কনফেডারেশনের কাঠামোর মাধ্যমে যাতে পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখা যায়। কিন্তু এই গোপন কার্য্যকলাপ ভারত সরকার জানতে পেরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদকে জানালে তিনি তাঁকে নাম-কা-ওয়াস্তে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রেখে সকল ক্ষমতা নিজের ও আব্দুস সামাদ আজাদের হাতে অর্পন করেন-ভারত সরকার ডিসেম্বর’৭১ পর্য্যন্ত তাঁকে গৃহবন্দী করে রাখেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের পর সেই মুশতাকের প্রতিই বঙ্গবন্ধু অতটা বিশ্বাস স্থাপন করে কী মারাতœক ভুলই করেছিলেন যার ফলে তাঁকে সবংশে নিহত হতে হলো-বাংলাদেশকে তার মৌল আদর্শ থেকেও বিচ্যুত করা হলো।
একই ভুল আরও মারাতœক দুর্ঘটনা ঘটাতে সক্ষম হলো। বিশ্বস্ত নীতিবাদ মন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমেদকে বঙ্গবন্ধু স্বহস্তে ১৯৭৩ এ মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করলেন কিন্তু রেখে দিলেন খোন্দকার মুশতাককে চরম ভাবে আদর্শিক শত্রু-এ কথা জনা সত্বেও।
সেই মুশতাকের বহুদিন আগে মৃত্যু ঘটলেও তার ছায়া-তার প্রেতাতœা যেন আজও প্রশাসনের উপর ভর করে আছে সগর্বে-সদম্ভে।
সেই সাম্প্রদায়িকতাবাদী দলগুলি আজও দিব্যি ধর্মের নামে সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে বজায় আছে, রাষ্ট্রধর্ম দিব্যি নতুন করে সংবিধানে স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে, সংবিধানের শুরুতে ‘বিসবিল্লাহ’ স্থাপন করা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী জামায়াতে ইসলামী-হেফাজতে ইসলাম প্রমূখ ঐ বৈধতার সুযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে ও গোপনে নানা সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম দিয়ে চলেছে। বাংলাদেশকে যেন বাংলা-পাকিস্তানী ভাবধারা ও আদর্শ সংবিধারে রাখলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের প্রকৃত অস্তিত্ব বজায় থাকে না। কোন সচেতন দেশ প্রেমিক নাগরিক ও চিন্তাশীল দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন মুক্তিযোদ্ধা কিছুতেই ভুলতে পারেন না যে বাঙালি জাতি কদাপি আপোষ করে না-করেন নি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যদি তাঁর ঐতিহাসিক ৬ দফা ও ছাত্র সমাজের ১১ দফা নিয়ে আপোষ করতেন সমগ্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন কিন্তু যে পথে হাঁটেন নি তিনি। তাই না দেশটা স্বাধীন হতে পেরেছে।
তবে বঙ্গবন্ধু কিছু মারাতœক ভুল করে ছিলেন যার মাশুল তাঁকে এবং বাঙালী জাতিকে দিতে হয়েছে-আজও দিতে হচ্ছে।
এখন আমরা কি করবো ? আমরাও হাঁটবো ভুলের পথে ? আপোষের পথে ? বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, তার আদর্শ বাঁচবে কি তাতে ? বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে ঐ পথে ?
আপোষ দেবে না সমাধান-তার প্রমাণ বঙ্গবন্ধু। ঐ ভূল থেকে শিক্ষা নিয়ে জিয়া এরশাদের বিসমিল্লাহ, জামায়াত-হেফাজতের বৈধতা ও রাষ্ট্রধর্ম সংবিধান থেকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে ৭২ এর মূল সংবিধান চালু করে গণতন্ত্রের পথে অভিযাত্রা ছাড়া গত্যান্তর নেই।
বঙ্গবন্ধু অমর হোন
ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক
লেখক : রণেশ মৈত্র
সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত