সেলিনা জাহান প্রিয়ার গল্প – পাগলের মেয়ে কুমকুম
পাগলের মেয়ে কুমকুম (একটি সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে)
—————————————————— সেলিনা জাহান প্রিয়া
বোনের যখন বিয়ে হয়ে যায় তখন এক মাত্র ভাইয়ের বয়স ৭ বছর। জন্মের পর থেকে কুমকুমই ছোট ভাই কামাল কে মায়ের চেয়ে বেশি দেখা শুনা করেছে। কুমকুমের মা প্রাথমিক স্কুলে মাস্টারি করে। কুমকুমের বাবা একটু পাগলা কিসিমের মানুষ ছিল। যখন তার মায়ের সরকারী চাকুরী হয় তার কিছুদিন পরে কুমকুমের মা তার বাবা কে তালাক দেয়। একেই গ্রামে বাড়ি। কুমকুমের বাবা একটু পাগল থাকলেও সে তার বউ কে খুব ভাল বাসত। বিয়ের কিছুদিন পরে বাজারের সাথে বড় বাড়ির ভিটা আর পুকুরের জমি তার মায়ের নামে লিখে দেয়। কুমকুমের মা তালাক দেয়ার পড় মানুষ নানা কথা বলত তাই একদিন গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। কোথায় যায় তার কোন খবর কেউ রাখে না। কুমকুমের বাবার কথা তেমন তার মনে নেই। কুমকুমের মা পরে তার এক চাচাত ভাই কে বিয়ে করে। সেই সংসারে দুই মেয়ে জন্ম হয় তার পড় এক ছেলে। কুমকুম যেহেতু বড় তাই তাকেই কামাল কে বেশি দেখা শুনা করতে হয়েছে। কুমকুম আই এ পাশ করার পর বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের পর পর কামাল খুব একা হয়ে যায়। অন্য দুই বোনের সাথে সে আর কথা বলে না।
সারা দিন পুকুর ঘাটে একা একা বসে থাকে। কিছু খেতে চায় না। কামালের বাবা খুব বুঝায় যে তাকে নিয়ে শহরে যাবে বোন কে দেখাতে। এই কথা বলার পর কিছু খায়। অন্য দুই বোন কথায় কথায় কামাল কে মারে। কেন সে সৎ বোনের জন্য এত
মায়া দেখায়। কামাল শুধু বলে কুমকুম বু আমার বোন তরা কিছু হছ না আমার। মায়ের সাথে সে স্কুলে ও যেতে চায় না। মায়ের হাতে সে খাবার ও খায় না। বলে কুমকুম বুবুর মত মজা হয় না। সকাল থেকে বৃষ্টি অন্য অন্য দিন হলে সে সবার আগে বৃষ্টির পানিতে নামে কিন্তু আজ বারান্দায় দাড়িয়ে আছে একা। কামাল বৃষ্টির মধ্যে চেয়ে আছে আর ভাবছে তার কুমকুম বুবুর কথা। একসাথে টিনের চালের পানির নিচে কুমকুম ওকে কোলে নিয়ে দাড়িয়ে থাকত। কামাল কে দু বোন ডাকে কিন্তু সে বলে আমি পানিতে ভিজবো না। দুই বোন তাকে জোর করে পানিতে ভিজায়। কামালের মা বলে কুমকুম নাই তাই এত রাগ। কই তোর বোন তো খুঁজ নিল না।
সকালে ডাক পিয়ন আসে। কামাল বলে মা দেখো কুমকুম বুবু আমাকে চিঠি দিয়েছে।
কুমকুমের মা চিঠি পড়ে দেখে কুমকুম শুধু কামালের কথা চিঠিতে লিখেছে আর কারো কোন কথা লিখে নাই। মা কামাল কে বলে, না বাবা তোমার কথা লিখে নাই। টাকা চেয়েছে। কিন্তু কামাল বলল আমাকে দাও চিঠি। কামাল কে মায়ে খুব জোরে একটা চর দিয়ে বলে যে মায়ে জন্ম দিছে তার জন্য জলে না একটা হারামির বাচ্চার জন্য জলে। এই বলে সে চিঠিটা নিয়ে চলে যায়।
কুমকুম তার মাকে যখন থেকে বুঝতে শিখছে সে দেখতে পারে না। কারন মায়ের চাকুরী তার বড় চাচা অনেক কষ্ট করে দিয়েছে। যেন তার পাগল ভাইটা নিয়ে ভাল থাকতে পারে। কিন্তু তার মা নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বুঝে না। কুমকুমের বাবা কে তালাক দেয়ার পর সে তার সব কিছু ঠিক রাখতে যেমন চাচাত ভাইকে বিয়ে করেছে
ঠিক তেমন ভাবে কুমকুমের বাবার সব জায়গা কুমকুমের কথা বলে তার দখলে রেখেছে।
কুমকুমের স্বামী যখন জানতে পারলো যে কুমকুমের বাবা একজন পাগল মানুষ ছিল
তখন কোন কিছু হলেই বাপের নাম ধরে পাগলের জাত বলে বকা শুনতে হয়।
কুমকুম যে পাগলের মেয়ে তাই তাকে রাগ মানায় না। রাগ করলে বলে পাগল হয়ে যাবে বাবার মত। বিয়ে হয়েছে সাত বছর সে কোন দিন বিয়ের পর মায়ের কাছে যায় নাই। স্বামীর ঘরে থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স করেছে অর্থনীতিতে। ছাত্রী হিসাবে সে অনেক ভাল। স্বামী কোন সন্তান নিতে চায় না। কারন যদি পাগল জন্ম নেয়। কুমকুম বুঝতে পারে যে তার স্বামী তাকে পাগল হিসাবে টিট করে। কুমকুম মাঝে একা একা কান্না করে তখন তার স্বামী ভাবে কুমকুম পাগল। আসলে সে কান্না করে তার বাবার জন্য আর কামালের জন্য। মাঝে মাঝে মন খারাপ থাকলে কোলবালিশ চেপে ধরে কান্না করে। কুমকুম ভাবে কামাল এখন ক্লাস নাইনে পড়ে। আমার কথা কই মনে পড়ে কামালের। কামালের একদিন খুব জ্বর ছিল কিছুইতেই জ্বর যাচ্ছিল না। সদরের বড় ডাক্তার কামাল কে বলে তোমার বোন তোমার সাথে রাগ করেছে তুমি যদি ভাল করে লিখা পড়া কর তাহলে সে আসবে। সেই কথা থেকে কামাল একটু একটু করে ভাল হয়। এখন কামালের দুনিয়া বই আর খেলা। মাঝে মাঝে তার প্রিয় বুবুর ছবি দেখা।
কুমকুমের স্বামী কুমকুমকে একদিন বলে সে দেশের বাহিরে চলে যাবে সে যেন কিছু দিন তার মায়ের কাছে যেয়ে থাকে। কুমকুম বলে তোমাকে বিয়ের প্রথম সর্ত ছিল আমি কোন দিন আমার মায়ের কাছে যাব না। কুমকুমের স্বামী বলে আমি চাইনা আমার পরিবারের সাথে তুমি থাক। কারন তোমার আচরণে পরিবারের সবাই বিরক্ত। কারন তুমি কারো সাথে কথা বল না।
— আমি কথা বলি না কারন কথা বলার মত কিছু নাই।
— কুমকুম তুমি একটা পাগল। মানুষ কি দরকার ছাড়া কেউ কারো সাথে কথা বলে
না। শুনো কুমকুম তুমি যদি তোমার বাড়িতে যেতে না চাও। তাহলে আমি তোমাকে আলাদা বাসা ভাড়া করে রাখতে চাই। আমার মা বাবা ভাই বোন কেউ তোমাকে পছন্দ করে না। তোমার চুপচাপ থাকা কারো সাথে না মেশা এরা পছন্দ করে না।
— দেখ আমি আমার মত থাকতে চাই। আমি তোমার কোন কাজটা করে দেই না।
তোমার সব কিছুই তো আমি করি। আমার কোন কাজে তুমি ভুল ধরতে পারবে। আমি একজন নারী আমার মা হতে ইচ্ছা করে তুমি বাবা হবে না। আমি তাও মেনে নিলাম। কই আমি তো তোমাকে কোন দিন কোন কিছুতে কোন অভিযোগ করি নাই। আমি তো আমার জীবন মেনে নিয়েছি সেই জন্ম থেকে যে আমি একজন পাগলের মেয়ে। পাগলের যেমন সুখ দুঃখ কষ্ট নেই। আমার ও কোন সুখ দুঃখ কষ্ট নেই।
কুমকুমের স্বামী বলে নতুন একটা বাসা নিয়েছি। দুই রুমের মায়া কানুনে। আমাদের ছেলে মেয়ে নেই তাই বড় বাসা দিয়ে কি করব? কুমকুম কোন কথা কথা বলে না। কুমকুমের স্বামী জার্মান যাবার জন্য চেষ্টা করছে। কুমকুম ভাবতে থাকে জিবনে কি চাইলাম কি পেলাম। এটা কোন জীবন হল।
নতুন বাসা খুব সুন্দর কুমকুম চেষ্টা করছে যতটুকু গোছানো যায়। পাশের ফ্ল্যাটের
মহিলার সাথে পরিচয় হয়। কেয়া ভাবী খুবোই চমৎকার মহিলা। মালা মাল তুলতে খুব সাহায্য করেছে দারোয়ান চাচা। খুব চমৎকার একটা মানুষ এই দারোয়ান। কুমকুমের সব কাজ এই মানুষটা করে দিয়েছে। খুব শান্ত একটা মানুষ মুখে কাচা পাকা দাড়ি। মাথায় টুপি। কুমকুমের ফ্ল্যাট টা ছাদে। ছয় তলায়।
মাঝে মাঝে কেয়া ভাবী আসে। কুমকুমকে দেখে প্রথমে ভেবেছিল নতুন বিয়ে পড়ে জানে সাত বছরের বেশি। কুমকুম খুব অবাক হয় দারোয়ানের আচরণে।
কেয়া ভাবীকে বলে আচ্ছা ভাবী এই বাসায় আসলাম চার মাস কিন্তু একটা বিষয়।
—- কি কুমকুম?
—- আপনাদের দারোয়ান লোকটা।
—-কেয়া বলে আসলে এই বাড়িতে এই মানুষটা ২৬ বছর যাবৎ আছে। কোন দিন
ছুটি নেয় নাই। এই বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট বাড়ি করা হল। সব কাজ এই দারোয়ান করেছে। কোন বেতন নেয় না। বলে টাকা দিয়ে কি হবে। এই বাড়ির সবাই যা টাকা দেয় সেই টাকা দিয়ে সে কাউকে মাছ কিনে দেয়। কাউকে শাক কিনে দেয়।
আমাদের যা লাগবে আমারা চাচা কে বলে আসলেই হয়। ঠিক মত দাম করে কিনে
আবার ফ্ল্যাটে দিয়ে আসবে। সবার কাজ করে। একটা ভাল ব্যাপার হল সে সত্য বলে, কারো পক্ষ নেয় না।
—- বাড়ি কোথায়?
—- আমি জানি না। আমরা এই বাসায় ১১ বছর। তবে এই বাড়ির মালিক খান সাহেব জানে। আর কুমকুম জেনে কি হবে?
—- না কিছু না। কাল আমার একটা ইন্টার্ভিউ আছে দোয়া করবেন। ইন্টার্ভিউ শেষ করে রিক্সা থেকে নেমে দেখে ভাংতি টাকা নাই। দারোয়ান এসে টাকা দিয়ে বলল মা জননী আমাকে পড়ে দিয়েন। কুমকুম ভাল করে আজ দেখল মানুষটা কে। হাসি দিয়ে চলে যাবার সময় বলল আজ কি খেয়েছেন।
— মা জননী খুব ভাল খাবার। এই বাড়ির যেই যা কিছু রান্না করে আমার জন্য রাখে।
আসলেই ঠিক। সব বাচ্চা ছেলেরা দাদা ভাই ডাকে এই মানুষটারে।
কামাল কে পাওয়া যাচ্ছে না। গত তিন দিন। সবাই খোঁজা খুজি করছে। কুমকুম
বাসায় ফিরে জানতে পারলো পাশের বাসার কেয়া ভাবী বলল তার কাছে তাদের বাড়ি থেকে ফোন এসেছে যে কামাল তিন দিন হল নিখোঁজ তার মা যেন কামালের খোঁজ পেলে জানায় কিন্তু তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেল কুমকুম তার স্বামী বিছনায় একটা চিঠি রেখেছে। তাতে লিখা প্রিয় কুমকুম তুমি ভাল থেক। এই বাসার এক বছরের ভাড়া অগ্রিম দেয়া আছে, তোমার চলার মত কিছু টাকা আমি তোমার জন্য তোমার শাড়ির ভাঁজে রেখে গেলাম। আমি আর কোন দিন ফিরব না। জার্মান চলে যাচ্ছি। আমি মন থেকে তোমাকে মেনে নিতে পাড়ি নাই। কারন আমি কোন পাগলের সাথে সংসার করতে পারব না। তোমার বাবা পাগল ছিল তুমি একদিন পাগল হবে। তাই আমার চলে যাওয়া। আশা করি তুমি এই দুই দিনেই তালাকের কাগজ পেয়ে যাবে। কুমকুম পত্র পড়ে একদম চুপ হয়ে গেল। তার চোখে কোন পানি নেই। কুমকুম বিশ্বাস করতে পারছে না। মানুষ এত নিষ্ঠুর হয় কি ভাবে। ঠিক মনে পড়ে গেল মায়ের কথা মানুষ স্বার্থের জন্য নিষ্ঠুর হয়। যেমন তার মা হয়েছিল।
এমন সময় দারোয়ান এসে বলল মা জননী আপনার ছোট ভাই আসছে। কুমকুম
কামালের দিকে চেয়ে আজ চিনতে পারছে না। কত বড় হয়ে গেছে। কামাল বুবু
বলে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল। কুমকুম এই মাত্র কাদতে শুরু করল। দুই ভাই বোন গলা জড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদছে। পাশের বাসার কেয়া ভাবী কান্না শুনে কুমকুমের ঘরে আসে। তখন ও কুমকুমের হাতে চিঠি। কেয়া ভাবী কুমকুমের হাতের চিঠিটা পড়ে সে নিজেও কাদতে থাকে। দারোয়ান বলে মা ভাই কে পেয়ে কান্না করতে হয় না। কেয়া দারোয়ান কে চিঠিটা দেয়। দারোয়ান চিঠিটা পড়ে।
এইবার দারোয়ান বলে মা জননী আপনার নাম কুমকুম।
— ভেজা চোখে বলে হ্যা চাচা আমার নাম কুমকুম।
— মা জননী আপনার বাড়ি কোথায়।
—- আমাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার পশ্চিম দিকে বড় বাড়িতে।
—- করিমগঞ্জ বড় বাড়িতে। তুমি কার মেয়ে গো
—- চাচা আপনি চিনবেন না। আর বলে কি হবে। ঐ খানে এখন কেউ নেই।
যার বাবা নেই তার কেউ নেই। বাবা থাকলে চাচা ফুফু থাকে আমার তো বাবা নেই। চাচারা কোন দিন খবর নেয় নাই।
—- মা জননী তোমার বাবার নামটা বলবে।।
—- কি হবে চাচা। আমার বাবা একজন পাগল। বাবা পাগল বলে আজ স্বামী ও
আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমার বাবা পাগল তাতে আমার কি অপরাধ?
—- মা গো আমার বাড়ি তো করিমগঞ্জ। বড় বাড়িতে। আমার একটা ,মেয়ে ছিল
তার নাম কুমকুম। আমি একটু পাগলা কিসিমের ছিলাম। তবে মা পাগল ছিলাম
না। একটু হাসি তামসা করতাম। মনে মনে পাগলের অভিনয় করতাম। তখন
টেলিভিশনে রাইসুল ইসলাম আসাদের একটা নাটক আমার মনে গেথে যায়। সেই
নাটক দেখার পর আমি আসাদকে নকল করতে থাকি। এটাই আমার জীবনের
কাল হয়ে দাড়ায়। একদিন আমার বউ আমাকে তালাক দেয়। আমি কিন্তু মা নিজেও বিএ পাশ। গুরু দয়াল কলেজ থেকে। বউ চলে যাওয়ার পর মানুষ আমাকে সত্যি সত্যি পাগল ভাবতে লাগলো। আমি সেই লজ্জায় আর দুঃখে গ্রাম ছেড়ে চলে আসি। আসার সময় আমার সব জায়গা জমি আমার মেয়ে কুমকুমকে হেবা করে দিয়ে আসি।।
— কুমকুম অবাক হয়ে চেয়ে বলে কি নাম আপনার। বলেন শুনি। কি নাম আপনার
—- মা জননী আমার নাম সামসুদ্দিন ভুইয়া।
—- এমন সময় কুমকুম বলে ওরে আল্লাহ্ এ তো আমার আব্বু। আব্বু আমি তোমার কুমকুম। বাবা আমি পাগলের মেয়ে না। আমি একজন সৎ লোকের মেয়ে। বাবা তুমি মাকে তোমার বুকে জড়িয়ে নাও। আমি অনেক দিন শ্বাস নেই না। আমার বাবা আমি পেয়েছি। কে আমাকে ফেলে গেল কে আমাকে অবহেলা করলো তাতে আমার কিছুই আসে যায় না। বাবা মেয়ে আজ একজন অন্যজন কে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো।
কামাল বলল বুবু আমি কিন্তু আব্বু ডাকব। তোমার একা আব্বু না। আমার ও আব্বু। আর আমি তোমার কাছেই থাকব। কামাল কে ও বুকে টেনে নেয়।
জার্মান এয়ারপোর্ট এসে কুমকুমের স্বামী দেখল তার ভিসা নকল। জার্মান পুলিশ তাকে এরেস্ট করেছে। সে এখন জেলে।।
কুমকুমের বাসায় তালাকের কাগজ আসে। কুমকুমের এই বাসার সবাই কুমকুমকে দেখতে আসে। এই বাড়ির মালিক বলে মা তোমার বাবা যে ভাল মানুষ শিক্ষিত মানুষ আমি দেখেই বুঝেছিলাম। আজ থেকে মা এই উপরের ফ্ল্যাট টা তোমার। তোমার বাবা ২৫ বছরের কামাই মনে করবে। কুমকুম খান সাহেবকে সালাম করে বলে চাচা জান আমার বাবা কে এই ২৫ বছর দেখে রেখেছেন আমি তো আজ আপনার জন্যই আজ বাবাকে পেলাম। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। তাতেই খুশি আর কিছু লাগবে না। খান সাহেব হেসে বলে আমি আমার মেয়ে কি দিলাম ওকে মা। তুমি না করবে না। যে খানেই থাক এটাও তোমার বাড়ি মা।
বাবা আর ছোট ভাই কে নিয়ে কুমকুম গ্রামে চলে আসে। কুমকুম এখন একটা কলেজে
চাকুরী করে। বাবা আর সৎ ভাই কে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করেছে। কুমকুমের
মা তার ছেলে কে আর নিতে পারে না কুমকুমের কাছ থেকে। এই কলেজের
একজনের কাছে কুমকুমের বাবা কুমকুমকে বিয়ে দেয়। কুমকুমের সাথেই তার স্বামী ভাই বাবা থাকে। এখন কুমকুমের কুলে নতুন অথিতি। বয়স তিন বছর। কুমকুমের বাবা নাতি কে কাঁদে তুলে তিন রাস্তার মোড়ে রোজ নাস্তা খেতে আসে।
কুমকুমের আগের স্বামী জেল থেকে বের হয়ে দেশে আসে। কুমকুমের জন্য ঐ বাসায় যায়। ফ্ল্যাটের মালিক খান সাহেবের কাছে সব কিছু শুনে সে নিজেই নিজেকে পাগল ভাবতে থাকে।
হয়ত বাকি জীবন এই লোকটা কুমকুম করে রাস্তায় হাটতে থাকবে পাগলের মত।।