পাবনার বেড়ায় আটকে গেছে ১৫টি মালবাহী জাহাজ
আর কে আকাশ, পাবনা, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই পাবনার বেড়া উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের পেঁচাকোলা ও মালদহ পাড়ার মাঝামাঝি যমুনা নদীতে জেগে উঠছে একাধিক ডুবোচর। এসব ডুবোচরে বাঘাবাড়ীগামী ও বাঘাবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা ১৫টি জাহাজ ডুবোচরে আটকে আছে।
বাঘাবাড়ি বন্দর সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ী নৌপথ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় জ্বালানী তেল, রাসায়নিক সার ও অন্যান্য পণ্য পরিবহণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গতকাল ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পেঁচাকোলা ও মালদহপাড়ার বিভিন্ন স্থানে ১৫টি জাহাজ আটকা পড়ে আছে। প্রতিদিন আটকে পড়া জাহাজের সংখ্যা বাড়ছে। এসব জাহাজের মধ্যে এম ভি ফয়সাল-৮, ৮৫০ টন গম, এম ভি ইব্রাহিম খলিল ৬১০ টন সার, এম ভি ফয়সালে আরো দুইটি জাহাজ, এম ভি সুমাইয়া, এম ভি সুলতানা সানজার সহ কয়েকটি জাহাজ আটকা পরে আছে।
এম ভি ফয়সাল-৮ এর মাষ্টার জাহাঙ্গীর জানান, তারা চট্টগ্রাম থেকে গম নিয়ে বাঘাবাড়ি বন্দরে যাচ্ছিলেন। দুই দিন আগে তারা এই স্থানে ডুবোচরে আটকে যান। এখন লাইটার জাহাজে এসব পণ্য ধীরে ধীরে খালাস করে তারপর জাহাজ সরাতে হবে।
এ নৌপথে জ্বালানী তেলবাহী ট্যাংকার, রাসায়নিক সার ও বিভিন্ন পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ চলাচল করে। বাঘাবাড়ি বন্দর থেকে উত্তরাঞ্চলে চাহিদার ৯০ ভাগ জ্বালানী তেল ও রাসায়নিক সার সরবরাহ করা হয়। আবার বাঘাবাড়ি থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চাল, গমসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী পাঠানো হয়।
বিসিআইসি’র বাঘাবাড়ী ট্রানজিট বাফার গুদাম সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটে বাফার গুদামগুলোতে আপদকালীন সারের মজুদ গড়ে তোলার কাজ চরমভাবে বিঘিন্ত হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অফিসের একটি সূত্রে জানা যায়, রাসায়নিক সার ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য ১০ থেকে ১১ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে এ নৌপথে কোথাও কোথাও ৮ থেকে ৯ ফুট গভীরতা রয়েছে।
আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে পানির স্তর কমে ৭-৮ ফুট পর্যন্ত নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা।
বাঘাবাড়ি বন্দর থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত মোহনগঞ্জ, নাকালিয়া, হরিরামপুর, পেঁচাকোলা, নগরবাড়ীসহ প্রায় ডজনখানেক স্থানে জেগে উঠছে ডুবোচর।
ফলে নাব্যতা সংকট ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যেই মোহনগঞ্জ, হরিরামপুর ও নাকালিয়া পয়েন্টে ডুবোচরে জাহাজ প্রায়’ই আটকা পড়ছে।
বাঘাবাড়ী নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজিং বিভাগকে চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে। এম.ভি বিজয় চিলিং মাস্টার হেলাল উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া থেকে বাঘাবাড়ী নৌবন্দর পর্যন্ত ৪৫ কি.মি নৌপথের ১০টি পয়েন্টে পানির গভীরতা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ থেকে ৯ ফুট। মোহনগঞ্জ পয়েন্টে কার্গো জাহাজ চলাচলের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।