‘পাশে আছে’ মানে কী?
বহু প্রত্যাশিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকটি শেষ হয়েছে মিয়ানমারকে ‘ভালো হয়ে যাওয়ার’ আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে। কোনো সিদ্ধান্ত বা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যায় এমন দিকে আলোচনা এগুতে দেয়নি চীন, রাশিয়া, জাপান। নিরাপত্তা পরিষদে চীন, রাশিয়া যে অবস্থান নিল, শুরু থেকেই তাদের অবস্থান এমনই ছিল।
এবারের রোহিঙ্গা সংকট শুরু হয়েছে গত ২৫ আগষ্ট থেকে। ৩০ আগষ্ট লিখেছিলাম ‘রোহিঙ্গা ইস্যু, বন্ধুহীন বাংলাদেশ!’ চীন, রাশিয়া, ভারত কেন মিয়ানমারের পক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে নয়- তা যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছিলাম। প্রশ্ন তুলেছিলাম বাংলাদেশের কূটনীতি নিয়ে।
সেই সময় তুরস্ক জোরালোভাবে কথা বলতে শুরু করে। ফার্স্ট লেডিকে বাংলাদেশে পাঠায়। মুসলিম বিশ্বের নেতা হওয়ার মানসিকতায় তুরস্ক তৎপরতা দেখায়। তুরস্কের জোরালো অবস্থান বাংলাদেশের পক্ষে যায়। যদিও তুরস্কের ফার্স্ট লেডির কান্নাকাটি নিয়ে সরকার সংশ্লিষ্ট অনেকেই ব্যাঙ্গ- বিদ্রুপ করতে থাকেন। তখন পর্যন্ত আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীর কোনও উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি।
তারপর থেকে সরকার বলতে শুরু করে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক উদ্যোগের কারণে ভারত, চীন, রাশিয়া তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। তারা রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে (২৮ সেপ্টেম্বর) আগেও বাংলাদেশ একথা বলেছে।
টকশোতে সরকার সমর্থকরা বাংলাদেশের ‘সৃজনশীল কূটনীতি’র নানা দিক তুলে ধরেছেন। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগের দিন ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিরাপত্তা পরিষদের ৯ দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উপমন্ত্রী বাংলাদেশে আসেন।
সরকার আবারও বলে, সবাই বাংলাদেশের সঙ্গে আছে। চীন, ভারত থেকে আসা ত্রাণের সংবাদ ফলাও করে প্রচার করা হয়। সরকার সমর্থক অনেকে ফেসবুকে লেখেন ‘এখন তারা কী বলবেন’ যারা কূটনীতির সমালোচনা করছিলেন তাদের উদ্দেশে। দেশের এই প্রেক্ষাপটে এবার দৃষ্টি দেওয়া যাক নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের দিকে।
০১.
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ তার ফেসবুকে গতকালের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে এই কথাগুলো লিখেছেন।
‘‘In the UN Security Council meeting, as happening, thus far, the US has taken a strong stand against the atrocities perpetrated by the Myanmar government and army, and France has asked for investigation by the international experts such as The Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights (OHCHR); as anticipated, the statements of Russian, Chinese and Japanese representatives, were clearly in favor of the Myanmar government. Russian delegate has stated that Russia is opposed to the use of terms ‘Genocide’ and ‘Ethnic Cleansing’’. (Time: 4:41 pm New York Time, USA)
ড. আলী রিয়াজ নিজের এই স্ট্যাটাসের মন্তব্যে লিখেছেন-
‘Interestingly, the UN Secretary General hasn’t used the term ‘ethnic cleansing’ in his statement.’
বাংলাদেশ সরকার চীন, জাপান, রাশিয়ার কথা উল্লেখ করে ‘পাশে আছে সঙ্গে আছে’ বলছিল কিসের ভিত্তিতে?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করেন না। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন-
‘এ সময় তিনি (ট্রাম্প) শুধু জিজ্ঞাসা করলেন বাংলাদেশের কি খবর? জবাবে আমি বললাম খুব ভালো চলছে। কিন্তু একটিই সমস্যা রয়েছে। তা হলো, মিয়ানমার থেকে (বিপুল সংখ্যক) শরণার্থী এসেছে বাংলাদেশে। কিন্তু শরণার্থী প্রসঙ্গে তিনি (ট্রাম্প) কোনো মন্তব্যই করলেন না।’
যদিও ঐ সময় বাসস জানিয়েছিল-
‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। জাতিসংঘের সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনায় ট্রাম্প এই আশ্বাস দেন।’
প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য পরস্পর বিরোধী হওয়ার পর পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তিনি এভাবে বলেন নি।
০২.
যে দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু প্রত্যাশা করেনি, সেই আমেরিকাকে নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে সবচেয়ে জোরালো অবস্থান নিতে দেখা গেল। আর ‘পাশে থাকা’ চীন, রাশিয়া, জাপান ঠিক কতটা দূরে তা আমাদের কূটনীতিকরা এখনও বুঝতে পারছেন কিনা নিশ্চিত নই।
একথা বলা যাবে না যে, বাংলাদেশের কূটনীতিকরা জোর তৎপরতা চালালেই এসব দেশ অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলত। বাংলাদেশ কী চায়, সেই চেষ্টাটা অন্তত দৃশ্যমান হতো।
বাংলাদেশের চেষ্টাটাই দৃশ্যমান হয়নি। বাংলাদেশের কূটনৈতিক উদ্যোগটা মূলত রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে সীমিত থেকেছে।
রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বাংলাদেশ কথা বলেছে। তারা বলেছেন, ‘ঠিক আছে দেখব, আমাদের সরকারকে জানাব।’
এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার দেশের মানুষকে বুঝিয়েছে ‘সঙ্গে আছে’। কূটনীতির এই ভাষা না বুঝে বাংলাদেশ বলেছে ‘সঙ্গে আছে’ – এভাবে ভাবার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ বুঝেই বলেছে। সরকার আসলে বিষয়টি যত গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া দরকার, তা উপলদ্ধিই করেনি। উপলদ্ধি করলে, চীন- রাশিয়া- জাপানে বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রীর সফর করা দরকার ছিল। যাওয়া দরকার ছিল ভারতেও। বলা হবে, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। তার গলব্লাডার অপারেশন হয়েছে। এখনও তিনি আমেরিকায় অবস্থান করছেন।
একথা সত্যি যে, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রশংসিত হয়েছে এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ নন। জানানো তথ্য অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর অসুস্থতার বিষয়টি আগে থেকে জানা ছিল না। হঠাৎ করে সামনে এসেছে। জাতিসংঘ অধিবেশনের পরে কয়েকদিন তিনি ওয়াশিংটনে ছেলের বাড়িতে থাকবেন, আগেই জানানো হয়েছিল। অর্থাৎ রোহিঙ্গা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ এসব দেশ সফরের কোনো পরিকল্পনা ছিল না প্রধানমন্ত্রীর।
ধরে নেওয়া যেতে পারে, অসুস্থতার বিষয়টি আগে জানা বা অনুমিত থাকলেও হয়ত জানানো হয়নি। রাষ্ট্র প্রধানদের অসুস্থতার বিষয় না জানানোর রেওয়াজ বহু দেশে আছে। সেটা কোনো সমস্যা নয়। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ‘সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন’ একটি প্রতিনিধি দল এসব দেশে পাঠানো দরকার ছিল। তা করা হয়নি।
এই সময় চীনের আমন্ত্রণে একটি প্রতিনিধি দল চীন সফরে গেছেন। এটা পূর্ব নির্ধারিত একটি সফর। যারা এই প্রতিনিধি দলে আছেন তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে হবে, এটা মূলত একটা ভ্রমণ সফর। চীনের নীতি নির্ধারক কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করার মত প্রতিনিধি দল এটা নয়। যদিও বলা হচ্ছে ‘উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন’ প্রতিনিধি দল চীন সফর করছে এবং তারা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চীনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই বক্তব্য সঠিক চিত্রের প্রতিফলন নয়।
এটাও ‘সঙ্গে আছে’ জাতীয় বক্তব্য।
প্রশ্ন আসবে, প্রধানমন্ত্রীর অবর্তমানে কারা বা কেমন প্রতিনিধি এসব দেশে যেতে পারতেন? কঠিন প্রশ্ন। একজন নির্ভর সরকারে কাজের ধরণ প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রীক নয়, ব্যক্তিকেন্দ্রীক। বাংলাদেশ চলছে ব্যক্তিকেন্দ্রীক সরকারের অধীনে। একজন প্রধানমন্ত্রী যেদিকে -যেভাবে নজর দেন, সেদিকে -সেভাবে কাজ হয়। নজর দিতে না পারলে কাজ হয় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হত্যা ষড়যন্ত্রের সংবাদ দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার একদিন পরে, ভুল শব্দ- বানানের প্রেস রিলিজ দিয়ে নাকচ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ বিষয়ে অবস্থান পরিস্কার করতে পুরো একদিন সময় লেগে যাওয়ার কারণ প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি। তিনি দেশে থাকলে নজর দিতেন, দ্রুত প্রেস রিলিজ আসত। সম্ভবত তিনি ভুল শব্দ – বানানও ঠিক করে দিতেন। মূল কথা রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বিকল্প কেউ আছেন, যিনি বা যাদের পাঠানো যেত- মনে হয় না তেমন কেউ আছেন।
০৩.
শুধু তাই নয়, যেসব দেশ রোহিঙ্গা সংকটের শুরুতে কঠোর মনোভাবের পরিচয় দিয়েছিলেন তাদেরও কেউ কেউ সময়ের সঙ্গে অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। যেমন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুরুতে সোচ্চার থাকলেও, জাতিসংঘে এসে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরবতা পালন করেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব জোরালোভাবে ‘এথনিক ক্লিনজিং’ বলছিলেন। যদিও মিয়ানমার যা করছে তা ‘এথনিক ক্লিনজিং’ নয় ‘গণহত্যা’।
বাংলাদেশ শুরুতে ‘গণহত্যা’ বললেও বিস্ময়করভাবে ‘এথনিক ক্লিনজিং’ বলতে শুরু করেছে।
আরও বিস্ময়কর জাতিসংঘ মহাসচিব নিরাপত্তা পরিষদের বক্তৃতায় ‘এথনিক ক্লিনজিং’ শব্দটিও বলেন নি।
নিরাপত্তা পরিষদে শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জোরালো অবস্থান নিয়েছে ফ্রান্স। স্বীকার না করলেও সত্যি এটাই যে, এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ড. ইউনূস।
ব্রিটেনের অবস্থানও রোহিঙ্গা ইস্যুতে জোরালো। নোবেল বিজয়ী ও বিশ্ব নেতৃবন্দের চিঠি নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আয়োজনে ভূমিকা রেখেছে।
নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের তুলে ধরা প্রস্তাবের অন্যতম বিষয় ‘সেভ জোন’ কোনো গুরুত্বই পায়নি। মিয়ানমার ‘এথনিক ক্লিনজিং’ বা ‘গণহত্যা’ সংগঠিত করছে না, তা জোর দিয়ে বলেছে চীন, রাশিয়া।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্যে যে কূটনীতি দৃশ্যমান হওয়া দরকার ছিল, তার প্রায় কিছুই হয়নি। বলা হয়েছে, কূটনীতির সব কিছু কৌশলগত কারণে দৃশ্যমান করা যায় না। হ্যাঁ,যায় না। রেজাল্ট দিয়ে বোঝা যায় কতটা কী হয়েছে। এক্ষেত্রে পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে।
০৪.
আবারও বলছি, কূটনৈতিক তৎপরতা সঠিক থাকলেও যে সব কিছু বাংলাদেশের মত করে ঘটত, তা নাও হতে পারত। তবে পরিস্থিতি এতটা প্রতিকূলে চলে যেত না। চলে গেলেও সরকার দেশের মানুষকে বোঝাতে পারত যে, আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে উল্টো। ‘ত্রাণ’ দেখিয়ে সরকার দেশের মানুষের কাছে ভুল তথ্য পরিবেশন করেছে। ‘ত্রাণ’ যে সঙ্গে থাকার প্রমাণ নয়, তা মানুষকে জানায়নি।
চীন- রাশিয়া- জাপান-ভারতের সমর্থন পাওয়া দূরে থাক, তাদের প্রভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ। যা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পরিপন্থী সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে কোথায় রাখবে, সেটা ফলাও করে প্রচার করছে।
রোহিঙ্গাদের সাময়িক সময়ের জন্যে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ দশ বারো লাখ রোহিঙ্গাদের রাখবে না, রাখতে পারবে না-বিশ্বকে একথা জানানো দরকার ছিল। তা না করে বাংলাদেশ বিশ্ব ব্যাংকের থেকে ঋণ নিয়ে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী বা দীর্ঘ সময়ের জন্যে রাখার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। এটাকে উদ্ভট নীতি বললেও সম্ভবত কম বলা হয়।
সরকার চীন- ভারত- রাশিয়া-জাপানের সমর্থন নানা কারণে না পেতে পারে। সেক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দেশের মানুষকে জানানো দরকার ছিল। তা না করে ‘পাশে আছে’ জাতীয় বিভ্রান্তিকর তথ্য জানানো সঠিক হয়নি, হচ্ছে না। বিশেষ করে ‘অবস্থান পরিবর্তন করেছে’ ‘ফোন করেছে’ ‘ত্রাণ দিয়েছে’ ‘সৃজনশীল কূটনীতি’র সাফল্য জাতীয় গল্প বলা বন্ধ করে, কিছু একটা করার বা উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করা দরকার।
গোলাম মোর্তোজা: সম্পাদক, সাপ্তাহিক।
s.mortoza@gmail.com