কলকাতা বেকার হোষ্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরানোর দাবী
নিজেস্ব প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত কলকাতার বেকার হোস্টেল থেকে তার ভাস্কর্য সরানোর দাবী তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন। ছাত্র জীবনে বঙ্গবন্ধু যে ছাত্রাবাসে থাকতেন, সেই বেকার হোস্টেলের বর্তমান বাসিন্দাদের একাংশ এই দাবি তুলে রাজপথে আন্দোলনও শুরু করেছেন। উল্লেখ্য বেকার হোস্টেলটি ব্রিটিশ আমল থেকেই মুসলমান ছাত্রদের আবাস হিসেবে বিশেষ পরিচিত। আন্দোলনকারিরা গতকাল শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য সরানোর দাবি নিয়ে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস ঘেরাও করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের বাধায় আন্দোলনকারীরা উপ-দূতাবাসে পৌঁছাতে পারেনি। তার আগেই পুলিশ তাদের পথ আটকে দেয়।
উল্লেখ্য সরকারী ছাত্রাবাস বেকার হোস্টেলের যে ঘরে শেখ মুজিব থাকতেন, সেটিতে একটি সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে। ওই সংগ্রহশালাতেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতির ভাস্কর্য স্থাপন করেন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা: দীপু মনি। বর্তমানে বেকার হোস্টেলে বসবাসকারী ছাত্রদের মধ্যে একটি অংশ যারা ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার দাবি করছেন, তারা বলছেন গোটা হোস্টেল চত্বরে ইসলামিক পরিমণ্ডল রয়েছে। সেখানে একটি মসজিদও আছে। তার মধ্যে কোনও ব্যক্তির ভাস্কর্য রাখা ‘ইসলাম-বিরোধী’। তবে সেখানে যে সংগ্রহশালা রয়েছে, সে ব্যাপারে তাদের আপত্তি নেই।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এই ছাত্রাবাস পরিচালনা করলেও তিনতলার যে ঘরে শেখ মুজিব থাকতেন, সেখানে তৈরি হওয়া সংগ্রহশালাটি তাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস দেখাশুনা করে। ঘরের মূল চাবিটিও থাকে উপ-দূতাবাসেই। অন্য চাবিটি থাকে হোস্টেলের সুপারিন্টেনডেন্ট ও মাওলানা আজাদ কলেজের অধ্যাপক দবীর আহমেদের কাছে। মি. আহমেদের কাছে অবশ্য আবাসিক ছাত্ররা শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও আবেদন জানান নি।
এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারত শাখা ছাত্রলীগের অন্যতম উদ্যোক্তা রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সোহাগ সরকার গতরাতে এক বিবৃতিতে জাতীর পিতার ভাস্কর্য সরানো নিয়ে কলকাতার রাজপথে নামা কতিপয় আন্দোলন কারীরা যে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছন। তিনি বলেছেন বঙ্গবন্ধু শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি নয় তিনি আমাদের শক্তি ও প্রেরনার উৎস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শুধু বাঙালী জাতীর নয় গোটা বিশ্বের দরবারে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তার কাজের মাধ্যমেই। ভারতসহ গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুকে অত্যন্ত সন্মানের চোখে দেখতেন। আমাদের অকৃত্রিম বন্ধুপ্রতীম অসাম্প্রদায়িক ভারতবর্ষের কতিপয় মানুষ একজন মহান নেতার ভাস্কর্য সরানোর দাবী নিয়ে রাজপথে নামায় আমরা ভীষণভাবে মর্মাহত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের দাবী এই ধরনের অনভিপ্রেত ইস্যু যাতে ভবিষ্যতে আর সৃষ্টি না হয় সেদিকে সরকার যেন সজাগ দৃষ্টি রাখে।