বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ট্রেনে যাওয়া যাবে দার্জিলিং

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার সীমান্তবর্তী স্টেশন চিলাহাটি। আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার পুরাতন স্টেশন হলদিবাড়ি। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এ স্টেশন দুটি ফের গমগম করবে যাত্রীদের ভিড়ে। ঢাকা থেকে সরাসরি দার্জিলিং পর্যন্ত স্থাপিত হবে রেল সংযোগ। এজন্য দু’দেশই আলাদা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে।

সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে এ সংক্রান্ত এক প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে রেল বিভাগ। যা এখন যাচাই-বাছাই চলছে।

পরিকল্পনা কমশিন সূত্র জানায়, ভারতের দার্জিলিংয়ের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের চিলাহাটি এবং হলদিবাড়ি সীমান্তের মধ্যে রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যেই রেলপথটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। অপরদিকে ভারত অংশের কাজ শিগগিরিই শেষ হবে। এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সব পুরাতন রেল লিংক পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ।

জানা গেছে, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট চালুর লক্ষ্যে চিলাহাটি অংশে ৭ কিলোমিটার এবং ভারতের হলদিবাড়ি অংশে ৩ কিলোমিটার রেলপথ পুনরায় নির্মাণ করা হবে। মোট ১০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করলেই দু’দেশের মধ্যে এই করিডোরে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হবে।

চিলাহাটি থেকে চিলাহাটি বর্ডার পর্যন্ত ব্রডগেজ কানেক্টিভিটি স্থাপনের মাধ্যমে উপ-আঞ্চলিক রেল সংযোগ স্থাপিত হবে। এতে করে মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃদ্ধিসহ নেপাল ও ভুটানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে এই করিডোর দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন পরিচালনার দুয়ার উন্মোচিত হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট বহু পুরাতন। এ দুটি স্টেশনে নতুন করে সংযোগ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এটা চালু করতে পারলে পরবর্তী জেনারেশন উপকৃত হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি শিলিগুড়ি-দার্জিলিং পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপিত হবে। পাশাপাশি আমরা আর্থিকভাবেও উপকৃত হব। কেননা মানুষের চলাচলের পাশাপাশি স্টেশন দুটি চালু হলে মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃদ্ধি পাবে। এর পাশাপাশি নেপাল-ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও বৃদ্ধি পাবে। এই লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা প্রকল্প নিতে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের স্টেশন দুটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক। ভারত বিভাজনের আগে এ করিডোর দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু ছিল। তখন এই করিডোর দুই বাংলার অর্থনৈতিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল। তবে ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর এই রুটে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কালের পরিক্রমায় করিডোরটিও গুরুত্ব হারায়।

রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ-ভারত দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বন্ধ হওয়া সেকশন পর্যায়ক্রমে পুনঃচালুর মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন রেল নেটওয়ার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!