টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরে নিজের বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করলো সাহসী সামিয়া
মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
‘‘স্যার, আমার নাম সামিয়া খাতুন। আমি জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ি। আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমি আরো পড়ালেখা করতে চাই। কিন্ত আমার পরিবারের লোকজন জোর করে আমাকে বাল্য বিয়ে দিচ্ছে। আমি বিয়ে করতে চাই না, আমার বাল্য বিয়ে আপনি বন্ধ করে দিন স্যার’’ এমন কথা জানিয়ে ২১ মে রবিবার রাতে গোপালপুর থানার ওসি মো. হাসান আল মামুনের কাছে ফোন করে সামিয়া খাতুন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রী।
সামিয়া টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের বাগুয়াটা গ্রামের ক্ষুদে মনোহরী দোকানি স্বপন মিয়ার মেয়ে।
সামিয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদ আকন্দ জানান, সামিয়া স্কুলের একজন মেধাবী ছাত্রী। দারিদ্রতার কারণেই চুপিচুপি মেয়েকে দ্রুত বিয়ে দিচ্ছিলো সামিয়ার বাবা। কিন্তু বুদ্ধিমতী সামিয়া স্কুলে সরকার কর্তৃক সরবরাহকৃত সকল বইয়ে গোপালপুর উপজেলা প্রশাসন ‘বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, মাদক ও জঙ্গীবাদকে না বলুন’ স্লোগানসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং থানার ওসি’র মোবাইল নম্বর সীলযুক্ত করে বই বিতরণ করে। সামিয়া বইয়ের ভিতরে থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন করে নিজের বুদ্ধিমত্তায় তার বাল্য বিবাহ নিজেই প্রতিরোধ করেছে। তার এই সাহসী ভূমিকার জন্য আমার স্কুলসহ সারা উপজেলায় মানুষ আনন্দিত। সামিয়া আজ অনেক বাবা-মায়ের চোখ খুলে দিয়ে বুঝিয়েছে, ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেয়া আইনে অপরাধ ও শাস্তিযোগ্য কাজ।
গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাসান আল মামুন জানান, রবিবার সন্ধ্যার পর বাল্যবিবাহ হচ্ছে এমন সংবাদের কান্নাভেজা একটি কিশোরী কন্ঠের ফোন পেলে তাৎক্ষনিক থানা পুলিশের একটি দল সবাইকে আটক করে। পরে মেয়ের বাবা বাল্যবিয়ের কুফল ও অপরাধ বুঝতে পেরে উভয়পক্ষ ক্ষমা চেয়ে, মেয়ের বাবা মুচলেকা দেন যে ১৮ বছরের নিচে তার মেয়েকে বিয়ে দিবেন না। ওসি আরও বলেন, সামিয়া নিজেকে বাল্য বিয়ে মুক্ত রাখতে যে ভূমিকা রেখেছে সমাজের অন্য মেয়েসহ সকল স্তরের মানুষ সচেতনতার সহিত ভূমিকা রাখলে এ উপজেলা সহ দেশের প্রতিটি উপজেলা বাল্য বিয়ে মুক্ত রাখা সম্ভব।
- কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।