বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাট নড়িয়ায় আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০

 

 

সৈয়দ মেহেদী হাসান, শরীয়তপুর প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

আবারও নড়িয়ার রাজনগরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হামলা ভাংচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল, জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় অর্ধশতাধিক ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১০টি বাড়ি-ঘর, ১টি মোটরসাইকেল ও ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ সংবাদ লেখা পর্য়ন্ত কোন মামলা হয়নি।

ক্ষতিগ্রস্থ রোকেয়া বেগম, নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন গাজী ও একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি দাদন মীর বহর গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষ ও একাধিক মামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার দুপুরে দাদন মীরহরের সমর্থক ফালান মালত, সাইফুল কাজী ও রাসেল সরদার রাজনগর ইউনিয়নের আন্ধার মানিক বাজারে রওয়ানা দেয়। পথি মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে পৌঁছলে জাকির হোসেন গাজীর সমর্থক সম্রাট গাজী, সাগর সরদার ও হাবুল মোল্যাসহ কয়েকজনে মিলে তাদেরকে ধাওয়া দেয়। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় জাকির গাজীর সমর্থকরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালিয়ে দাদন মীর বহরের সমর্থক সেলিম মালত, শাহিদ মালত, রফিকুল ইসলাম মালত, গিয়াস উদ্দিন সরদার, আবু কালাম মালত, কামাল মালত, অলিল কাজীর বাড়ি-ঘরসহ অন্তত ১০টি বাড়িতে এবং মহিষখোলা বাজারের কালাচান বেপারী, বাবুল মীর বহর ও সিরাজুল মীরহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট করে। হামলাকারীরা গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষগ্রিস্তরা। সংঘর্ষ চলাকালে দাদন মীর বহরের সমর্থক গিয়াস উদ্দিন সরদারের মেয়ে সেলিনা আক্তার, ছেলে আতাউর রহমান সরদার, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সোহাদা, রাসেল সরদার আহতসহ আক্কাস মীর মালত গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়। এ দিকে জাকির গাজীর সমর্থক স্বপন মাদবর, রতন ফকির, দেলোয়ার মীরবহর, মোশারফ মালতসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ২০জন আহত হয়েছে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল, জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত গুলিবিদ্ধ আক্কাস মীর মালত ও স্বপন মাদবরকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দাদন মীর বহর বলেন, জাকির গাজীর লোকজন হঠাৎ করে অর্ধ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের সমর্থকদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় তাদের ছোড়া গুলিতে আক্কাস মীর মালতসহ ৮/১০জন মারাত্মক আহত হয়েছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আকরাম এলাহী বলেন, আহতদের মধ্যে আক্কাস মীর মালত নামে এক জনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পরীক্ষা করে দেখেছি গুলির ক্ষত চিহ্ন।

রাজনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন গাজী বলেন, আমি এলাকায় ছিলাম না। দাদন মীর বহর ও সাবেক চেয়ারম্যান আলী উজ্জামান মালতের লোকজন আমাদের লোজনের উপর হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে আমার ৮/৯জন সমর্থক মারাত্মক আহত হয়।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান জাকির গাজী ও আওয়ামী লীগ নেতা দাদন মীর বহর এ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে গুলি ছোড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে দেখা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এখনো কোন মামলা হয়নি।


  • কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!