বিদেশে টাকা পাচার তেমন কিছু নয়: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি বাস্তবে মোটেই তেমন কিছু নয়।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশে অর্থ যে পাচার হয় না, সে কথা আমি বলবো না। কিন্তু সংবাদপত্রে যেভাবে অর্থপাচারের কথা বলা হচ্ছে তা- অতিশয়োক্তি, অতিরঞ্জিত।
তিনি জানান, সুইজারল্যান্ডে ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে অনেক অর্থ লেনদেন হয়েছে। তবে এটি অর্থপাচার নয়।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার হয়নি। সংবাদপত্রে যেটা বেরিয়েছে সেটি লেনদেনের হিসাব।
তিনি বলেন, বিদেশে টাকা পাচার হয় না একথা আমি বলবো না। হ্যাঁ, সত্যিই পাচার হয়, তা অতি যৎসামান্য। এটা নজরে নেয়ার মতো নয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারের বিষয়টি বাস্তবে মোটেই তেমন কিছু নয়। অর্থাৎ টাকার যে হিসাব কাগজে বেরিয়েছে ওইগুলো লেনদেন হিসাব এবং সম্পদের হিসাব।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যমে সুইস ব্যাংকের টাকা পাচারের কাহিনী ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।
বলা হয়েছে যে, ২০১৬ সালের শেষে বাংলাদেশিদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ৬৯৪ ডলার ১৫ সেন্টে উন্নীত হয়েছে। যা ২০১৫ সালে ছিল ৫৮২.৪৩ মিলিয়ন ডলার।
মন্ত্রী বলেন, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টিলিজেন্স ইউনিট অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
মুহিত বলেন, বাংলাদেশের খাতে সুইস ব্যাংকের সম্পদ হচ্ছে ২০১৬ সালে ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। এই সময়ে তাদের দেনা ৫ হাজার ৫৬০ কোটি। অর্থাৎ ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এবং তাদের কাছে জমা হয়েছে ৫ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সুইস ব্যাংকের দেনা-পাওনার পরিমাণ খুব বেশি। এটি অবশ্য ব্যক্তির আমানত।
তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের হিসাব ব্যক্তিখাতে মোট দেনা ৩৯৯.৮ কোটি। যা মাত্র ৭ শতাংশ। ব্যক্তি সম্পদ ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১৮৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ শতাংশ।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায় যে, আমাদের এবং সুইজারল্যান্ডের। বাস্তবে মোটেই অর্থপাচার নয়। এই ব্যাখ্যাটি অনেকের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। এই বিবৃতিতে তা- অবসান হবে বলেও উল্লেখ করেন মুহিত।
তিনি বলেন, সুইস ব্যাংকে ব্যক্তিখাতে অনেক হিসাব আছে। যারা বিদেশে চাকরি করে অথবা স্থায়ীভাবে বিদেশে কাজ করে। তাদের হিসাব এতে অন্তর্ভূক্ত আছে। তাদের কত টাকা আছে সেই তথ্য দিতে পারছি না। কারণ তাদের পাসপোর্টের হিসাব আমাদের কাছে নেই। কিন্তু আমাদের সাংবাদিকরা অত্যন্ত অন্যায়ভাবে এই টাকা পাচার বলে দিয়েছেন। সেজন্য দেশে একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে, যা দুঃখজনক।