মানুষ খুনের হাসপাতাল আজও?
মানুষ খুনের হাসপাতাল আজও?
রণেশ মৈত্র
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ
করোনা আমাদের দেশবাসীকে জানার প্রথম সুযোগ করে দিয়েছিল-দেশে অসংখ্য প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক লাইসেন্স বিহীনভাবে কাজ করে চলেছে। করোনা পরিস্থিতির বা তার সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পক্রিয়ার মূলে সরকারিভাবে তখন জানানো হলো, আনরেজিষ্টার্ড হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে সরকার ‘নো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। তাই অভিযান চলবে সেগুলি খুঁজে বের করতে। অভিযান চললো কিছুকাল। অনেক অনিয়ম যেমন, ডাক্তারদের মাস্ক, হ্যা- গ্লাভস, পিপিই সরবরাহ না করেই তাঁদেরকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করা হয়েছিল। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রেও তাই। চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেকে মারাও গেলেন। অবশেষে সেগুলি দেওয়া হলো। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীরা আশ^স্ত হলেন। পরে জানা গেল ওগুলি জাল। আরও জানা গেল স্বাস্থ্য বিভাগের এক নির্দিষ্ট ঠিকাদার ঐ জাল মাস্ক প্রভৃতি চড়াদামে সরবরাহ করেছেন এবং তিনি নাকি একজন কেউ কেটা। তিনি অধরাও বটে-অধরাই থেকে গেলেন তিনি দিব্যি বহাল তবিয়াতে। আজও নিশ্চয়ই তাঁর ঠিকাদারী বাতিল করা হয় নি। তাঁর বিরুদ্ধে কোন মামলারও দায়ের হয় নি। সংবাদপত্রে তেমন কোন খবর আজও প্রকাশিত হয় নি। আমরাও দিব্যি ভুলে গেলাম এগুলি এবং এই অবসরে হয়তো সম্ভবত: সারা দেশের হাসপাতালগুলিতে তাঁর ঠিকাদরী পূর্ণ উদ্যমে অব্যাহত আছে।
লাইসেন্স বিহীন হাসপাতালগুলি চিহ্নিত করা তাদের অপকর্মগুলি চিহ্নিত করা, রোগীদের কাছ থেকে মাত্রাধিক ফি ও ওষুধপত্রের দাম আদায় করার অভিযোগে কিছু মালিককে গ্রেফতার করা বেশ জোরে সোরেই শুরু হলো। কিছুদিন পর কি দিয়ে কি হলো বুঝে ওঠার আগেই পত্রিকাগুলিতে খবর বেরুলো-স্বাস্থ্যবিভাগ হাসপাতাগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বন্ধ করতে বলেছেন। অপরদিকে দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যার মধ্যে অবশ্যই লাইসেন্স বিহীন হাসপাতাল ক্লিনিকগুলিকে লাইসেন্স ফি জমা দিয়ে লাইসেন্স করিয়ে নিতে হবে। এক দফায় ঐ কাজের সময় সীমা বাড়ানোও হলো। অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হলো জনমতকে উপেক্ষা করে। বুঝতে অসুবিধে হয় না কেউকেটারা অনেক হাসপাতালের মালিক তাই ঢাকার কয়েকটা হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা বন্ধ করতে হলো। “নো টলারেন্স” নীতির মাজেজা স্পষ্ট হলো।
ভুলে গেছি এট কত দিন আগের ঘটনা। তবে পাঁচ ছয় মাস হবে বলে অনুমান করি। অত:পর খবর এলো মারাত্মক খবর-অবিশ্বাস্য খবর।
মাই- এইড হাসপাতাল: এ.এস.পি. হত্যা
কী মারাত্মক ও ভয়াবহ খবরই না পরিবশেন করেছে বিগত ১১ নভেম্বরের পত্রিকা সমূহ। সুপরিচিত দৈনিক ‘সমকাল’ ঐ তারিখের পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘সাউ- গ্রুফ টর্চার সেলে চিকিৎসা’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে লিখেছে:
মানসিক রোগী ও মাদকাসক্তদের ‘চিকিৎসা’ দেওয়ার নামে ‘মাই- এইড হাসপাতালে অসুস্থদের ওপর চালানো হতো অকথ্য নির্য্যাতন। রাজধানীর আদাবরে বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটির ২নং সড়কে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে গড়ে তোলা হয়েছিল সাউ- গ্রুফ দুটি টর্চার সেল। এর একটিতেই গত সোমবার (৯নভেম্বর ২০২০) নৃশংস নির্য্যাতনের ফলে মারা যান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিছুল করিম। তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটান পুলিশে কর্মরত ছিলেন।
গত মঙ্গলবারে সাংবাদিকেরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেন, একটি তিনতলা আবাসিক ভবনের পুরোটা জুড়েই হাসপাতাল। অথচ হাসপাতালটির কোন বৈধতাই নেই। নির্য্যাতনে পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় ১০ কর্মীকে গ্রেফতারের পর বাকী কর্মীরা পালিয়ে গেছেন। হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে সাংবাদিকেরা দেখেন, পরিপাটি করে সাজানো কক্ষগুলোর মধ্যে রয়েছে ঐ বিশেষ দুটি কক্ষ। নীচতলা ও দোতলার কক্ষ দুটিই সেই গোপন কুঠুরি। দেয়ালের চারপাশে ছাদ পর্য্যন্ত ভারী ফোমের আস্তরণ, মেঝেতেও একই অবস্থা।
হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকেরা জানতে পারলেন, ওই দুটি গেপান কক্ষে চিকিৎসার নামে মানসিকভাবে অসুস্থদের নিয়মিতই নির্য্যাতন করা হতো। ভর্তির পরেই রোগিদের বশে আনতে গোপন কুঠুরীতে নিয়ে যাওয়া হতো। ভর্তি রোগীদের মধ্যে যাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো না, তাদেরও ঠাঁই হতো সাউ- প্রুফ চর্টার সেলে।
হাসপাতালের কর্মীরা আরও জানান, মানসিক চিকিৎসার জন্য সোমবার সকালে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকেও দোতলার সাউ- প্রুফ কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালের কর্মীরা তাঁর উপর নির্য্যাতন চালান। ওই কক্ষের সিসিটিভি ফুটেজে সেই নির্য্যাতনের দৃশ্য স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। আনিসুলের মৃত্যুর পর সবাই নড়ে চড়ে বসলেও দেড় বছর ধরে অনুমোদন ছাড়াই অবাধে চলছিল হাসপাতালটির কার্য্যক্রম। অবৈধ এই হাসপাতালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একাধিক চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় ও হাসপাতাল, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল এবং কেন্দ্রীয় মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রের একাধিক চিকিৎসকও চিকিৎসা দিতেন।
জানা গেছে, হাসপাতালটির মালিকানায় রয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে ডা. নিয়াজ মোর্শেদ এর সার্বিক কার্য্যক্রম দেখভাল করতেন। কিন্তু তিনি অন্য এক হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতালটির কর্মী রুমা আক্তার জানান, যে সব রোগী খারাপ আচরণ করতো তাদের ঐ দুটি কক্ষে আটকে রাখা হতো। সেখানে কেউ কান্নাকাটি করলেও শব্দ বাইরে আসতো না। তবে বড় স্যারেরা কক্ষের ভিতরের দৃশ্য সিসিটিভিতে মনিটর করতেন।
আনিসুল করিমের উপর নির্য্যাতন
সোমবার আনিসুল করিমের সঙ্গে মাই- এইড হাসপাতালে যান তাঁর চিকিৎসক বোন উম্মে সালমা সাথী। তিনি জানান, বেলা সাড়ে এগারটার দিকে ওই হাসপাতালেরর নীচ তলায় বসে হালকা খাবার খান তার ভাই। এই পর্য্যায়ে হাসপাতালের লোকজন এসে তাঁকে নিয়ে যান। তখন তিনি সঙ্গে যেতে চাইলেও দোতলার কোলাপসিকল গেট আটকে দেওয়া হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজে নির্য্যাতনের পুরো ঘটনাটা দেখতে পান।
ফুটেজে দেখা যায় বেলা ১১-৫৫ মি. এর দিকে আনিসুল করিমকে টানা হ্যাঁচাড়া করে একটি কক্ষে ঢুকানো হচ্ছে। পাঁচ ছয় জন মিলে তাঁকে মেঝেতে ফেলে চেপে ধরতে দেখা যায়। এর পর আরও দুজন এসে তাঁর পা চেপে ধরে। ওই সময় মাথার দিকে থাকা দুজন হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে আঘাত করতে থাকে। একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে তাঁর হাত পেছনে বাঁধতেও দেখা যায়। পুরা ঘটনার সময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদকে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ভিডিওর চার মিনিটের মাথায় আনিসুলকে উপুর করলেও তার দেহ নিস্তেজ অবস্থায় ছিল। একজনকে তখন তার মুখে পানি ছিটাতে দেখা গেছে। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রণ পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটরে মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দিতে দেখা যায়। এর দুই মিনিট পর আনিসুলেরর বুকে পাম্প করেন অ্যাপ্রোণ পরা ওই নারী।
অনুমোদনহীন হাসপাতাল?
সারাদেশে মাদকাসক্তদের বেসরকারি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকাভূক্ত ৩২৪ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাই- এইড মানসিক ও মাদকাসক্ত হাসপাতাল নামে এই প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের ২২ আগষ্ট তালিকাভূক্ত হয়। সেখানে ৩০ শয্যা থাকার কথা থাকলেও অর্ধশতাধিক শয্যা দেখা গেছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতদরের তালিকায় থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোন অনুমোদন ওই হাসপাতালের ছিল না। গত মঙ্গলবার হাসপাতালটি পরিদর্শন করে ঢাকার সিভিল সার্জন আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান এ তথ্য জানান। তিনি আরও বলেন হাসপাতালটি চালানোর মত সুবিধা ও জনবল কিছুই না থাকায় তাদের আবেদন স্থগিত করা হয়। ফলে, এ হাসপাতালটি সম্পূর্ণ অবৈধ।
তিনি আরও বলেন, এটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র হিসাবে চালাচ্ছিল। এসব প্রতিষ্ঠান চালাতে হলে জরুরী প্রয়োজনের জন্য কিছু ক্লিনিক্যাল ফ্যাসিলিটিজও হাসপাতালে ব্যবস্থা রাখতে হয়। কিন্তু তাদের সে ব্যবস্থাও ছিল না।
আনিসুল করিমের আচরণ
এ এস পি আনিসুল করিমের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মাই- এইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রচারণা চালাতে থাকে এ এস আই আনিসুল করিম হাসপাতাল কর্মীদের সাথে উচ্ছৃংখল আচরণ করছিলেন। তাকে নিবৃত্ত করতে গেলে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। কিন্তু মঙ্গলবার ঐ হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, সেখানে নেওয়ার পর আনিসুল বেশ শান্ত ছিলেন। তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফাইজুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ছেলেকে ঐ হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি সঙ্গে ছিলেন। সেখানে তার ছেলে একেবারে শান্ত ছিল। সবার সঙ্গেই সে স্বাভাবিক আচরণ করে। এভাবেই গত কয়েকদিন ধরে সে চুপচাপ থাকতো।
সোমবার পর্য্যন্ত ঐ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১৭। তাদের ১৬জন ঐ রাতেই চলে যান। মঙ্গলবার সকাল পর্য্যন্ত সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন কক্সবাজারের বাসিন্দা আনিসুল হক চৌধুরী। তবে মঙ্গলবারই তিনি ও হাসপাতাল ছাড়েন। তিনি বলেন, এ এস পি আনিসুল করিম বেশ ভদ্রভাবে হেঁটে ওপরে আসেন। তিনি কোন ধরণের উচ্ছৃংখল আচরণ করেন নি। হেঁটে আসার সময় কারও সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও করেন নি। এরা চিকিৎসার নামে গোপন কক্ষে নিয়ে মারধোর করেছে।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর
১১ নভেম্বর দুপুরের টিভি নিউজে জানা গেল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর তাদের লাইসেন্স নিয়ে মাই- এইডের শুধুমাত্র মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত ব্যাপারে চিকিৎসার অনুমতি ছিল কিন্তু তারা মানসিক রোগীর চিকিৎসা করার ফলে কোন লাইসেন্স না নিয়েও অবৈধভাবে মানসিক রোগীর চিকিৎসা করায় লাইসেন্স বাতিল করেছে।
এখানে প্রশ্ন জাগে মাদকদ্রব্য অধিদফতর খোদ রাজধানীর বুকে স্থাপিত এই হাসপাতালে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার আইনী সুযোগ থাকলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলি বাস্তবে কি করছে তার খোঁজ খবর কেন রাখেন নি? এই সব প্রশ্নে জবাবদিহিতার দিকটা উপেক্ষিত হলো কেন? আরও তো অসংখ্য হাসপাতাল বা ক্লিনিক হয়তো মাদকদ্রব্য অধিদফতরের লাইসেন্স নিয়ে বা না নিয়ে একই রকমের মানসিক রোগীদেরও চিকিৎসা গোপনে বা প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব কি অবহেলাযোগ্য?
স্বাস্থ্য অধিদফতর
স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তব চেহারা এই ২০২০ সালে দেশ বিদেশের সামনে উন্মোচিত হয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উপলক্ষ্যে। এদের বিরুদ্ধে এদের অনুমোদনে পরিচালিত হাসপাতালগুলিতেও তো কতই না বে-আইনী কারবারের ঘটনা ঐ সময় জানা গিয়েছিল। জানা গিয়েছিল লাইসেন্স বিহীন বহু হাসপাতাল-ক্লিনিকের অবৈধ অস্তিত্বের কথা খোদ রাজধানী শহরেই। কিছু কিছু ব্যবস্থাও বে-আইনী কর্মকা-ে জড়িত থাকা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নেওয়া শুরুও হয়েছিল। সরকারিভাবে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল যাদের রেজিষ্ট্রেশন নেই-তারা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে নেয় যেন। এক্ষেত্রে অধিদফতরের ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কি ছিল না দেশের সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিক রেজিষ্ট্রেশন নিল কি না। তারা নির্ভরযোগ্য তদন্ত করা? নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর কোন সুযোগ আছে কি স্বাস্থ্য অধিদফতর-স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের? কোটি কোটি মানুষের জীবন সুস্থ রাখার মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হাতে থাকা সত্বেও।
আজ তো উদঘাটিত হলো যে খোদ রাজধানীতেই মাই- এই নামক এক হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদফতর বা মন্ত্রণালয়ের কোন অনুমতি ছাড়াই প্রাকশ্যে দিব্যি মানষিক রোগীর চিকিৎসা কাজ পরিচালনা করে আসছিল। ঢাকা শহরে এবং দেশের জেলা-উপজেলাগুলিতে এ জাতীয় কর্মকা-ে অসংখ্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক নিয়োজিত রয়েছে কি না? সে খরবটি কি তাঁরা রাখেন?
স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ করোনার বহু আগে থেকেই চলে আসছিল। পত্র পত্রিকায় এসব ব্যাপারে বহু প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়ে আসছিল কিন্তু সরকারিভাবে এগুলির বিরুদ্ধে কার্য্যকর কোন পদক্ষেপ আজও নেওয়া হয় নি। উল্টো বরং কতিপয় ক্ষমতাবানকে বাঁচাতে অবৈধ হাসপাতাল, সময় অতিক্রান্ত ওষুধ, মজুত, বিক্রী এবং হাসপাতালগুলিতে নানা স্বাস্থ্য সামগ্রী ক্রয়ে ব্যাপক দুর্নীতি বিরোধী অভিযান শুরু হতে না হতেই তা বন্ধ করে দিয়ে দুর্নীতিবাজ ও আইনভঙ্গকারীদেরকে তাদের যাবতীয় অপকর্ম চালিয়ে যেতে পরোক্ষ অনুমোদন দেওয়া হলো।
মাই- এইড নাম হাসতাপালে বেমালুম পুলিশ অফিসার হত্যার যে ভয়াবহ ঘটনা জানা গেল তা ঐ হাসপাতালে এবং আও কোন কোন হাসপাতালগুলিতে চলছে কি না-মাইন্ড এইডে এর আগে কতজনকে হত্যা করা হয়েছে এসব তথ্য স্বচ্ছতার সাথে বিচার বিবাগীয় তদন্ত করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ এবং দায়ীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন।
ভাগ্যিস মাই- এইড হাসপাতাল পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার মাধ্যমে জনগড়ণকে জানার সুযোগ দিল তারা কী ভয়াবহভাবে তাঁদের কর্মকা- নির্বিবাদে রাজধানীর বুকে চালিয়ে যাচ্ছিল। নইলো তো দেশবাসী অন্ধকারেই থাকতেন।