যে কতাগুলি হারিয়েই গেল স্মৃতি থেকে
যে কতাগুলি হারিয়েই গেল স্মৃতি থেকে
রণেশ মৈত্র
সভাপতিদ মন্ড-লীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ
আমরা যেন এক ধরণের গতানুগতিকতায় অভ্যন্ত হয়ে পড়ছি। কোন কিছুর ধারাবাহিকতা রক্ষা, কোন ইস্যু সামনে এলে তার শেষ পর্যন্ত তৎপর থেকে সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানে না পৌঁছা পর্য্যন্ত তাকে জিইয়ে রেখে মানুষকে অগ্রগতি/অধোগতি অবহিত করা, নতুন ইস্যু এলে তার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পুরাতন বড় ছোট ইস্যুগুলিকে হারিয়ে না ফেলা যে দেশ ও জনগণের স্বার্থেই প্রয়োজন সে দিকে খেয়াল না রাখাই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের সামাজিক-রাজনৈতিক নীতি। এর পরিণতি যে কোন দিন শুভ হতে পারে না-তাও যেন আমরা ভুলতে বসেছি।
এই সুযোগে আমার প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের স্মরণে আনতে চাই আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক জীবনে কয়েকটি বড় অর্জনের কথা সাময়িকভাবেও উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা।
বর্তমান সরকারের আগের টার্মে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে দুটি মোকর্দমায় ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছিলাম। দুটি প্রতিবেশী দেশের সাথে সীমানা বিরোধের যে নিষ্পত্তি ঐ মোকর্দমা দুটির রায়ে ঘোষিত হয়েছিল সে অনুযায়ী আমরা বহু সম্পদের উৎসস্থল বঙ্গোপসাগরের বিশাল এলাকার মালিকানা অর্জন রায় দুটি, সকলের মনে আছে নিশ্চয়ই ছিল ভারত ও মিয়ানমারের স্বার্থের প্রতিকূলে বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূলে। তখন আমাদের সরকার এই রায় দুটির ফলে অর্জিত যে সকল সম্ভাবনা তৈরী হয়েছিল বলে জানিয়েছিল-তাতে বাংলাদেশের বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল।
আমরা জেনেছিলাম ঐ দুটি রায়ের ফলে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে যে বিশাল বিরোধীয় এলাকার মালিকানা আমরা অর্জন করেছিলাম-তার ফলে ঐ এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণে তেল-গ্যাস পাওয়া যাবে-যা দিয়ে বাংলাদেশের বর্তমানই শুধু নয়-আগামী বহু বছরের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করেও গ্যাস, বিদ্যুত রফতানির সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। ছোট্টা কিন্তু বিপুল সম্ভাবনাময় এই খবরে জাতি অত্যন্ত উচ্ছাসিত আনন্দে মেতেছিল-সংবাদপত্রের পৃষ্ঠাগুলিকে ঐ বিষয় নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত উৎসাহব্যঞ্জক খবর প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছিল কত কলা, প্রবন্ধ, নিবন্ধাদি প্রকাশিত হয়েছিল-আজ তা পূরোপূরি স্মিমিত পর্দার একেবারে অন্তরালে ঠাঁই পেয়েছে বিপুল উৎসাহ সৃষ্টিকারী ঐ খবরটি।
শুধুই তেল গ্যাস যা উৎপাদিত হবে তার একটি অংশ বিদেশে রফতানি করার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল তাই না-আরও বলা হয়েছিল এই রায়ের তাৎপর্য্য বহুমুখী। উৎপাদিত তেল গ্যাস দিয়ে বাংলাদেশে নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে তোলা যাবে-নতুন করে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে-ঐ কলকারখানাগুলিতে উৎপাদিত পণ্যের একটি অংশ বিদেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে প্রভৃতি।
যদি আমার স্মৃতিশক্তি ঠিকমত সক্রিয় থাকে তবে ঐ রায়ের ফলে যে বিশাল এলাকায় নতুনভাবে বাংলাদেশের মালিকানা স্বীকৃত হয়েছিল তার এলাকা আর একটি বা দুটি বাংলাদেশের সমান। ঐ এলাকাকে মানুষের বসবাসযোগ্য করে তুলতে পারলে আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ভাল একটি অংশের গৃহায়ন সমস্যা সহজেই দূর করা সম্ভব হবে-কৃষি উপযোগী গড়ে তুলে বিপুল পরিমাণ কৃষি পণ্য উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এই ক্ষেত্রেও বহু লোকের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি নির্মাণ করে ঐসব ক্ষেত্রে মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর সুযোগ পাওয়া যাবে…..ইত্যাদি।
ঐ খবরগুলির ফলো-আপ কোথায়? ঐ যে সম্ভবনাগুলির কথা বলে মানুষকে উৎসাহিত করা হয়েছিল তারও কোন ফলো-আপ সরকারিভাবে সামান্যতমও চোখে পড়ে না-গ্যাস তেল অনুসন্ধানের, এলাকা বাসযোগ্য করার কোন পরিকল্পনা এতদিনেও চোখে পড়ে না। তাই প্রশ্ন তোলাই যায়, কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বছরের পর বছর ধরে আইনী লড়াই চালিয়ে যে বিজয় অর্জন হয়েছিল-তা কি ঐ রায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি জনস্বার্থে, রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সৃষ্ট সুযোগের সুফল দেশের মানুষকে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি এতদিনেও গুরুত্ব পাচ্ছে না কেন?
আমরা জানি, বাংলাদেশে পাথরের এমন খনি আছে যা বিশ্বমানের। দেশে বিশ্বমানের কয়লার খনিটিতে প্রচুর পাথর উত্তোলন করে উন্নয়ন ও নির্মাণ কাজে তা ব্যবহার করা যায়। কিন্তু তা উত্তোলনের ব্যবস্থা আজও হচ্ছে না। ফলে আমাদের নিজেদের দেশের ভাল পাথরের খনিতে রেখে বিদেশ থেকে পাথর আমদানী করছি।
একই ধারা অনুসরণ করা হচ্ছে কয়লার ক্ষেত্রেও। কয়লা অতি মূল্যবান সম্পদে পরিণত হতে পারে যদি তা বিজ্ঞান সম্মতভাবে উত্তোলন করে গ্যাস উৎপাদন সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এটাও কোন অজ্ঞাত কারণে আটকে আছে। ফলে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শিল্পায়ন শব্দটাই যেন আমরা ভুলে বসে আছি। আমাদের ধনিক-বণিকরা শিল্পায়নে বিশেষ করে মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প গঠনে পুঁজি খাটান না। কারণ সম্ভবত: অনেকগুলি। তার মধ্যে প্রধান কারণটি হলো শিল্পে পুঁজি বিনিয়োগ করলে লাভের মুখ দেখতে অনেক দেরী হয়। ঐ দেরীটা তাঁরা সইতে পারেন না। তাঁদের আকর্ষণ মওজুতদারী, চোরাকারবারী ও ঐ জাতীয় ক্ষেত্রে পুঁজি বিনিয়োগ। তাতে অল্প পুঁজিতে অনেক লাভ এবং লাভের হারও বেশী। দ্রুত ধনী হওয়া যায়-গাড়ি-বাড়ীর মালিক হওয়া যায়। দ্বিতীয় কারণটি হলো, তাঁদের মতে উপযুক্ত ট্যাকস হলিডে নাকি তাঁরা পান না-যা-ও বা পান-তা স্বল্পমেয়াদী। তাঁরা চান দীর্ঘ মেয়াদী। কার্য্যত: তাঁদের দাবী ট্যাকস মওকুফ-যেমন তাঁরা চান সুদ-আসলে ব্যাংক ঋণের টাকা মওকুফ। এ জাতীয় আবদারের তাঁদের পারঙ্গমতা বিস্তর। কিন্তু পুঁজির বিকাশে উন্নত দেশগুলি দেখে শিক্ষা নিতে তাঁরা নারাজ। তাঁদের মওজুতদারী এমনই যা এবার, গতবার এবং বিভিন্ন বছরে পেঁয়াজ, চাল, মিল্ক পাউডার প্রভৃতি অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আকাশচুম্বি মূল্যবৃদ্ধি দেখেই বুঝা যায়। অসুবিধেটা হলো এঁরা আবার সরকারি মহলগুলি থেকে প্রশ্রয়ও পান। তাই দেখা যায়, মুনাফাখোর-মওজুতদারদের গায়ে কদাপি হাত পড়ে না। দিব্যি তাঁরা তাঁদের অবৈধ কার্য্যকলাপ প্রকাশ্যেই চালিয়ে যান।
তাঁদের সরকারি সুবিধা লাভের অভিনব নজির এবার দেখা গেল করোনাজনিত কারণে গার্মেন্টস্ কারখানাগুলি যখন কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখতে তাঁরা বাধ্য হলেন, ঐ সময় তাদের লক্ষাধিক শ্রমিক বেতন পেলেন না। এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির মুখে সরকার ঐ বেকার পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের জন্য বেশ কয়েকশত টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করলেন-তখন তার মালিকেরাও আবদার শুরু করলেন টাকা তাঁদেরকেও দেওয়া হোক। কারণ তাঁরাও লোকসানের সম্মুখীন। সামান্য দু’তিন মাস উপার্জন বন্ধ থাকলো বৈশ্বিক দুর্যোগের কারণে কিন্তু এটা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ যে দু’তিন মাস উপার্জন না হওয়াতে তাঁদের হাত বা ব্যাংক ডিপোজিট শূণ্য হয়ে পড়েছে? তাঁদেরও পেটে ভাত জুটছে না? কেউই তা বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু আবদারটি তাঁরা করেই ফেললেন।
বলছিলাম, ব্যাক্তি খাতের কথা। আমরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির কাছে প্রদত্ত অঙ্গীকারের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে চালু করেছি ব্যক্তিগত খাতে শিল্প বিকাশ। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। তারা শিল্পয়ন করছে না-বা করলেও ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যেই তারা সীমাবদ্ধ থাকছে। ফলে দেশ শিল্প সমৃদ্ধ হচ্ছে না। আমরা এই সেক্টরে অতিশয় দুর্বল থেকে দাবী করে চলেছি “দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।” “বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে”।
আর যে সব শিল্পকারখানা-অর্থাৎ জুটমিল, পেপার মিল, সুগার মিল প্রভৃতি সরকারি মালিকানায় ছিল-সেগুলিতে উৎপাদন বন্ধ করে শ্রমিকদের সাথে গোল্ডেন হ্যা-শেক করছি। শ্রমিকদের বেকারত্বের অন্ধকার কূপে নিক্ষেপ করছি। বলা হচ্ছে, সরকারি মালিকানায় শিল্পে লোকসান হচ্ছে। কিন্তু খতিয়ে দেখছি না, লোকসান কার দোষে এবং কি কারণে যাচ্ছে না। যতটুকু জেনেছি কাঁচামাল যা কিছু কেনা হতো-তার অত্যধিক উচ্চমূল্য দেখানো, কম পরিমাণ কিনে বেশী পরিমাণে ক্রয় দেখানো, মেশিনপত্র মেরামত না করেই বা সামান্য মেরামত করেই বিরাট অংকের বিল দেওয়া প্রভৃতি ব্যাপকভাবে চালানো হয় সরকারি মিল-কারখানাগুলিতে। অবিলম্বে এগুলি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির বিধান করা প্রয়োজন।
সরকারি বাস চালানো যায় না-অথচ বেসরকারি বাসগুলির রমরমা ব্যবসা চলছে। কেন সরকারি বাস চলতে পারে না? বেসরকারি মালিকেরা তাদের শ্রমিকদের নিয়ে গু-ামি করে সরকারি বাস-ট্রাক ভাংচুর করে তাদের চলাচল বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়। এমন ঘটনা বহুবার ঘটতে দেখা গেছে কিন্তু দায়ী বেসরকারি কোন মালিক শ্রমিকের এই বে-আইনী কার্য্যকলাপ এবং সরকারি সম্পত্তিতে ক্ষতিসাধান করার দায়ে বিন্দুমাত্র শাস্তি দেওয়া হয় নি-মূলত: ঐ মালিকদের সরকার সংশ্লিষ্টতার কারণে। ঐ শ্রমিকেরাও একটি সরকার নিয়ন্ত্রিত ট্রেড ইউনিয়নের যুক্ত থাকায় তাদের গায়েও হাত দেওয়া হয় না হাজারো অপরাধ করা সত্বেও।
অনেক সরকারি মিল-কারখানা বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বিগত বছরগুলিতে বাদ-বাকীগুলিও ছেড়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। যেগুলি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তারা বেশীর ক্রেতা মালিকেরা চালু না করে সেগুলির যাবতীয় মেসিনপত্র, দালান-কোঠা-মায় জমি পর্য্যন্ত বিক্রী করে দিয়ে শ্রমিকদের স্থায়ী বেকারত্বের মুখে ঠেলে দিয়েছে প্রয়োজনীয় পণ্যাদি কেনার ক্ষেত্রে অনেক বেশী দাম দেখানো, কাজে ফাঁকি, উপরতলায় মাথাভারী প্রশাসন এবং তাঁদের ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য উচ্চ বেতন এবং তাঁদের সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশী, মার্কেটিং এ সঠিক নিয়মকানুন অনুসরণ না করা-প্রভৃতি কারণে লোকসান হচ্ছে। কিন্তু যদি ঠিকমতো দেখভাল করা যেতো, মাথাভারী প্রশাসন এবং সেই প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক উচ্চ বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে ঠিক ঠিক প্রয়োজন মোতাবেক কর্মকর্তা মিলের উপার্জন অনুযায়ী বেতনের ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে নিয়মিত জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা, দায়িত্বশীল শ্রমিক স্বার্থ রক্ষাকারী উৎপাদন নিষ্ঠ ট্রেড ইউনিয়ন দেশের উন্ননের স্বার্থে অপরিহার্য্য।
যে সকল মালিক সরকরি মিল কারখানা জলের দামে কিনে নিয়ে মেশিনপত্র, দালানকোঠা ও জমি বিক্রী করে দিয়ে কার্য্যত: সরকার ও দেশের স্বার্থের বিপরীতে মুনাফা করেছে-তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করাও প্রয়োজন। অপরপক্ষে যারা কিনে নিয়ে মিল চালু না করে অচল করে রেখে শ্রমিকদের বেকার করে রেখেছে তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মিল চালু করতে বাধ্য করা প্রয়োজন।
নতুন করে আর কোন সরকারি মিল বন্ধ ঘোষণা বা বেসরকারি হাতে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলে তা পরিবর্তন করে সরকারি মালিকানায় রেখে উৎপাদন বৃদ্ধি ও মাথাভারি প্রশাসন না রাখা ও তাদের উচ্চ বেতন না দিয়ে মিলের সঙ্গতি অনুযায়ী বেতন দানের ব্যবস্থা করাও প্রয়োজন।
এই বিষয় নিয়ে শুধু পাকিস্তান আমলেই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী কালেও যথেষ্ট আন্দোলন ও লেখালেখি এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন প্রভৃতি হয়েছে। পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও কমিউনিষ্ট পার্টিও এই দাবীগুলিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছিলেন।
স্বাধীনোত্তর কালে বঙ্গবন্ধু সমস্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশকে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঘোষিত লক্ষ্যে অগ্রসর হতে চেষ্টা করেছিলেন। আজ আমরা তা বিস্মৃতির অন্তরালে ঠেলে দিয়েছি।
এবারে যখন কয়েটি পাটকল লোকসানের প্রেক্ষিতে লোকসানের কারণ অনুসন্ধান ও তা দূর করতে এগিয়ে না এসে বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয় তখনও বিস্তর মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পত্র-পত্রিাকও বেসরকারি করণের বিরোধিতা করে লেখালেখি করে এবং আন্দোলন বিক্ষোবের সচিত্র খবর সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল সমূহে প্রচার করে।
কিন্তু কোনদিকে কর্ণপাত না করার এবং গণ-বিরোধী সিদ্ধান্তে অটল থাকার অর্থই হলো অতীতের ইতিহাস ও কথাগুলি ভুলে যাওয়া।
এই বিস্মৃতির গহ্বর থেকে টেনে তুলে দেশকে বাঁচানো অপরিহার্য্য।