সমাবেশ থেকে ফেরার পথে আড়াইশ’ নেতাকর্মী গ্রেফতার, মুক্তি দাবি বিএনপি’র
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসভা হয়। জনসভা শেষে নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার সময় মহানগরীর বিভিন্ন রাস্তা থেকে প্রায় আড়াই শতাধিক বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকে জনসভায় যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদেরকে বাধা প্রদান করেছে পুলিশ।
বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বার্তায় আজ রাতে এতথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ্য করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার এখন জনসমাগম দেখলেই আঁতকে উঠছে। কারণ তাদের পায়ের নীচের শেষ মাটিটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে একপেশে নীতিতে দুঃশাসন অব্যাহত রাখার জন্য দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে বর্তমান অবৈধ সরকার।
বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে গুম, খুন ও অপহরণ, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাত্রা এতটাই তীব্র মাত্রা ধারণ করেছে যে, দেশ যেন এখন জঙ্গলের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। আবারও একতরফা প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ জোর করে ছিনিয়ে নিতে ক্ষমতাসীনরা এখন আরও বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে। ক্ষমতার দম্ভে আওয়ামী সরকার পুলিশকে লেলিয়ে দিচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। এবারে তারা আর জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না। বর্তমান স্বৈরাচারী শাসকদের পতন ঘটাতে জনগণ এখন আরও বেশী ঐক্যবদ্ধ।
আজকের শান্তিপূর্ণ জনসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রহমানকে গ্রেফতার করা হলেও বিশস্ত সূত্রে জানা গেছে যে তিনি ডিবি কার্যালয়ে আছেন অথচ এখনও তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হচ্ছে, এছাড়া ২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন, ওয়ারী থানা বিএনপি নেতা লিঠু, নিউমার্কেট থানা বিএনপি নেতা জসিম, আলমগীর, মোয়াজ্জেম, নওগাঁ জেলাধীন বদলগাছি থানা যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম, পাবনা জেলাধীন সাথিয়া উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সামসুর রহমান, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি নেতা মনি পাহেলী, হৃদয়, সম্রাট পাহেলী ও ছাত্রদল নেতা ইসলাম সহ ১০ জন, নোয়াখালী সূবর্ণচর বিএনপি নেতা ও ঢাকাস্থ সূর্বণচর জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি এম এ কালাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসাস এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ এনাম মুন্না, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবুল কালাম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মেহেদী হাসান লিটু, নাঙ্গলকোট থানা ছাত্রদলের সদস্য আহসান মজুমদার নিশাত, যুবদল নেতা ইসমাইল মজুমদার, মোঃ শিহাব খন্দকার, বটতলী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াসিন আলী, সহ-সভাপতি মনছুর আহম্মদ ভুঁঞা, জোড্ডা ইউনিয়ন যুবদল নেতা মোঃ ছাদেক, ছাত্রদল নেতা মোঃ ওমর ফারুক খোকন, বটতলী ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল হোসেন সুমনসহ প্রায় আড়াই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জনসভাস্থলে আসতে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নেতাকর্মীদেরকে বাধাদানের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবী করছি।”
অপর এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহবুব শ্যামল মিথ্যা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে হাজির দিতে গেলে তার জামিন বাতিল করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের কারাগারে দেখতেই পছন্দ করে। তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে নিঃশব্দ ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে শুধুমাত্র দুঃশাসন প্রলম্বিত করার জন্য। আর এ কারণেই ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলদের মতো তরুণ নেতাদের সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করে সরকার। ফলে ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলদের ঠিকানা হচ্ছে লৌহ কপাটের ভিতরে। গণতন্ত্র হচ্ছে শান্তি ও সহাবস্থানের পূর্ব শর্ত। প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারলেই আইনের শাসন ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহবুব শ্যামলের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করেন। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রহমানের অবস্থান নিশ্চিতকরণেরও জোর দাবি জানান।