কুমিল্লার তিতাসে ৪ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
ভোটকেন্দ্র দখল, গোলাগুলি, জাল ভোট দেওয়াসহ নানা অভিযোগে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার চারটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার পর কেন্দ্র চারটিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
সকাল আটটা থেকে আজ দেশের ১০৭ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট নেওয়া শেষ হবে বিকেল চারটায়।
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বড় সংঘাতের ঘটনা ঘটে জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এখানে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনার পর ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় জিয়ারকান্দি বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের প্রার্থী পারভেজ হোসেন সরকারের সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
এই কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা কেন্দ্র দখল করতে চাইলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা তাতে বাধা দেন। তখনই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০টি গুলি বিনিময় হয়। রামদা, ছেনিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও আনসার ১৬টি গুলি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাসের একটি শেল নিক্ষেপ করে। বেলা ১১টার দিকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিস্থিতির কথা জানালে পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ অতিরিক্ত পুলিশ কেন্দ্রে আসে।
গোলাগুলির সময় প্রথম আলোর এই প্রতিবেদক কেন্দ্রের মধ্যে আটকা পড়েন। এ সময় যাঁরা ভেতরে ছিলেন, তাঁরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করেন। নারী ভোটাররা কান্নাকাটি শুরু করেন। কেন্দ্রের একটি বুথে গিয়ে দেখা যায়, শূন্য বুথে হালিমা খাতুন নামের একজন পোলিং এজেন্ট নৌকা প্রতীকে ছিল মারছেন। আরও কয়েকটি বুথে গিয়ে একই বিষয় লক্ষ্য করা যায়। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, কয়েকজন তাঁদের কাছ থেকে সিল মারার জন্য ব্যালট ছিনিয়ে নিতে আসে।
জিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এই পরিস্থিতিতে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নেই।
এদিকে এ সময় কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রথম আলোর ভাড়া করা একটি গাড়ির (মেট্রো চ ১৩/৮৩৯৩) পেছনের ডান পাশের চাকার টায়ার কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। গোলাগুলির সময় এ ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিতাস উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ৪৬টি। জিয়ারকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া বাকি যে তিন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে, সেগুলো হলো ভিটিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাশকান্দি সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্দরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।