টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ শতাধিক শিক্ষকের পদ শূন্য ॥ ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম
মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
টাঙ্গাইলে ৫শ’৭৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। আর সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২শ’ ৬৪টি। এতে মোট ৮শ’৩৮টি শিক্ষককের পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত নিয়োগ এবং পদন্নোতি না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা যায়। এতে এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলায় ১২টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২শ’ ৮৪টি এবং সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকাররি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২শ’ ৯০টি শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষক পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১শ’ ৬৬টি, এবং সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯৪টি পদ শূন্য রয়েছে।
এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে ঘাটাইল উপজেলায় ৬৫, সখীপুর উপজেলায় ৪৫, গোপালপুর উপজেলায় ৫১, বাসাইল উপজেলায় ৪৩, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৩৪, দেলদুয়ার উপজেলায় ৪৪, মির্জাপুর উপজেলায় ৬৯, কালিহাতী উপজেলায় ৬৯, মধুপুর উপজেলায় ৩৫, নাগরপুর উপজেলায় ৫৪, ভূঞাপুর উপজেলায় ৩৬, ধনবাড়ী উপজেলায় ২৯টি পদ শূন্য রয়েছে।
সহকারি শিক্ষক পদে ঘাটাইল উপজেলায় ৪, সখীপুর উপজেলায় ৬৬, গোপালপুর উপজেলায় ৫০, বাসাইল উপজেলায় ২৮, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮, দেলদুয়ার উপজেলায় ৪, মির্জাপুর উপজেলায় ১৬, কালিহাতী উপজেলায় ১০, মধুপুর উপজেলায় ১০, নাগরপুর উপজেলায় ৩৫, ভূঞাপুর উপজেলায় ২৭, ধনবাড়ী উপজেলায় ৬টি পদ শূন্য আছে।
শিক্ষক সংকটের ফলে পাঠদানসহ প্রতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। অনেক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী বলেন, এই কারণে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান করার জন্য জোর দাবি জানিয়েয়েছেন।
এ ব্যাপারে গোপালপুর উপজেলার শাখারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আঞ্জু আনোয়ার ময়না বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ২০১৩ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকদের পদ শুন্য রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়কজন সহকারী শিক্ষককের পদ শুন্য রয়েছে। বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৯ জন শিক্ষককের মধ্যে ৪ জন শিক্ষক কর্মরত আছি। এতে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত নিয়োগ এবং পদন্নোতি না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবি দ্রুতই প্রধান শিক্ষকসহ অন্যন্য শিক্ষকদের পদ পূরণ করা হোক। এব্যাপারে আমরা সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম মাজাহার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নরে জন্য অন্যতম একটি অন্তরায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি জেলায় ৮৩৮ শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় অব্যশই শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষককের নিয়োগ এবং পদোন্নতি না হওয়ায় প্রাথমিকে ব্যাপক শিক্ষক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি সরকার দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করবেন।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য রয়েছে অতিদ্রুতই ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের পদ পূরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি উব্ধুর্তন কর্তৃপক্ষকে অবগতও করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই জেলার শিক্ষকের শূন্যপদগুলো পূরণ হয়ে যাবে।
কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।