ঘাটাইলের ছাত্র সৈকতকে হত্যা করে নদীতে ফেলেছিঃ অপহরনকারী স্বীকারোক্তি
এম.এস.এস.সৌরভ, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে অপহৃত স্কুল ছাত্র সৈকতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার লাশ ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামী আরিফ রব্বানী। বাবার সম্পত্তির ভাগই কাল হল সৈকতের। গ্রেপ্তারের পর টাঙ্গাইলের
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্যোস্ট আমিনুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় তিনি এই জবানবন্দি দেন।
আদালতে দেয়া জবানবন্দি থেকে জানা যায় , আরিফ রব্বানী ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার হরিপুর গ্রামের আঃ আজিজের ছেলে। তিন বছর আগে সে দিন মজুরের কাজ করতে ঘাটাইল উপজেলার চানতারা গ্রামের হানিফ উদ্দিনের বাড়িতে আসে তিন দিন কাজ করার পর চলে যায়। পরের বছর আবার সে কাজ করতে আসে। সেই সুবাদে পরিবারটির সাথে আরিফ রব্বানীর সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।কিছু দিনের মধ্যে হানিফ উদ্দিনের স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে সাগরের সাথেও আরিফ রব্বানীর সখ্যতা গড়ে উঠে। হানিফ উদ্দিনের দুই মেয়ে তানিয়া(২০)ও সেতু (১৩)। তানিয় পড়ালেখা আগেই বাদ দিয়েছে আর সেতু স্থানীয় স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। তানিয়ার সাথে আরিফ রব্বানী এবং সাগরের সাথে সেতুর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সাগর সেতুকে বিয়ে করবে বলে জানায়।
হানিফ উদ্দিন আরিফকে তার মেয়ে তানিয়ার বিয়ের প্রস্তাব দিলে আরিফ প্রথমে তা প্রত্যাখান করে পরে রাজি হয়। সাগর জানায় তাদের বিয়ের পথে বড় বাধা ছিল সৈকত কারণ সে থাকলে সম্পত্তির ভাগ বেশী পাওয়া যাবে না। সেই মোতাবেক সৈকত অপহরণ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে আরিফ চানতার গ্রামে আসে এবং এই দিনই সৈকতকে অপহরনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ১৮ মে সৈকতকে দুজন মিলে চানতারা থেকে অপহরণ করে ঘাটাইল নিয়ে আসে। ঘাটাইল থেকে প্রান্তিক সার্ভিস যোগে তারা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় যায়। মুক্তাগাছায় পৌছে তারা রাজবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ায়। পরে তারা সৈকতকে নিয়ে ময়মনসিংহের বেগুনবাড়ি এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদের স্লুইসগেইট এলাকায় বেড়াতে যায়। সেখানে সন্ধ্যায় এলাকাটি জনমানব শূন্য হয়ে পড়লে সাগর সৈকতের গলা চেপে ধরে আর মুখ চেপে ধরে আরিফ।সৈকতের মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা দুজনেই সৈকতের লাশ বস্তাবন্ধি করে এাবং ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে দেয়।
উল্লেখ্য যে, আসাদুর রহমান সৈকত টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের চানতারা উত্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শেণির ছাত্র। গত ১৮ মে বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর সৈকতের বাবা স্কুল শিক্ষক মোঃ হানিফ উদ্দিন ২১ মে ঘাটাইল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পরে পুলিশ মামলার প্রধান আসামী আরিফ রব্বানীকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা হরিপুর গ্রামের তার বোনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। অপর আসামী সাগরকে আটক করা হয় ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে।এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার ওসি মোঃ মহি উদ্দিন পিপিএম জানান,ঘটনায় জরিত থাকার অভিযোগে আরিফ রব্বানী ও সাগরকে আটক করা হয়েছে এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ায় তাদেরকে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
- কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।