অবৈধ কারখানার বর্জ্য দুষণে দুর্বিসহ জন জীবন উর্বর শক্তি নেই আর ইরি ধান ও পিয়াজের ক্ষেতে
সৈয়দ আকতারুজ্জামান রুমী, পাবনা প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠা অবৈধ কারখানার বর্জ্য দুষণে জন জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। এছাড়া একদিকে কারখানটির ক্যামিকেল মিশ্রিত বিষাক্ত পানিতে কৃষি আবাদি জমির উর্বরতা নষ্ট করে চলেছ।
আরেকদিকে নানা রঙের ক্যামিকেল মিশ্রিত জলাবদ্ধ পানির পচন গন্ধ ছড়াবার পাশাপাশি তা আবার মশা মাছির ভাগারে পরিণত হয়েছে। ফলে বাতাসে বিষের গন্ধ নিয়ে বসবাস করছেন পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কাঁচুরী গ্রামের মানুষেরা।
স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি জায়গায় সরকারি অনুমতি ছাড়াই মামা – ভাগ্নে প্রসেজিং এন্ড ডাইং এর বর্জ্য দুষণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে কাঁচুরী গ্রামের ভুক্তভোগী জনসাধারণ প্রতিকার পাবার আশায় গত ২১ মার্চ পাবনা জেলা প্রশাসক ও সুজানগর উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে একই গ্রামের মৃত আব্দুস ছামাদ খানের ছেলে শাহীন হোসেন খান, স্থানীয় জনগণের নিষেধ না মেনে পেশী শক্তির প্রভাব খাটিয়ে আবাসিক এলাকায় ও সরকারি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় সরকারের বিনা অনুমতি তে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ভাগ্নে প্রসেসিং এন্ড ডাইং ওই একই ব্যক্তি দুটি কারখানা পরিচালনা করে আসছে। সুতা প্রসেজিং এর দুটি কারখানা। যদিও দুটি কারখানার ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। অপরটি মাছ চাষের নামে লিজ গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গার উপরে কারখানা গড়ে তুলা হয়েছে। কারখানা দুটি কাঁচুরী গ্রামে গড়ে উঠার পর থেকে কারখানার ক্যামিকেল বর্জ্য পদার্থের সাথে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়ালে এবং এলাকায় তা নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদেরই ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হয় এমন অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি কারখানা মালিক পক্ষ থেকে বাড়ি উচ্ছেদ করে অন্যত্র চলে যাবার হুমকি ও দেয়ার রেওয়াজ রয়েছে। যদিও আবাসিক এলাকায় অবৈধ কারখানা দুটির প্রভাবে বহিরাগত ব্যক্তিদের অবাধ যাতায়াতে স্থানীয় নারীরা হয় প্রায় ইভটিজিং এর শিকার।
এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শামীম হোসেন বলেন, পরিবেশ দুষণ হচ্ছে এটা আমিও জানি, আমার কাছে এলাকার মানুষ এ নিয়ে বহুবার বাদি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে,কিন্তু আমি তাদের বলেছি আপনারা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন কারণ আমার ক্ষমতা সীমিত।
স্থানীয় ভুক্তভোগী আব্দুল লতিফ খান বলেন, কারখানার বিষাক্ত ক্যামিকেলের গন্ধে বাড়িতে বসবাস করা দায়। রাস্তাঘাটে চলাচল করাও অসুবিধে, সর্বপরি মশার উপদ্রব। আমি মনে করি মিলটি প্রশাসনের সহায়তায় অতি জরুরি অপসারণ করা দরকার।
স্থানীয় কৃষক বিল্লাল সেখ বলেন, শাহীন হোসেন এর ক্যামিকেলের বিষাক্ত পানি আমার ইরি ধানের ক্ষেতে ঢুকে পড়ে। ধীরে ধীরে আমার ক্ষেতের ঊর্বরতা শক্তি হারিয়ে যায়। বর্তমানে ক্ষেতে আর কোন ফসল জন্মাতে পারি না। একই অবস্থা বিরাজ করছে পাশের একটি পিয়াজের ক্ষেতে। কারখানাটি অপসারণ না করা গেলে ধীরে ধীরে বহু ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে উর্বর ক্ষমতা অচিরেই।
শাহীন হোসেন খান এর ক্যামিকেলের বিষাক্ত পানির পচন গন্ধ ও মশার ভাগার সর্ম্পকে স্থানীয় ডালিয়া ও হাসনা নামের বয়স্ক বৃদ্ধা বলেন,রান্নার সময়,শোবার সময়,গরম ভাত খাবার সময় এমনকি ঘুমের ভেতর, এভাবেই ২৪ ঘন্টা জুড়ে মনে হয় ক্যামিকেল খাচ্ছি। এ ভাবে কি বেঁচে থাকা যায়। দেখারও কি কেউ নেই!