আল্লাহকে নিয়ে একবেলা চিন্তা করা বেহেতের
আল্লাহকে নিয়ে একবেলা চিন্তা করা বেহেতের
ডা. আওলাদ হোসেন
প্রচন্ড গরম, তাপদাহ সূর্যের প্রখর কিরণে সব জ্বলে পুড়ে ছার-খার হয়ে যাচ্ছে। গনগনে আগুন, এরই মধ্যে কৃষকেরা মাঠে-ঘাটে কাজ করে থাকে। প্রভাতের পূর্বেই প্রকৃতির যে পরিবেশ ও সৌন্দর্য উপভোগ ঘুম কাতুরে মানুষদের জন্য তা দৃষ্টিনন্দন না হওয়ারই কথা। তারপর মধ্যগগনে সূর্য যখন তাপ বিকীরণ করতে থাকে তখন ভাবুকেরা একটু ভাবতে পারেন। সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য শহর ছেড়ে একটু দূরে কোথাও নির্জন স্থানে একাকী মনের আনন্দে হেটে বেড়ানো ইত্যাদি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই যে সাজানো গুছানো পৃথিবী এর স্রষ্টাকে দেখতে পাই না কথাটির অর্থ হচ্ছে আল¬াহকে দেখার মত সমর্থন সম্পন্ন ক্ষেত্র প্রস্তত না হলে আল্লাহ্কে দেখা যায় না চিরন্তন সত্য। ফলে মানুষ ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়াচ্ছে যেমন একটি ডাইয়া সারাক্ষন দ্রুত ঘুরছে এদিক ওদিক অন্য কোন কাজ নেই রাত্রে শুধু কোন এক গর্তে ঢুকে পড়বে, স্রষ্টা তার মাথায় আর কিছু দেননি। সাপ,ব্যাং, বনে জঙ্গলে পশু পাখীর একই অবস্থা। উত্তাল সমুদ্রও একসময় শান্ত হয়ে আসবে। দিনের কোন একসময় মন ভালো লাগলে আল্লাহ্কে নিয়ে একবেলা চিন্তা করা বেহতের কারণ। যে জ্ঞান আল্লাহ্পাক মানুষকে দিয়েছেন তাকে চিন্তা একটি শক্তি যা বানরের মত সারাক্ষণ লম্ফ ঝম্ভ করার মত কিছু নয়। কিন্তু এখন কে শোনে কার কথা। সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে কে কার ক্ষতি করবে, কে কাকে ধোঁকা দিবে, প্রতারণা করবে, কে কত মিথ্যা কথা ও অপকর্ম করবে, কার দোষ কার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে ইত্যাদি। ইদানিং কলামিষ্টরা লিখছে বিদেশীরা যদি বাংলার রাজনীতি,অর্থনীতি,ধর্মনীতিতে একক কর্তৃত্ব স্থাপনের জন্য প্রলোভন দিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষিতেরা বিভ্রান্ত হতে পারে, পথভ্রষ্ট হতে পারে, টাকায় মাথা বিক্রি করে দিতে পারে কিন্তু সাধারণ জনগণ বিভ্রান্ত হয় নাই হবেও না,ভোগা দেয়া অসম্ভব। বাঙালি জেগেছে পূর্ব পূরুষের চিন্তা ধারার কোন ব্যত্যয় ঘটেনি কিছু শিক্ষিত অপদার্থ ও নিরেটদের কারণে। তার খেসারত দিতে হচ্ছে মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর। আল্লাহ্ আবার হয়তো ১০০/১৫০ বৎসর পর পরীক্ষার সুযোগ দিবেন। এইখানে একটি কথা বলে রাখা ভাল ভুল যে কোন মানুষ করতে পারে সেটা শয়তানের percentage এবং যে কোন মহৎ হৃদয় ঠ্যাংগাতায় দিতে পারে গোটা জাতি সহ, আল-কুরআনে আল্লাহ্পাক এই উদাহরণই বেশি টেনেছেন। এইখানে আল্লাহ্কে নিয়ে অপর একটি বিষয় হচ্ছে কখন কোন জাতিকে কখন কিভাবে জাত করবেন তা আল্লাহ্র ওলীও বলতে পারবেন না। কারণ এই কাজটির দায়িত্ব কাউকে দেননি। বরং বলা হয়েছে আলায় ছাল্লাহু বি আহ্কামিল হাকেমীন। এইখানেই আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে একা একাই আল্লাহ্র চিন্তা করতে হবে তাতে কোন বাধা নেই, পয়সা দিতে হবে না, হুজুরের শরনাপন্ন হতে হবে না। রাব্বানা মা খালাকতা হাযা বাতিলা। তবে মাদরাসার শিক্ষার সংগে সাধারণ শিক্ষার সাংঘর্ষিক কিছু দেখি না। আল্লাহকে পাওয়া মূল থেকে বিছিন্ন হওয়ায় দূর্বল ঈমানদের দ্বারা যেমন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা এবং মুনাফিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রথমেই কুরআনের শিক্ষা থেকে সরে যাওয়া, যে হুকুম দেয়া আছে তা পালন না করা, বরং তার উল্টাটা করা। ফলে আল্লাহ্র গযবে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। অতত্রব আল্লাহ্কে স্মরণ করতে হবে।
১। আল্লাহ্ অদৃশ্য (গায়েব)। ২। বিরাট পুস্তকে বিস্তারিত সব উল্লেখ আছে। ৩। আল্লাহ্র সৃষ্টি সমন্ধে অনেক কিছু ভাববার বিষয় আছে। ৪। আল্লাহ্র হুকুম ছাড়া কিছুই হয় না, অথচ মানুষকে ড়ঢ়ঃরড়হ বা পযড়রপব এর সুযোগ দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় মুসলমানদের দিন দিন অধঃপতন নিজেরাই ডেকে আনছে। পত্রিকার পাতায় কি পরিমাণ অপরাধ ঘটছে আর এই দিকে মদ, গাজা, ভাং ধরিয়ে দিয়ে জাতিকে ধ্বংসের সুযোগ নিয়ে অধিকারহীন করে রাখার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তাতে বেলা ডুবতে খুব একটা সময় লাগবে না। আল্লাহ্র নেয়ামতকে রক্ষা করার জন্য, হালাল করার জন্য, হাজারো অসত্যের মাঝে একটি সত্য তুলে ধরার জন্য হুজুগে বাঙালি কথাটি ঠিকই আছে এবং ঢাকার কলামিস্টরা বলে থাকে ১৬ কোটি বাঙালি সহজেই এক জোট হতে পারে এবং অসাধ্য সাধন করতে পারে কিন্তু সব গর্তই সমান না, সব দিনই সমান না। বাঙালিকে এতটা বিশ্বাস করা ঠিক না, এখানে না না মুনীর নানা মত ভেঙ্গে যাবার মত সমূহ সম্ভাবনা আছে কারণ কূটচাল, কূটনীতির সংগে যে বিদ্যা বুদ্ধির প্রয়োজন অর্থ এবং প্রতিরক্ষার একটি লিমিট আছে, এটাই উন্নত আর অনুন্নত দেশের বৈশিষ্ট্য। তবে সাবধানের মার নেই। হিসাব করে চলতে হবে, নিজের বুুঝ নিজেকে বুঝতে হবে। একটি জাতি হঠাৎ যদি খাদে পড়ে যায় ১০০/২০০ বৎসরের জন্য পস্তাতে হবে, কেউ উদ্ধার করে দেবে না। এক আল্লাহ্র চিন্তা আমাদেরকেই করতে হবে। হুজুগে মাতাল কিন্তু আল্লাহ্র প্রতিশোধ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর যার বাস্তব উদাহরণ অনেক। এখন প্রশ্ন করতে পারেন আল্লাহ্কে নিয়ে কি চিন্তা করব? প্রশ্নটি জটিল ও কঠিন। চরিত্রই যেখানে ধ্বংস্ব হয়ে যাচ্ছে পরকিয়ার বলি যখন অতিমাত্রায় ধর্ষণ ও খুন যখন ছেয়ে গেছে তখন ঠগ বাছতে গাঁ উজার। ধর্ম সভার চাইতে যাত্রা থিয়েটার অনেক সহজ। যাদের গলার সুর ভাল তাদের গানের কদর আছে। আল কুরআন পাঠকারী অনেকের সুরেলা কন্ঠে তিলাওয়াত শুনে মুগ্ধ হতে হয় তবে চক্ষু গড়িয়ে পানি আসে না, এখানে ও স্রষ্টার একটি নিদর্শন সাক্ষাত লাভের তো কোন প্রশ্নই উঠে না, হয় নাই , হবেও না। আল্লাহ সম্বন্ধে সুচারু পরিমাণ ধারণাও কেউ করতে পারে নাই, তবে আল্লাহর যে ক্ষমতা সে সম্বন্ধে পূর্ণ জ্ঞান মানুষকে দেয়া হয়েছে অর্থাৎ ওয়ামা অুতিতুম মিনাল ইলমে ইল্লা কালিলা অর্থাৎ মানুষকে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানসহ মোট জ্ঞান সূচাগ্র পরিমাণ ও না এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই । আকাশের তারা গুনতেই বিজ্ঞানীদের কাম সারা, কিসব বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে যার পরিসংখান ইন্টারনেট থাকলে দেখতে পারেন, এখানে উল্লেখ করা সম্ভব হলো না। বন্ধুগণ প্রত্যেক জাতির কাছেই মূল্যবান বই লেখকেরা লিখে রেখে অমর হয়ে আছে। বই এর নাম উল্লেখ করলাম না কিন্তু যারা লিখেছেন তারা পরিশ্রম করেছেন, তাদের জীবন ধন্য। Hons of Dilemma এর গল্পের মতো ও don’t know মানে জানে না আর যায় কোথায়? বাঙালি বড় রসিক জাতি এবং পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ শুধু গরবের ধন গরীব, পল্লীর অসহায় জনতা রসিকতার গল্প অন্য কোন দিন অন্য কোনখানে হবে এবং তার উপজীব্য বিষয় হবে বাঙালির হাসির গল্প বইটি। প্রশ্ন রয়েই গেল আল্লাহ্কে নিয়ে কি চিন্তা করবো, কখন করবো, কেন করবো? উত্তর একটাই যদি আল্লাহকে পাই। “তুমি ইচ্ছে করলেই পার না যদি আল্লাহ্ ইচ্ছে না করেন।” এখন প্রশ্ন হচ্ছে পরকালে সবই পাওয়া যাবে কিন্তু বিশ্বাস হতে চাযনা অথচ পৃথিবীতে সবই পাওয়া গেল এল কোথা হতে? পরকালে আসবে সেখান থেকেই। কিন্তু কেউ তা মানছে না। ধন সম্পদ দিয়ে না দিয়ে পরীক্ষা করে থাকনে। মুসলমানদের এখন আর অনুসরন করে না, বরং মুসলমানেরাই অন্যের অনুসরণ করে থাকে। শোনা যায় ধোঁকায় এবং লোভে পড়ে ইসরাইল ও কাশ্মীর হাতছাড়া হয়ে গেছে। আমাদের একদল বুদ্ধিজীবী অর্থের লোভে অনেক কিছুই করছে কিন্তু নিজ জাতির ক্ষতি করে কয়েকজন কিন্তু ভোগে গোটা জাতি। অনেকে বুঝে, তখন দেরী হয়ে গেছে এবং হাতছাড়া হয়ে গেছে সহায় সম্পদ। মসজিদে গেলে এদের দেখা মেলে। অতএব আগেই সাবধান হতে হবে আল্লাহর পরীক্ষা বড় কঠিন। কেন শাস্তি নামলো তা নিজেদের মধ্যে পাওয়া যায় এখানে আল্লাহ নিরপেক্ষ থেকেছেন। দেশ ও জাতির মঙ্গল চিন্তা ফরজে আইন, ফরজে কেফায়া যারা দায়িত্ব প্রাপ্ত। নিভৃতে দিনান্তে আল্লাহর চিন্তা করা বেহতের তবে একই প্রশ্ন বার বার জেগে ওঠে ইসলামের ইতিহাস আর ইসলাম সম্পূর্ণ আলাদা, আল্লাহ যেমন আলাদা সমগ্র সৃষ্টিকুল থেকে অদৃশ্য, এসব বিষয় বুঝতে হলে আল-কুরআন অর্থসহ বুঝতে হবে।