ঈমান রক্ষা করাই মূল বিষয়
ঈমান রক্ষা করাই মূল বিষয়
-আওলাদ হোসেন
১৪০০বৎসর পূর্বে মুহাম্মদ(দঃ) যখন কোরেশদের বলেন যে তোমরা আমার এক হাতে সূর্য এবং অপর হাতে চন্দ্র এনে দেয় তবুও আমি সত্য প্রচারে বিরত হব না। তারপর ইসলামের ইতিহাস অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে এখন একবিংশ শতকের প্রথম ভাগে অবস্থান করছে। মুসলমানের অস্তিত্ব মুঘল আমলের মত শেষ অংক মঞ্চায়িত হচ্ছে। কিন্তু ১৬ কোটি বাঙালি এল কোথা থেকে ভেবে অবাক হই সারা ভারতে মুসলমান ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে গেছে, সকল অপকর্মের দোসর অশিক্ষিত মুসলমানদের কথা ভাবাই যায় না। আমেরিকা, ইউরোপ,চীন, জাপান সবাই পৃথিবীর বিশেষ অঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত,দাপট, সৌর শক্তি, পরমাণু শক্তি, ১০০% শিক্ষিত অশিক্ষিত সমান। তবে সব রাষ্ট্রই আমাদের বন্ধু কিন্তু শক্তির তুলনায় আমরা ম্লেচ্ছ, অপাংতেয়, রোচে না। উদ্ভট মল্ল যুদ্ধে অবিরত কসরৎ করে যাচ্ছি। ভদ্র ভাষায় বলা হয় মুসলিম। কিছু দিন আগেও ভাল লেখক, গায়ক কবি দার্শনিক, খেলোয়ার সবই ছিল। পৃথিবীর ট্রেন ফেল করে এখন চাঁদের ট্রেন ধরার অপেক্ষায় আছি। বিদেশীরা প্রচুর সাহায্য দেয়। সুচতুর শেয়ালের মত আমরা নিজের পরিচয় ভুলে ছোট্ট শিশু যেমন মা কে মামী বলতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। সেই শৌর্য বীর্য কোথায় গেল? পৃথিবীর সর্বত্র বিরাজিত কিন্তু কোথাও কোন ঠাঁই নাই। কোন রকমে বেঁচে আছে। এখন আর ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম কর কথাটি কতিপয় আলেম ওলামা বলে থাকেন বটে কিন্তু সামর্থহীন, নিবীর্য, কঙ্কালসার। এনজিওরা এখন সরকারকে পরিচালনা করে, বুদ্ধি পরামর্শ টাকা পয়সা দেয় কিন্তু দেশের ও দশের মঙ্গল হয় না কেন? জনগণ উপকৃত হয় না কেন? পাট, চামড়া, গার্মেন্টস ইত্যাদি সেক্টরে মন্দাভাব কেন? গার্মেন্টস কর্মীরা ধর্ষিত হয় কেন? ব্যক্তিগত মালিকানায় Multi national Company আখের গুছিয়ে নিচ্ছে, সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরা টাকার পাহাড় গড়ে কিভাবে, দুর্নীতি পদে পদে ছেয়ে যাচ্ছে। বর্ডারে মাঝে মাঝেই মানুষ মরে, রোড এক্সিডেন্ট আছেই, আত্মহত্যা, নদীতে নৌকাডুবি ইত্যাদি পত্রিকা বিক্রির মোক্ষম অস্ত্র। প্রশ্ন হচ্ছে মুসলিম দেশগুলিতে মসজিদে স্থান সংকুলান হয় না। আরব দেশগুলি অভিশপ্ত জীবন যাপন করছে। তেল সম্পদ দিয়ে যা করছে তা বলাই বাহুল্য। যার যার দেশের প্রতি তার তার দরদ থাকাই স্বাভাবিক। আমাদের দেশের অবস্থান সবাই আমার চাইতে ভালো জানেন তাই আমি এই বয়সে টাকা পয়সার অভাবে বিদেশে চিকিৎসা করাতে পারি না। সেক্ষেত্রে ঢাকার কলামিস্টদের চামচাগিরি করে খুব একটা সুবিধা হবে না। কলাম লেখার প্রশ্নই উঠে না। যেহেতু রাষ্ট্র যা করবে ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র হিসেবে আল্লাহকে কেন চাইবেন সে সম্বন্ধে ২/৪ কথা লিখলে যারা এখনও আল্লাহর অলৌকিক ক্ষমতার আশা রাখেন তারা হয়তো কিছু একটা চিন্তা ভাবনা করেন। যখন মানুষের হাতে কোন ক্ষমতা না থাকে তখন ঈমান রক্ষা করা যার যার মত ফরজ। কোন অবস্থায় কি ব্যবস্থা নিতে হবে তা আল-কুরআনে লেখা আছে-(১) কিতাবটি স্বয়ং আল্লাহ প্রেরণ করেছেন- আমরা বিশ্বাস করি বা না করি। (২) আল-কুরআন থেকে সরে পড়াই মানুষের কাজ কারণ আদেশ নির্দেশ পালন করা রাজার হুকুমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। (৩) আল্লাহ পাক যদি চাইতেন তবে সব মানুষ মুসলমান হয়ে যেত অথবা সারাক্ষণ মসজিদে অবস্থান করতো।(৪) মানুষ যা চায় আল্লাহ তাকে তাই দিয়ে দেন কিন্তু তার ভাল মন্দ আল্লাহ বহণ করেন না। এখানে বিরাট ব্যাখ্যা দেখা দিতে পারে। (৫) মানুষ চুপ মেরে গেল কেন? এখানে আল্লাহর ভূমিকা কি? উত্তরটি কি হবে? মানুষ দেখে শিখে। ন্যায় কথা বলা যাবে না। সত্য কথা বলা যাবে না ইত্যাদি। অর্থাৎ ন্যায় কথা কে বলবে বা সত্য কথা কোনটি এবং কে বলবে? সবাই কাজ করে জনগণের নামে, জনগণের জন্য। এই জনগণ কারা, তাদের ক্ষমতা কতটুকু। তারা শিক্ষিত না অশিক্ষিত? একটা দেশের জনসম্পদ বলতে কি বুঝায় এবং তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কি? এ পর্যন্ত এমন একটি কথাও লিখিনি যাতে পক্ষ কোন কিছু জিজ্ঞাসা করবে। কারণ এখন আর কোন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে না। প্রথমেই প্রশ্ন উঠবে কে কোন পন্থী। মসজিদে বর্তমানে সবাই সরকার পন্থী। বেতন ভাতা ইত্যাদি তদারকি করার জন্য আলেম হওয়া কোন শর্ত না। ধর্ম সভা ঠিক একইভাবে কুক্ষিগত করা হয়েছে Nationalised.
কোটা পূরণের যুগ-মুসলমানদের পৃথিবী জোড়া রাজত্ব করার যুগ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এখন কোটা পূরনের যুগ শুরু হয়েছে। আমাদের অনেকেই পরকাল বিশ্বাস করে না, পরকালের প্রাপ্তিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করে থাকে অথবা ব্যঙ্গ করে থাকে। পৃথিবী সৃষ্টিতে যেখানে এক চুল পরিমান ভুল ও হলো না পরকাল যে আরও মনোমুগ্ধকর হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। অনেকেই পরকালকে বাদ দিয়ে ইহকালকেই সর্বস্ব প্রাপ্তির স্থান মনে করতে পারেন কিন্তু যারা অন্যয়ভাবে ক্ষতিগৃস্ত হয়ে পরকালে প্রাপ্তির আশায় অপেক্ষা করছেন তাদের জন্য কোটা পূরণনে কারও কোন আপত্তি থাকার কথা না। এব্যাপারে আল্লাহপাক নিজ হস্তে কিছু কোটার ব্যবস্থা করেছেন, যেমন আত্ম হত্যা-ধর্ষনের কারণে আত্মহত্যা, মজলুমের প্রতি দান ইহকালে যদি কেউ না পেয়ে থাকেন পরকালে বিশ্বাস থাকলে তাকে দেয়া হবে। পৃথিবীতে ধর্ম প্রচারের জন্য আল্লাহর আদেশে প্রতিটি প্রান্তরে মুসলমানদের ঘরের বের হতে নির্দেশ দিয়েছেন। যারা আদেশ পালন করেছেন বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছেন এবং এখন সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে অথবা জীবন হারাচ্ছেন, জলুম নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন তারা বিচারের দিন অবশ্যই এই কোটার অধিকারএউ হবেন অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি আল্লাহর রাস্তায় অবস্থান করেছিলেন অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। অর্থাৎ মাগীবাজী করেন নাই, হালাল হারাম বেছে চলেছেন, মদ, জুয়া, ভাং ইত্যাদি গ্রহণ করেন নাই। পৃথিবীর প্রত্যেক অঞ্চলেই মুসলমানদের আবাদ ছিল, প্রয়োজন ছিল। পৃথিবী বদলে গেছে, মুসলমাানদের প্রতি নির্যাতন শুরু হয়েছে। কোটার বিচারে এরাই অগ্রগণ্য হবেন এবং এক নম্বর বেহেস্ত পেয়ে যাবেন। মুসলমানদের নামে কিছু অপবাদ আছে জুলাম নির্যাতনকারী হিসেবে এবং ঘৃণিত হচ্ছেন। বর্বর, ম্লেচ্ছ, মাগীবাজি ইদ্যাদি! কিন্তু এই শতাব্দিতে যারা নিগ্রীহিত হচ্ছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর মত সভ্য জাতিদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু মানবতাবাদী সংগঠন বা ব্যক্তি পর্যায়ে আছেন যারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য মালালা বা তসলীমা তাদের মধ্যে অন্যতম এরামুসলমানদের ঘৃনীত বস্তু বলে প্রতিবাদে সোচ্ছার হন এবং ক্ষেত্র বিশেষে নোবেল প্রাইজ পান। বর্ডারে আমাদের লোকদের হত্যা করা হয় উজানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করা হয়, প্রতিরোধের প্রশ্নই উঠে না, বৃহৎ বটবৃক্ষের নীচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গাছড়া সকলের অজান্তে বটগাছে বেড়ে উঠে বটে কিন্তু মীরজাফরদের সংখ্যা দিন দিন উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় কোন ভাবেই নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। আল্লাহর কোটায় বিশ্বাস করতে হবে, ঈমান ঠিক রাখতে হবে ভয় পেয়ে ঈমান হারালে আল্লাহর গজব শুরু হলে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না, ছালাও যাবে মালও যাবে।