একুশে পদক পাচ্ছেন পাবনার কবি ওমর আলী
দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৭ বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক-২০১৭ দেওয়া হচ্ছে।
রোববার রাতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবারের পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে একুশে পদক প্রদান করবেন।
এবারে অন্যান্যদের মধ্যে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন পাবনার কবি ওমর আলী (ভাষা ও সাহিত্য-মরণোত্তর)। ষাটের দশকের কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন কবি ওমর আলী। তাঁর লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ এদেশে শ্যামল রঙ রমণীর সুনাম শুনেছি প্রকাশিত হয় ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে।
২০১৭ সালের যে ১৭ জন একুশে পদক পাচ্ছেন, তাঁরা হলেন : ভাষাসংগ্রামী অধ্যাপক ড. শরিফা খাতুন (ভাষা আন্দোলন), সুষমা দাস (সঙ্গীত), জুলহাস উদ্দিন আহমেদ (সঙ্গীত), ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম (সঙ্গীত), তানভীর মোকাম্মেল (চলচ্চিত্র), সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ (ভাস্কর্য), সারা যাকের (নাটক), আবুল মোমেন ও স্বদেশ রায় (সাংবাদিকতা), সৈয়দ আকরম হোসেন (গবেষণা), প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন (শিক্ষা), ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি), অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান (সমাজসেবা), কবি ওমর আলী (ভাষা ও সাহিত্য-মরণোত্তর), সুকুমার বড়ূয়া (ভাষা ও সাহিত্য), শামীম আরা নীপা (নৃত্য) ও রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ সেলিম (সঙ্গীত)।
এর আগে ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছিলেন পাবনার কবি ওমর আলী।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম কলেজে ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে কবি ওমর আলী কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে অধ্যাপক হিসেবে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
উপন্যাস ও কবিতা মিলিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩০।
তিনি বন্দে আলী মিয়া পদক, আলাওল পদক, আবুল মনসুর আহমেদ পদকসহ রাজশাহী বিভাগীয় গুণীজন সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি বাংলা একাডেমির ফেলো ছিলেন।
এছাড়াও তার প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে “অরণ্যে একটি লোক” (১৯৬৬), “আত্মার দিকে” (১৯৬৭), “সোনালি বিকেল” (১৯৬৫), “নদী””(১৯৬৯), “নরকে বা স্বর্গে” (১৯৭৫), “বিয়েতে অনিচ্ছুক একজন” (১৯৭৫), “প্রস্তর যুগ তাম্র যুগ” (১৯৭৪), “স্থায়ী দুর্ভিক্ষ সম্ভাব্য প্লাবন” (১৯৭৫), “তেমাথার শেষে নদী” (১৯৭৪), “নিঃশব্দ বাড়ি” (১৯৭৩), “কিছুদিন” (১৯৮০), “ডাকছে সংসার” (১৯৮৫), “যে তুমি আড়ালে” (১৯৮৭), “ফুল পাখিদের দেশ” (১৯৮৩), “ফেরার সময়” (১৩৯৬), “স্বদেশে ফিরছি” (১৯৭৯), “একটি গোলাপ” ১৯৬৮, “লুবনা বেগম” (১৯৯৩), “প্রসারিত করতল” (১৯৯২), “ছবি” (১৯৯০), “শুধু তোমাকে ভালো লাগে” (১৯৯৪), “তোমাকে দেখলেই” (১৯৯৫), “ভালোবাসার দিকে” (১৯৯১), “এখনো তাকিয়ে আছি” (১৯৮৭), “ভালোবাসার প্রদীপ” (১৯৯৬), “হৃদয় ছুঁয়ে আছে ঝড়” (১৯৯৮), “গ্রামে ফিরে যাই” (১৯৯৮), “আমার ভেতরে খুব ভাঙচুর হচ্ছে” (২০০১), “শ্রেষ্ঠ কবিতা” (২০০২)। তার লেখা উপন্যাস হচ্ছে “কুতুবপুরের হাসনা হেনা” (১৯৮২) এবং “খান ম্যানসনের মেয়ে” (১৯৬২)।
২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর পাবনা জেলার কোমরপুরে কবি’র নিজস্ব বাসভবনে ৭৬ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কবি।