এটাইকি রোজা?
এটাইকি রোজা?
ডা. আওলাদ হোসেন
এই রোজায় কোন কলাম লেখার ইচ্ছা আমার ছিলনা। কিন্তু রোববারের সংখ্যাটির জন্য ধন্যবাদ জানাতে লিখতে হলো। টাঙ্গাইল ৫ কপি আসে আমি তার নিয়মিত দীর্ঘদিনের গ্রাহক হয়তো মফস্বল বলে অখ্যাত, অজ্ঞাত। অনুরূপ kagoj24bd.com আমার লেখা হঠাৎ করেই নিয়মিত প্রকাশ করে বাধিত করেছেন লেখা লিখে শেষ দিয়েছি। কিন্তু টাঙ্গাইলের মানুষই আমার লেখার সঙ্গে পরিচিত নয়। কারণ আমি মূলত সাপ্তাহিক ইনতিজার পত্রিকার সঙ্গে জড়িত, সেহেতু মফস্বল থেকে উঠে আসা কোন লেখক সহজে পরিচিতি পায় বলে আমি বিস্বাস করি না।
পত্রিকাটি রাজনীতি এবং ক্রাইম রিপোর্ট বিবর্জিত। আমিও নীতিগতভাবে রাজনীতি ও ক্রাইম বিবর্জিত জীবন কাটিয়ে এখন হোমিও ডাক্তার এবং কলামিষ্ট। যাদের কলাম আমি পড়ে থাকি তারা দেশের রক্ষক, শ্রদ্ধা করি। তবে আমার লেখার সঙ্গে একটু পার্থক্য আছে। আমি মনে করি যদি লিখি, বা লেখার সুযোগ পাই তাহলে আমার দীর্ঘ ৪০ বৎসরের বাংলা আল কুরআন ইংরেজীসহ পাঠের যে সাধনা আধুনিক বাংলা সাহিত্যে জীবন দর্শন- নাম দিয়ে আমার একটি বই যার মূল উদ্দেশ্য ছিল, কুরআনের আয়াত বিশেষ করে স্রষ্টা ও সৃষ্টির পার্থক্য আল্লাহকে কেন দেখা যায় না, এবং মৃত্যুর পর মানুষ আবার ঘাসের মতো গজিয়ে উঠবে ইত্যাদি প্রচার করা।
এখানেও আমার স্বার্থকতা আমি বাংলায় ছাত্র হয়ে কুরআনের হাজার হাজার আয়াত তুলে ধরেছি তা অন্য কোন লেখক বাংলা সাহিত্যে রাজনীতিসহ তা তুলে ধরতে চিন্তাও করেন নাই। ধর্মীয় বড় বড় বই লিখেছেন বটে। বলতে পারেন এত বড় বড় কথা বটে। মানুষ যখন ১০০ এর মধ্যে ১০০% পেয়ে যায় তখন আর কিছু বাকি থাকেনা। ভারত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র তার সঙ্গে বাংলাদেশের কোন তুলনা নেই, কিন্তু তার পাশেই চীন যে আরও বৃহৎ রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হলো এখানেই সহজ সমীকরণ মিয়ানমার আরও জটিল করে দিল তা এই লেখার বিষয়বস্তু না। কিন্তু আমি বলতে পারি মেধার কোন বিকল্প নেই। কেউ কাউকে জ্ঞান দান করে কোনটি সত্য আর কোনটি মিথ্যা তা গ্রামের কৃষকও ভাল জানে আর নিজের শরীরে কেউ ঘা বনাতে চায় না। অন্যের শরীরে ঘা বানাতে ওস্তাদ। এই ওস্তাদদের পালায় পড়ে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেছে, ৪র্থ বিশ্ব যুদ্ধ ইতিহাসের বিবেচনায় অপেক্ষা করছে যা আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত যা সুন্নতাল্লাহ্ নামে পরিচিত। পৃথিবী দুইভাবে ঘুড়ে কেন Big Bang তা বলতে পারে না আর ডাক্তার না হয়েও ডাউইন মানুষকে লেজ ছাড়া বানর বানিয়ে যে কৃতিত্ব লাভ করেছে কিন্তু এ সবের উৎপত্তি মনগড়া ব্যাখ্যা দিলে নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরীনের মত লেখিকা মেয়েদের কোর্স এর মত পুরুষদের নিয়মিত স্রাব হয়না বলে খুব সম্ভব তার লেখায় দু:খ প্রকাশ করেছেন। মালালার পরিবর্তে তাকে কেন নোবেল দেয়া হলো না মালালার দেশের মহিলার আক্ষেপ করে থাকে আমরা মালালার চেয়ে বেশী কাজ করে থাকি। নোবেলের বোধ হয় এখানে একটা কিছু আছে। এখন রোববারের এই সংখ্যাটি আমার লেখার অনুপ্রেরনা কেন তার একটা যুৎসই উত্তর দিতেই হয়।
(১) ছোট বেলায় ৫৫ বৎসর পূর্বে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র নিয়ে তুমুল তর্ক হোত। টাঙ্গাইলের লোক হিসেবে ভাসানী কোন পন্থি এবং শুধু আন্দোলনেরই উদ্যোক্তা ইত্যাদি কথার পরেও মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে ফারাক্কা বাধের লংমার্চ তাকে অমর করে রেখেছে এবং এই রোববারে নদী নিয়ে লেখা আছে।
(২) নির্বাচনী জয় পরাজয়ে খুলনা মডেল এখানে যা লেখা আছে তা অনেক বড় আমার পক্ষে নকল করা সম্ভব না।
(৩) ব্যারিষ্টার তুরিন আফরোজ ষোল কলা পূর্ণ করেছেন বলেই এই লেখা।
(৪) চর দখলের প্রতিযোগিতা
(৫) হুমকির মুখে ডাকাতিয়া নদী
(৬) মন্তব্য যেখানে পানিই নেই, বাধের কারণে এখন চীন বা নেপাল থেকেই পানি সঙ্কট দেখা দিবে সেখানে আমরা চর দখল আর নদী সংস্কার নিয়ে যত গল্পই লিখিনা কেন গরীব সংসারে নুন আনতে পান্তা শেষ।
(৭) জাকির তালুকদার আমার মত মফস্বলের একজন খ্যাতিমান কথাকার।
(৮) বিস্তারিত পড়ে নিবেন। এসবই ইতিহাসে স্থান পাবে তবে ১০০ বৎসরের নীচে না। তখন হয়তো ৪র্থ মহাযুদ্ধ শেষ। কারও কোন অস্তিত্ব নেই সবই হারিয়ে গেছে। খুব কম সময় মনে হচ্ছে, কিন্তু মজলুমের ফরিয়াদ স্রষ্টা খুব অল্প সময়ের মধ্যে শুন থাকেন। এখন এইটাই কি রোজা কথাটির ব্যাখ্যা দিয়েই লেখাটি শেষ করব। গতানুগতিক মুসলমানরা নিজেদের আত্ম পরিচয় প্রকাশ করে। প্রথমেই সিন্ডিকেট লবন, তেল, পিঁয়াজ নিত্য পন্যের আমদানী বাড়িয়ে দেয়, ভেজাল মিস্রিত পন্য বাজারে ছাড়ে, রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে আম, জাম, কাঁঠাল লিচু, আনারস পাকায়, রোজাদারদের কষ্ট দেয় তাদের সহ সাধারণ মুসল্লীগণ রাতভর মসজিদে এবাদত বন্দেগী করে, রাজনীতিবিদরা একত্রিত হন, মুক্তির পথ খুঁজেন, সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেন, দান খয়রাত রীতিমত চলে, স্রষ্টা খুশি হন।
অদৃশ্য শক্তি আল্লাহকে দেখা যায় না, ক্ষুধার্ত পেটে রোজা রেখে যে অনুভূতিটুকু মনে জাগে যদি পবিত্র আত্মা আল্লাহকে দেখতে চায় তাহলে তা দেখতে পায় কারণ অদৃশ্য আল্লাহ ক্ষুধার্ত দেহ ও মনের সংগে মিশে যায়, তখন প্রশ্ন জাগে আমি ক্ষুধার্ত কিন্তু কেন? এই টাই কি রোজা?
এটাইকি আল্লাহকে দেখা এবং পাওয়া? আমরা প্রতিবৎসর এবাবেই হারাই, খুব চিন্তা করলে বিপদ হতে পারে। কিন্তু মানুষ কি আল্লাহ পাক কে না দেখেই ছেড়ে দেবে? নিশ্চইনা। রোজা এর জন্যেই এসেছে, দেখানো যাবে না, শুধু এইটুকুই অশ্রু সজল চক্ষে বলা যাবে দুপুরের এই রৌদ্রে অভুক্ত দেহে আমি আমার অদৃশ্যের অস্তিত্ত খুঁজে পেয়েছি, কথা হয় নাই, দেখা হয় নাই তবুও অদৃশ্যের পথ পাওয়া গেছে। কিন্তু পথটি না পেয়েই আমরা দাবী করি পথটি এক কালে ছিল এখন আসলেই নেই শুধু মানুষকে অন্যায়ভাবে শোষন করা সেটা গণতন্ত্র দিয়েই হোক আর সমাজতন্ত্র দিয়েই হোক। মানুষ সবাই সমান সৃষ্টি। রোজা তাই বলে, কারও মাফ নেই যত বড় পন্ডিতই হে।