ঘাটাইলে দেড় যুগেও এমপিওভুক্ত হয়নি পাঁচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

 

 

এম.এস.এস.সৌরভ, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

সরকারী স্বীকৃতিসহ সব ধরনের শর্ত পূরণ করলেও দীর্ঘ দেড় যুগেও এমপিওভুক্ত হয়নি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা, প্রয়োজনীয় শিক্ষক, শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা ও পাবলিক পরিক্ষায় শতভাগ পাশের রেকর্ড থাকলেও আজও এমপিও ভুক্ত হয়নি এ প্রতিষ্ঠান গুলো। আর এমপিও না হওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষক -কর্মচারী। তারা আশায় বুক বেধেঁ তীর্থের কাকের মত তাকিয়ে আছেন সরকারের দিকে, কবে হবে এমপিও ভুক্ত তাদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল পৌর সভাধীন এম.এ সাত্তার খান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়নি। বিদ্যালয়টি নিম্ন মাধ্যমিক হিসাবে ২০০১ সালে একাডেমিক স্বীকৃতি এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে পাঠদানের স্বীকৃতি পায় ২০০৯ সালে। ফলাফলে প্রতি বছর জে.এস.সি ও এস.এস.সিতে পাশ শতভাগ। আছে পাঠদানের অনুকূল পরিবেশ। বর্তমানে চার শতাধিক শিক্ষার্থী, ৯জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী নিয়ে বিদ্যালয়টিতে চলছে পাঠ্য কার্যক্রম। বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়াত মাহমুদ জানান, বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তি না হওয়ায় অনেকে শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন আবার অনেকে এমপিওভুক্তি হবেন এ আশায় বুক বেধেঁ আছেন।
এদিকে ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪৫ কি.মি দূরে দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিদ্দিক খালী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। আশে পাশে ৫/৭ কিঃমি মধ্যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে বিদ্যালয়টি। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র চন্দ্র দাস জানান, ২০০৫ সালে নিম্ন মাধ্যমিক হিসাবে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে ২০১০ সাল থেকে শিক্ষার্থীরা জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে আসছে এবং প্রতি বছর পাশের হার শতভাগ। অথচ আজও এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে ১০জন শিক্ষক-কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে ।
নদী বেষ্টিত চর এলাকায় ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হাট কয়ড়া পাবলিক একাডেমি । প্রায় এক একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির ৫ থেকে ৬ কি.মি এর আশে পাশে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। ২০০৯ সালে পাঠদানের একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে এলাকার ছেলে মেয়েদের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। একই করুন অবস্থায় রয়েছেন জামুরিয়া পাবলিক হাই স্কুল, যোগীহাটি খন্দকার নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম শামছুল হক জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ আছে। এলাকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তি জরুরী বলে আমি মনে করি।

ঘাটাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি খন্দকার তাহাজজদ হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে শিক্ষক-কর্মচারীরা বিনা পয়সায় এলাকার ছেলে মেয়েদের শিক্ষার আলো দিয়ে আসছেন। তাদের পরিবার পরিজনের মানবেতর জীবন যাপনের কথা চিন্তা করে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির দাবী জানান।


  • কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!