সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আসন্ন ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে একজন সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে আমার কিছু কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই-
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়ে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে আবাসিক ছাত্র হিসেবে পা রাখার সাথে সাথেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পতাকাতলে নিজেকে শামিল করি। বর্তমানে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগে অধ্যায়নরত আছি। ১/১১ মঈন-ফখরুদ্দিনের অগণতান্ত্রিক সরকার, বর্তমানের অবৈধ সরকার, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজপথরে সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১৭ টি রাজনৈতিক মামলার শিকার হয়েছি।
৫ই জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আহূত অবরোধ সফল করতে গিয়ে ২০১৫ সালের ৬ই জানুয়ারি তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দীকী নাজমুল ও তার গুন্ডা বাহিনী দ্বারা শাহবাগে হাতুড়ি হামলার শিকার হই। পরর্বতীতে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক সাজা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
প্রিয় সহযোদ্ধাবৃন্দ, আমার বাবা একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিগত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে বিদ্রোহ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আমার পরিবারের অন্য ভাইয়েরাও আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি চাইলে হয়তো বিসিএস দিয়ে সরকারী চাকুরী বা পরিবারের পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগ করে বড় নেতা অথবা জেল-জুলুমের জীবন বেছে না নিয়ে বিলাসিতার জীবন বেছে নিতে পারতাম । কিন্তু আওয়ামী আদর্শ আমাকে কখনো টানেনি। তাই বিশ্ববদ্যিালয়রে প্রথম র্বষ থকেইে ছাত্রদলের রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ বোধ করি। একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অনেক বেশি সুশৃঙ্খল, আধুনিক এবং মেধাবীদের সংগঠন।
আমার বিবেচেনায় মনে হয়েছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আর্দশই র্সবশ্রষ্ঠে। তাই সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি আমার পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে পদদলিত করে এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আর্দশকে বুকে ধারণ করে নেই। আমি জানতাম আমার এই পরিবারের কারনে নেতৃত্ব গ্রহণের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই শহীদ জিয়ার আদর্শকে ভালবেসে দল ও দেশের জন্য আজ অবধি কাজ করে যাচ্ছি।
আজ আমি আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে আমার বিবেক, বুদ্ধি ও আদর্শ বোধ থেকে আমি কি বাবার আদর্শের বিরুদ্ধে যেতে পারি না? যদি তাই না হতো তাহলে ১৯৭১ সালের পর থেকে আওয়ামী আদর্শের বাইরে আর কোন দল গড়ে উঠতো না। কিন্তু বিএনপি কেন গড়ে উঠেছে? কারণ হচ্ছে, এই মানুষগুলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ এবং বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রামকে লালন করে বলেই বিএনপি আজ সংখ্যাগরষ্ঠি মানুষের প্রিয় দল। বিএনপির এই আদর্শকে ধারণ করার কারনে ১০ টি বছর ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন আছি। এই বিএনপি, এই ছাত্রদলই আজ আমার পরিবার।
প্রিয় সহযোদ্ধা ও কাউন্সিলরবৃন্দ, আমার এই ত্যাগ, শ্রম ও মেধা আপনাদের বিবেকের উপর ছেড়ে দিলাম। আমার এই আদর্শ এবং রাজনৈতিক ত্যাগ আপনাদের একটি ভোট পাওয়ার যোগ্য মনে হলে আমাকে সভাপতি পদে ভোট দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আন্দোলনকে বেগবান করে, তাদের নেতৃত্বেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে অবদান রাখার সুযোগ দিবেন। আমি আমার জীবনের শেষ রক্তবন্দিু দিয়ে হলেও রাজপথে থেকে অতীতের মতো প্রমাণ করবো আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আর্দশের একজন প্রকৃত সৈনিক।
কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক বৃত্তি ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক।