কোটা সংস্কার আন্দোলন ও যুব সমাজ

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও যুব সমাজ
সিডনীর কথকতা-২৮
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ

আপাতত রাজপথে নয় তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহকে ব্যবহার করে আমাদের তরুণসমাজের একাংশ অগণিত স্ট্যাটাস দিয়ে অবিলম্বে (ঈদের আগেই) কোটা বাতিল করা হলো বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক ঘোষণাটি জারী করার আহ্বান জানিয়ে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। তা করা না হলে ঈদের পরে পুণরায় রাজপথে সক্রিয় জোরদার আন্দোলন শুরু করা হবে।

এই হুশিয়ারী উচ্চারণের সাথে সাথে আরও একটি বিভ্রান্তিকর কথাও স্ট্যাটাসগুলোতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে “চাকুরি নয়, বৈষম্যের অবসান চাই-সমান সুযোগ চাই।”

এ জাতীয় কথাবার্তায় যদিও কোটাপ্রথার সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উক্তি মোতাবেক প্রজ্ঞাপনের কথাই বলা হচ্ছে অর্থাৎ কোটাপ্রথা বাতিলের দাবিকেই পুণরায় সামনে আনা হচ্ছে।

ব্যাপারটা হলো “সাধারণ ছাত্রসমাজ” নামক সংগঠনের। এর সাংগঠনিক রুপ কিভাবে দেওয়া হয়েছে, কর্মকর্তারা কে কে, কার্যকরী কমিটিতে কাদের নাম আছে, জেলা-উপজেলাগুলিতেই বা এর সাংগঠনিক কাঠামো কীরূপ কিংবা কোন কোন জেলা-উপজেলায় এই সংগঠনের বিস্তার ঘটানো হয়েছে এবং সেগুলিতে কারাই বা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাও জনগণের কাছে অজানা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক এ আন্দোলন যখন দু’আড়াই মাস আগে তুঙ্গে ছিল তখন তার সমর্থনে অবশ্য ঢাকা শহরের বাদবাকী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্র-ছাত্রীরাও এগিয়ে এসেছিল। এ দৃশ্য টেলিভিশনের কল্যাণে সুদূর সিডনীতে বসেও দেখেছি। এখন যেহেতু আন্দোলনটা রাজপথে বা শিক্ষাঙ্গণে নেই তাই তা জানারও অবকাশ নেই।

তবে ফেসবুক খুললেই স্ট্যাটাসের অন্ত নেই। কতজন যে লাইক দিচ্ছে আর কতজন যে ‘শেয়ার’ করে তা ছড়িয়ে দিচ্ছে তার কোন সীমা-পরিসীমা নেই। তবে রমজানের ও গ্রীষ্মের দীর্ঘ সময় কাটাতে তরুণ-তরুণীরা অনেকে দিব্যি ঐ ‘লাইক’ ও ‘শেয়ার’ করে যাচ্ছে তাও বুঝতে অসুবিধা হয় না। তবে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণীরাই যে ঐ দাবির পক্ষে তাতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই।

তাই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ভাষায় প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাবে না যুব সমাজের যে অংশ এই ব্যাপারে মেতেছে তাদেরকেও সামগ্রিকভাবে তাদের দাবি সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে এবং বাস্তবানুগ সিদ্ধান্তে আসতে ও সেই অনুযায়ী দাবি দাওয়া পুণ নির্ধারণ করে আন্দোলন পরিচালনার পরামর্শ দিতে চাই একজন সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে। কেউ যেন এই চিন্তাধারার কোন প্রকার অপব্যাখ্যাা না করেন এবং তার দ্বারা পরিস্থিতির আরও ঘোলাটে করে না তোলেন। কারণ বিষয়টি একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

আন্দোলনের মূল লক্ষ্যটা কী? আসলে তা হলো দশের তরুণ-তরুনীদের বেকারত্ব দূরীকরণের নিশ্চয়তা অর্জন। কেউ খাবে, কেউ খাবে না তা নয়। সবাই যেন খেতে পায় তেমন একটা ব্যবস্থার নিশ্চয়তা। এটা অত্যন্ত সঠিক চিন্তাধারা যদি এই ভাবনা থেকেই প্রকৃত পক্ষে আন্দোলনটির উৎপত্তি ও ব্যাপ্তি ঘটে না।

অবশ্যই আমাদের কয়েকটি তথ্যও যতটুকু সম্ভব সঠিকভাবে জানতে হবে। যেমন দেশে মোট বেকার তরুণ-তরুণীর সংখ্যা কত? তাদের মধ্যে শিক্ষিত কতজন, অশিক্ষিত কতজন? শহুরে কতজন, গ্রামীন কতজন? এই তথ্য আমারও জানা নেই। বিদেশে আছি বলে সরকারি অথবা বেসরকারি নির্ভরযোগ্য কোন সূত্র থেকে তা সংগ্রহ করারও অবকাশ নেই।

দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি। অনুমান করি এই জনসংখ্যার মধ্যে মোট বেকারের সংখ্যা সম্ভবত দুই থেকে তিন কোটি। এর মধ্যে শিক্ষিত (¯œাতকোত্তর)-দের সংখ্যা অনুমান ৫ লক্ষ, যার বেশির ভাগই শহুরে। ¯œাতক বা অন্তত: মাধ্যমিক ও কারিগরী শিক্ষায় কতজন শিক্ষিত হতে পারে বেকারদের মধ্যে তা অনুমানেও আনতে পারছি না। তবে একটি কথা নিশ্চিন্তে বলা যায় যে দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত যুব-যুবতীর মধ্যে অন্তত: শতকরা ৬০%-ই বেকার।

এই অনুমান যদি মোটামুটি সত্যি হয় তাহলে দেখা দরকার যে ৪০ ভাগ চাকুরি পেয়েছে বা নানাক্ষেত্রে নিয়োগ পেয়েছে তার কতভাগ সরকারি, কতভাগ বেসরকারি নানা সেক্টরে নিয়োজিত। অবশ্যই ঐ ৪০ ভাগের সিকি অংশের বেশি সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত নয়। অর্থাৎ বেকার যুবক-যুবতীদের ১০ভাগ পদের ব্যবস্থা এ যাবত সরকারি খাত করতে পেরেছে যার মোট সংখ্যা কয়েক লাখ মাত্র।

এই পদের সর্বোচ্চ ৩০ভাগ মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তান-সন্ততিদের জন্যে, ১০ ভাগ নারী সমাজের জন্য, ১০ ভাগ অবহেলিত জেলাসমূহের জন্য, ৫ ভাগ “ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী”-র জন্য এবং ১ ভাগ শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আছে। কিন্তু যদি চাকরিরতদের তথ্য সংগ্রহ করা যায় তবে দেখা যাবে ঐ কোটাগুলি কোন বছরেই পূরণ করা হয়নি। অথবা তা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু নিয়োগ হয়েছে যারা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে কোটাবহির্ভূতদের মধ্য থেকেই। একটু ধীরস্থিরভাবে কয়েকটা রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সকলকে ভাবতে হবে আজকের তরুণ সমাজকে এবং জাতীয় নেতৃত্বে যাঁরা আছেন তাঁদেরকেও।

আন্দোলনকারীদের যেটা বিশেষ করে ভাবতে বলি তা হলো কোটা প্রথা পৃথিবীর সকল দেশেই কম বেশি আছে। সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির সন্তান সন্ততিদেরকে শিক্ষিত করে তুলতে না পারলে দেশের সামগ্রিক উন্নতি যে অপর কোন প্রকারেই সম্ভব নয় তা আমাদের দেশের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এবং সে শিক্ষা হতে হবে সুশিক্ষা, যুগোপযোগী, প্রতিযোগিতামূলক, উন্নত, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা যা বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত অতি অল্প ক্ষেত্রেই চালু হয়েছে। ফলে ঠিক সেই পরিমানেই দেশটি পিছিয়েও আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক যে সকল ছাত্রছাত্রীরা কোটা বাতিলের (অথবা সংস্কার) দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছে তারা যদি একটু ধীরস্থিরভাবে সারাদেশের দিকে তাকিয়ে দেখে তবে অবশ্যই তাদের চোখে পড়বে যে তাদের নিজেদেরই অনেক ভাই, বোন, আতœীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সেই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। আন্দোলনটি চলছে উচ্চ শিক্ষিতদের চাকরির দাবিতে। তাহলে বিপুল সংখ্যক স্বল্প ও অশিক্ষিত তরুণ-তরুণী কি বেকারই থেকে যাবে অনন্তকাল ধরে? তাদের জীবনে তো বিশ্ববিদ্যালয় আসেনি, আসেনি হল বা হোষ্টেল অর্থাৎ সংগঠিত জীবন থেকে তারা বঞ্চিত এবং সে কারণেই তারা কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না। তারা তো শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মুখের দিকেই তাকিয়ে থাকে। অতীত ইতিহাসও তাই বলে।

বাংলাদেশের অতীত ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে দেশের তরুণ-তরুণীরা (মূলত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত তরুণ-তরুণীরা) আন্দোলন করেছে জাতীয় স্বার্থে। কদাপি নিজেদের গোষ্ঠীগত, ব্যক্তিগত বা সম্প্রদায়গত স্বার্থে নয়। যেমন ১৯৪৮ ও ১৯৫২-তে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ১৯৫৩-তে বন্দীমুক্তি আন্দোলন, ১৯৫৪-তে যুক্তফ্রণ্টের নির্বাচনী আন্দোলন, ১৯৬২-তে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬-’৬৭-তে ছয় দফা- এগার দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন, ১৯৬৯-এ গণ- অভ্যুত্থান, ১৯৭০-এ নির্বাচনী আন্দোলন ও একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ। এই প্রতিটি আন্দোলন ছিল জাতীয় স্বার্থে, নিজেদের চাকরির জন্য নয়। সমাজের মাত্র একটি অংশের চাকুরির জন্য আন্দোলনের কথা সে আমলের ছাত্র যুব সমাজ মুহুর্তের জন্যেও ভাবেনি। বরং সবার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে জেল-জুলুম, লাঠি-গুলির শিকার হতে হয়েছে।

আজকের আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের আর একটি উক্তি হলো তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ছে। বাস্তবে যদি তাই হতো, দাবিটা হতো শিক্ষিত-অশিক্ষিত এবং শহর-গ্রাম নির্বিশেষে সকল বেকার কর্মক্ষম তরুণ-তরূণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা চাই। আসল বৈষম্য তো সেখানেই।

কিন্তু এ আন্দোলনের নেপথ্যে চালকেরা যেন টার্গেট করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০% কোটা নিয়ে। তাদের সন্তান সন্ততি অর্থাৎ নাতি-নাতনীর জন্য কোটা রাখা তাদের দৃষ্টিতে বৈষম্য।

এক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে বলা প্রয়োজন মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের জীবন বাজি রেখে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা-স্বাধীনতা সংগ্রামীরা পৃথিবীর সর্বত্রই রাষ্ট্রীয় অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশে কিন্তু কারও কাছে কোন কিছু চাননি। রাষ্ট্র এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের সীমাহীন ত্যাগের যৎসামান্য স্বীকৃতি হিসেবে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কার্যত তাঁদের অবদানকেই অস্বীকার বা অমর্যাদা করা হচ্ছে যা বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্যকোন দেশে কেউ করে বা করেছে বলে আজও শোনা যায়নি।

কারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন? শহুরে ধনীর দুলালেরা নয়, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও গ্রামের কৃষকের সন্তানেরা। তাদের ছেলেময়ে নাতি-নাতনীরা আজও বহুলাংশে দরিদ্র। তারা শহরের ফ্ল্যাট, বাড়ির প্রত্যাশী নয়, সরকারি আনুকূল্যে লেখাপড়া শিখে চাকরি নিয়ে পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্জিত টাকায় সংসার জীবন নির্বাহ করার সুযোগটুকু নিশ্চিতভাবেই রাষ্ট্রের কাছে তাদের প্রাপ্য। এই প্রাপ্য স্বীকৃতিকে বৈষম্য বলে অভিহিত করা কলংকজনক।

নারীর জন্য ১০ ভাগ কোটা কেন থাকবে না? এখনও যে নারী শুধুই রান্না করে খাওয়ানো, গরু-ছাগল, মুরগী পলন করা, সন্তান লালন করার মধ্যেই বহুলাংশে সীমিত তা ভুলে গেলে চলবে কেন? বরং তাদের কোটায় মাত্র ১০ ভাগটাই তো মস্ত বৈষম্য। অনুন্নত জেলাগুলির জন্য ১০ ভাগ রাখাও যুক্তিসঙ্গত। নইলে ঢাকা এবং বড় বড় শহরের মধ্যেই চাকরির সুযোগ সীমিত হয়ে পড়তো কারণ সেখানেই তো বড় বড় আমলা, ব্যবসায়ী, মন্ত্রী, এমপি-দের বাস।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলে অভিহিত আদিবাসী যারা জাতিগত সংখ্যালঘু হয়ে জন্ম নিয়ে যেন এক সীমাহীন বৈষম্য অবহেলার শিকারে পরিণত হয়েছে। তাদের জন্য ৫ ভাগ রেখে রাষ্ট্র তার দায়িত্বের সামান্য অংশই পালন করেছে মাত্র। তাঁদের জমি-জিরাতের, বাড়ি ঘরের মালিকানার সমস্যাগুলি বহু পুরাতন এবং আজও অমীমাংসিত। অপরপক্ষে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশের কোটা নিয়েও বিতর্ক থাকার কারণ নেই।

এই আলোচনাটুকু কোটা বাতিল বা সংস্কারের আন্দোলনকারীদেরকে প্রকারান্তরে বেকার রাখার উদ্দেশ্যে আদৌ নয় বরং সামগ্রিক বেকারত্ব নিরসনের দাবিতেই নিবন্ধটি নিবেদিত। তাই দেশের সামগ্রিক স্বার্থে যে দাবিগুলি নিয়ে তরুণ সমাজের জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে এগিয়ে আসা উচিত তা হলোঃ
এক. সামগ্রিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য দেশে ব্যাপক শিল্পায়ন করা হোক।
দুই. সড়ক, রেল ও নৌপথগুলির সম্প্রসারণ করা হোক;
তিন. আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার সম্প্রসারণ ও শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা পূরোপূরি অপসারণ করা হোক;
চার. রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রে থেকেই বিরাজমান নারী-পুরুষের বৈষম্যের অবসান ঘটানো হোক;
পাঁচ. চাকুরিতে সকলক্ষেত্রে ঘুষমুক্ত, দুর্নীতি ও দলীয়করণমুক্ত করা হোক এবং অবিলম্বে বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধ করা হোক
সাত. দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আইনানুযায়ী ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করা হোক।

আশা করি চাকুরিক্ষেত্রে ও বেকারত্ব দূরীকরণে সকল বৈষম্যের দূরীকরণে এই কর্মসূচী সর্বজন গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!