ক্যানসার-কোষ নিধনের দাবি কালীপদ পাহানের
হেল্থ ডেস্ক। কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
শিকাগোর রাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষক কালীপদ পাহানের দাবি, তিনি ‘মোনোক্লোনাল’ নামে একটি অ্যান্টিবডি আবিষ্কার করেছেন, যা ক্যানসার কোষ নিধনে সাহায্য করবে। তাঁর দুই সহযোগীও বাঙালি— মধুচ্ছন্দা কুণ্ডু ও অভীক রায়। কালীপদবাবুর আবিষ্কারের বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রসিডিংস অব ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ওই বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, ক্যানসার কোষকে কেমোথেরাপিতে জব্দ করার সময়ে প্রচুর সাধারণ সজীব কোষও মারা পড়ে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। গিনিপিগ ছাড়াও মানবদেহের লিভার, স্তন, প্রস্টেটের ক্যানসার কোষের উপরে তাঁর তৈরি অ্যান্টিবডি প্রয়োগ করে সার্থক ফল মিলেছে। সাধারণ কোষ বাঁচিয়ে ক্যানসার কোষ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে। ফুসফুস ক্যানসারে কিন্তু ওই অ্যান্টিবডি কাজ করছে না।
মানবদেহের প্রতিটি সাধারণ কোষের নিজস্ব আয়ু থাকে। এক সময়ে নিজের থেকে মারা যায় তারা। কালীপদবাবু জানান, যে-কোষে গিয়ে ক্যানসার বাসা বাঁধে, সেই কোষ নিঃশেষে নিকেশ হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণ কোষের মতো ক্যানসার-আক্রান্ত কোষ মরে গেলে অনেক সুবিধা হবে। আমি প্রথমে খুঁজতে শুরু করি, ক্যানসার আক্রান্ত কোষ ‘অমর’ হয়ে যাচ্ছে কেন।’’
বিজ্ঞানী জানান, যে-মলিকিউল বা সাইটোকাইন দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে, তার পরিবারের চার সদস্য। তিন সদস্য সক্রিয়, এক জন নিষ্ক্রিয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাইটোকাইনের নিষ্ক্রিয় সদস্য ক্যানসার-আক্রান্ত কোষে সক্রিয় হয়ে প্রচুর মাত্রায় বংশবৃদ্ধি শুরু করে। সেই নিষ্ক্রিয় সদস্যই অতি সক্রিয় হয়ে ক্যানসার-আক্রান্ত কোষকে বাঁচিয়ে রাখছে। এটাই ক্যানসার কোষের ‘অমরত্ব’-এর রহস্য। ওই বিজ্ঞানীর দাবি, তাঁর তৈরি অ্যান্টিবডি ওই নিষ্ক্রিয় সদস্যকে বংশ বিস্তার করতেই দেয় না। সেই অ্যান্টিবডি মানবশরীরে ঢোকালে আর-দশটা সাধারণ কোষের মতোই ক্যানসার কোষ নিকেশ হয়ে যাচ্ছে। এমনকী ক্যানসার-আক্রান্ত কোষ ছড়িয়েও পড়তে পারছে না।
কালীপদবাবুর দাবি, ওষুধ সংস্থার সঙ্গে তাঁর কথা চলছে। ওষুধ সংস্থা তাঁর কাছ থেকে পেটেন্ট কেনার পরে ওই ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করবে।