গাইবান্ধায় বেগুনী ধান নিয়ে তোলপাড়, পাহারায় গ্রাম পুলিশ !
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে বেগুনী রংয়ের ধান ক্ষেত নিয়ে চলছে পরীক্ষা, নিরিক্ষা, পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা। সম্পতি বিভিন্ন পত্রিকায় বেগুনী রংয়ের ধানের চমক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর সারা দেশ ব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এরপর থেকে কৃষি অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও গবেষক এবং দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে প্রতিদিন হাজারও নারী পুরুষ বেগুনী ধান দেখতে ভীড় করছেন। দর্শকের ভীড় ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ হতে দুইজন গ্রাম পুলিশকে ধানক্ষেত পাহাড়া দেওয়ার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল হতে ধানক্ষেত পাহাড়া দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাশেদুল ইসলাম প্রতিদিন ক্ষেত দর্শন করছেন। এছাড়া দর্শকরা যাতে ধানের পাতা, ডাল ও শীষ ছিঁড়ে নিয়ে যেতে না পারে সে জন্য ক্ষেতের চারপাশে জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, কৃষি অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কমপক্ষে ১০টি প্রতিনিধি দল এ পর্যন্ত বেগুনী ধানক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের কৃষাণী দুলালী বেগমের বহুল আলোচিত বেগুনী রংয়ের ধান ক্ষেত নিয়ে চলছে এখন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজ।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, গোছা প্রতি ১৮ হতে ২৮টি শিষ রয়েছে। পাশাপাশি একটি শীষে ১৬০ হতে ৩১৩টি পর্যন্ত ধান পাওয়া গেছে। রামজীবন ইউনিয়নের আইপিএম কৃষক ক্লাবের সদস্য দুলালী বেগম। তিনি কৌতুহলবশত এই ধান চাষ করেন। গত বছর বোরো ২৮ ধানের আবাদ করেছিলেন। সেই ২৮ ধানের সাথে ২০/২৫ টি ধানের গোছা বেগুনী রংয়ের আবাদ হয়েছিল। বেগুনী ধান গুলি আলাদা কেটে সংরক্ষন করে এ বছর ১৮ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন।
কৃষানীর নাম দুলালী ও উপজেলার নাম সুন্দরগঞ্জ হওয়ায় এ ধানের নাম দেওয়া হয়েছে দুলালী সুন্দরী। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, এই বেগুনী ধানকে চীনে নিষিদ্ধ ধান বলা হয়ে থাকে। প্রাচীন চীনের রাজ পরিবারের মধ্যেই কেবল এ ধানের ব্যবহার সীমাবদ্ধ ছিল। এই ধানের ভাত খেলে দীর্ঘজীবী ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাওয়া যায় বলে চীনারা বিশ্বাস করত। রাজ পরিবারের বাইরে এই ধানের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
এ নিষেধাজ্ঞা অমান্যের সাজা ছিল মৃত্যুদন্ড। বিভিন্ন উৎসবে সম্রাট যোদ্ধাদের সম্মানে একত্রে এ ধানের ভাত খেয়ে থাকত। এটি বাংলাদেশে চাষাবাদের তেমন নজির না থাকায় এ বিষয়ে গবেষণা আমাদের পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তায় গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন কৃষি অফিসার। সূত্র: ইনকিলাব।