নতুন জাতের গিমা কলমী
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম
গিমা কলমী নতুন জাতের একটি কলমীর জাত। ফসলটি বষীজীবি বলে সারা বছরই এ সবজি পাওয়া বা চাষ করা যায়। এটি একটি ভিটামিন ‘এ‘ সমৃদ্ধ গ্রীষ্মকালীন শাক। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে যখন দেশে সবজির খুব অভাব দেখা দেয় তখন গিমা কলমী শাক কিছুটা হলেও সে অভাব দূর করতে সাহায্য করে। অন্যান্য পাতা জাতীয় সবজি যেমন পালং, ডাঁটাশাক, পাটশাক যেভাবে খাওয়া যায় গিমা কলমীও তেমনি ভাবে খাওয়া যায়। মাছের সাথেও খুব উপাদেয় হয়।
মাটি—
সব ধরনের মাটিতেই এর চাষ করা যায়। দোঁআশ বা বেলে দোঁআশ যার নীচে এঁটেল মাটির স্তর রয়েছে এমন মাটি এর চাষের জন্য ভাল।
জাত—
বারি গিমাকলমী ১, বেম্বু লিফ,এলপি ১, ক্যাং কং ইত্যাদি। বারি গিমাকলমী ১ চৈত্র থেকে শ্রাবণ মাসে চাষ করা হয়। বীজ বোনার ৩০ দিন পর থেকেই শাক তুলে খাওয়া যায়। এ জাতের হেক্টর প্রতি ফলন ৩৫-৪০ টন।
বীজ বোনার সময়—
চৈত্র থেকে শ্রাবণ মাস বীজ বোনার উত্তম সময়। তবে সেচ সুবিধা থাকলে পুরো বসর জুড়ে চাষ করা যায়.
বীজের পরিমাণ—
এক শতকে ৪০-৫০ গ্রাম, হেক্টর প্রতি ১০-১২ কেজি।
বীজ বপনের পদ্ধতি—
বীজ ৩০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে ১ সেন্টিমিটার গভীর করে বুনতে হয়। বীজ বোনার ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে এর চারা গজায়।
জমি তৈরী—
৫-৬ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি ঝুরঝুরা করে তৈরি করতে হবে। ১ মিটার চওড়া ও ৩ মিটার লম্বা করে ভিটি তৈরী করতে হবে এবং উভয় পাশে নালা রাখতে হবে। প্রায় ৩০ সেন্টি মিটার দূরে দূরে ৩টি সারিতে বীজ বপন করতে হবে।
সারের পরিমাণ—
সার এক শতকে হেক্টর প্রতি
গোবর ৪০ কেজি ১০ টন
ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম ১৫০ কেজি
টিএসপি ২০০ গ্রাম ৫০ কেজি
এমও পি ১০০ গ্রাম ২৫ কেজি
সার প্রয়োগের পদ্ধতি—
অর্ধেক ইউরিয়া বাদে সব সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হয়। বাকী অর্ধেক ইউরিয়া ১ম, ২য় ও ৩য় বার ফসল তোলার পর পরই সমান ৩ ভাগ করে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। অল্প জায়গায় চাষ করলে শুধুমাত্র গোবর সার দিলেই চলে।
চারা রোপণ—
গাছের কান্ড কেটে ও রোপণ করা যায়। শীতকালে বীজ উৎপন্ন হয়। বীজতলায় চারা উৎপন্ন করে লাগাতে হলে ১৫-২০ দিনের চারা রোপণ করতে হয়।
পরিচর্যা—
চারা গজানোর পর প্রতি ১৫ সেন্টিমিটার দূরে দূরে একটি করে চারা রেখে বাকি চারা উঠিয়ে ফেলতে হবে। গিমা কলমির চারা অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু তাই বাছাই করা চারা পুনরায় লাগানো যেতে পারে। বৃষ্টির অভাবে সেচ দিতে হয়। আগাছা দেখা দিলে তা পরিস্কার করতে হবে। জমির উপরিভাগের মাটিতে চটা লেগে গেলে নিড়ানীর সাহায্যে সাথে সাথে চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। পানি যাতে জমে না থাকে সেজন্য পানি নিষ্কাশন নালা তৈরি করে রাখতে হবে।
পোকামকড় ও রোগ—
পাতার বিট্ল, কচ্ছপ পোকা , ঘোড়া পোকা, বিছা পোকা গিমা কলমীর পাতা খেয়ে নষ্ট করে। জমি বেশি ভেজা বা স্যাঁতসেতে থাকলে চারা গাছের গোড়া পচে নষ্ট হয়। ড্যাম্পিং অফ রোগের কারণে এরূপ হয়।
নিয়মিত বালাইনাশক ব্যবহার করলে এসকল রোগের হাত থেকে ফসল রক্ষা করা সম্ভব .
ফসল সংগ্রহ—
বীজ বপনের ৩-৪ দিনের মধ্যেই গাছ মাটির উপরে গজিয়ে ওঠে। ভাল আবহাওয়ায় উপযুক্ত পরিচর্যায় বপনের দিন থেকে মাত্র ৩০ দিনেই গিমা কলমি সবজি হিসাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ফলন—
শতকে ১৪০-১৬০ কেজি, হেক্টর প্রতি ১৫-২০ টন।
তথ্য – সংগৃহীত ও সংকলিত .