ঘাটাইলে বিএনপি নেতাকর্মীদের আ’লীগে যোগদানের মহাউৎসব
মোঃ সবুজ সরকার সৌরভ, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠে ময়দানে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আজ বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সভায় আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন পৌর বিএনপির প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী।বুধবার সভায় বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকৃত নেতাদের মুখে আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শর গুণকীর্তন যেমন শোনা গেল, ঠিক তেমনই শোনা গেল এই আসনে বিএনপি প্রার্থীর প্রতি গণবিচ্ছিন্নতা মূলক বিদ্বেষ এবং নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করার তীব্র ক্ষোভ। এসব ভোটের মাঠে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদৎ হোসেন শামিম, ঘাটাইল জিবিজি কলেজের সাবেক জিএস ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন ধলার ভাই সাইফুল ইসলাম লাল, জিবিজি সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস মনিরুজ্জামান মনি, শ্রমিক নেতা আব্দুস সাত্তার মিয়া, বিএনপি নেতা এস এম খুররম, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার (১ নং) আব্দুল হালিম মিয়া, বানিয়াপাড়ার বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান ফজলু, দক্ষিণ পাড়া এলাকার লাল মিয়া, মাখন, হেলাল বঙ্গবাসী সহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের প্রায় তিন শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী বৃন্দ।
যোগদানকারী এসব নেতাকর্মীদের গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে সাদরে বরণ করে নেন ঘাটাইলে নৌকার প্রার্থী আতাউর রহমান খানের ছেলে ও টাঙ্গাইলের সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান (মুক্তি)।ইতোপূর্বে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এমন অনেকেই তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। উপজেলার দীঘলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও সন্ধানপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। গত ১৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বুলবুল ভূইয়ার ছেলে লিঠু ভূইয়াও উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের শতাধিক নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগে যোগদান করে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন।
এসব যোগদানের ঘটনা এখন ঘাটাইলের নির্বাচনী মাঠের অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু।সদ্য আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদান করা এই সব নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ডে মুগ্ধ হয়ে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা আওয়ামী লীগে যোগদান করছেন। অনেকেই বলছেন, বিএনপিকে খারাপ বলবো না তবে বিগত দশ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে আকৃষ্ট হয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। এছাড়া যোগদানকৃত অনেকেই এই আসনে বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদের প্রতি পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও নেতাকর্মীদের সাথে তার দূরত্ব থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানের কারন হিসেবে বক্তব্যে উল্লেখ করছেন।বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদ বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কোন মন্তব্য করতেও তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।আজকের এই যোগদান ও নির্বাচনী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খলিলুর রহমান তালুকদার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও যোগদানকৃত নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেন পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান খান শহীদ। এ সময় ঘাটাইল পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বর্ণাঢ্য মিছিল সহকারে সভায় যোগ দেন।