চিরিরবন্দরে অবৈধ বালু উত্তোলনের রাজ্য! আতংকে গ্রামবাসী
মাহাফুজুল ইসলাম আসাদ, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় নদী থেকে খননযন্ত্র (ড্রেজার মেশিন) দিয়ে বালু উত্তোলন করায় জনবসতি, ঘরবািড়, তীররক্ষা বাঁধসড়ক, ঈদগাহ, কবরস্থান, আবাদি জমিসহ অনেক জনসম্পদ ভাঙনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে এলাকাবাসী ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ও ৪ মার্চ ২০১৮ জেলা প্রশাসনের কাছে ইজারা বাতিলে জন্য লিখিত অভিযোগ করেছে। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে চিরিরবন্দর উপজেলার পূর্ব সাইতাড়া রাবারড্যাম বালুমহল র্দীঘদিন যাবত সরকার ইজারা দিয়ে আসছে। এই বালুমহল থেকে বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে ক্রমাগত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বালু উত্তোলনের কারনে ড্যামের দক্ষিন পাশের নদীর পূর্ব তীরবর্তী ৪/৫ কিলোমিটার এলাকার তীররক্ষা বাধসড়ক, ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান, আবাদি জমিসহ অনেক জনসম্পদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ড্যাম হতে দক্ষিন নদী তীর বাঘদুয়ারঘাট পাড়া ও প্রামানিক পাড়াসহ পাশবর্তী গ্রামে যাতায়াতের জন্য অবশিষ্ট বিপদজনক পায়ে চলার সংকীণ পথটিও হুমকির সম্মুখীন হয়ে দাড়িয়েছে। অরক্ষিত-অসহায়-বিপদগ্রস্থ স্থানীয় জনগন বার বার স্থানীয় ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষরসহ জেলা প্রশাসক বরাবর একের পর এক পেশ করা হয়েছে। অভিযোগকারীদের মধ্যে রাবারড্যাম গ্রামের ফজলার রহমান ও আফতাবুজ্জামান জানান, শফিকুল ইসলাম সরকারিভাবে যেখান থেকে বালু তোলার ইজারা নিয়েছেন, সেখান থেকে বালু উত্তোলন না করে তিনি নদীর কিনারা ও আবাদি জমিসংলগ্ন নদী থেকে বেপরোয়া ও বিরতিহীনভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। বাধা দিলেও জোর করে বালু তোলা হচ্ছে। প্রথম দিকে একটি খননযন্ত্র থাকলেও বর্তমানে দুটি খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এ কারণে জেলা প্রশাসনের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই তীররক্ষা সড়কের ২০ মিটার দূরে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নদীর তীরে স্তুপ করা হচ্ছে। প্রতি ট্রাক বালু ছয়শ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত বালু উত্তোলনের কারনে ইজারাদার সাথে ভুক্তভোগী স্থানীয়দের সঙ্গে তাঁদের ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এ বছর ১৩ই এপ্রিল ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আছে। যদি আবার ইজারা বন্ধ না করে বালু উত্তোলনের জন্য আবার অনুমতি দেয়া হয় । তাহলে ভুক্তভোগীদের সাথে ইজাদারদের বড় ধরনের সহিসংতার রুপ নেবে।
ইজারাদার শফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিগত তিন বছর আগে এখানে বালু উত্তোলন বন্ধে আমি নিজেই গ্রামবাসীর সাথে আন্দোলন করেছি। তবে কোন কাজ না হওয়ায় ২০১৭ সালের ইজারায় আমি এই বালুমহল নিজেই নিয়েছি। তবে এ বছর ইজারা কাউকে না দিয়ে ইজারা বন্ধ করে দিলে আমি ড্রেজার মেশিন নিজেই সরিয়ে নেব।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: মেজবাহূল করিম জানান, পূর্ব সাইতাড়া রাবারড্যাম বালুমহল ইজারা বন্ধের জন্য গত ২৬ সেক্টেম্বর ২০১৭এ প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: গোলাম রব্বানী জানান, জেলা প্রসাশকের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ করতে একটু সময়ের ব্যাপার।