জিজ্ঞাসাবাদে দিশেহারা হয়ে পড়েন দিলদার
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক দিলদার ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে বুধবার বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরে রাতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের সময় দিলদার আহমেদ মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েন। তাকে খুব বিধ্বস্ত আর বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। খুব অনুতপ্তও মনে হচ্ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অনেক প্রশ্নেরই উত্তর প্রথমে দিতে পারছিলেন না। তার অন্য ভাইয়েরা তাকে সহযোগিতা করছিল।
তবে শুল্ক গোয়েন্দারা তাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগেই কার্যালয়ে ডেকেছে। তার বিভিন্ন দোকানের সোনা ও ডায়মন্ডের কোনো বৈধ কাগজপত্রও তিনি দেখাতে পারেননি।
দিলদার ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালানের অভিযোগ থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে একটি অনুসন্ধান কমিটি করে তদন্ত শুরু করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ ও ১৫ মে ঢাকায় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শাখায় অভিযান চালিয়ে সোনা ও হীরার গয়না আটক করা হয়, যার মোট দাম ১৭৯ কোটি টাকা।
ব্যাখ্যাহীনভাবে সোনা ও হীরার গয়না মজুদের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের তলব করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কাকরাইল কার্যালয়ে আসেন দিলদার আহমেদ। এরপর প্রায় আধা ঘণ্টা সেখানে অপেক্ষা করেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর পর দুপুর দেড়টা থেকে আধা ঘন্টা বিরতি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদ চলার মধ্যে বিকেল ৪টায় উপস্থিত সাংবাদিকদের চিকেন বিরিয়ানি খাওয়ার ব্যবস্থা করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
এরপর বিকাল ৫টার কিছু সময় পর অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খানের কক্ষ থেকে দিলদার আহমেদরা তিন ভাই বেরিয়ে এলে সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন।
ওই সময় কয়েকজন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা দিলদার আহমেদকে দ্রুত লিফটে তুলে দিতে চাইলেও তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা কী জানতে চান বলেন। আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলব।
দিলদার বলেন, সারা দেশের লোক যেভাবে ব্যবসা করে আমিও সেভাবে করছি। আমরা কোথাও অন্যায় অবৈধ ব্যবসা করি না। আমাদের কাছে যেসব কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে সেগুলো দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছি। আমি যদি কোনো অন্যায় করে থাকি, দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
শুল্ক গোয়েন্দারা বিক্রয় কেন্দ্রের ভল্টে গয়না সিলগালা করে রাখায় ব্যবসা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন আপন জুয়েলার্সের মালিকরা।
দিলদার বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার দোকান বন্ধ হলে সারাদেশে সবার দোকান বন্ধ করা উচিত। আমি জুয়েলার্স সমিতির সেক্রেটারি ছিলাম। অনেক নীতিমালা করতে চেয়েও পারিনি। এখানে নীতিমালা থাকা দরকার, জবাবদিহি থাকা দরকার।
আগামী ২৩ এপ্রিল আপন জুয়েলার্সের মালিকদের আটক সোনা ও হীরার বৈধ কাগজপত্র নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে ফের হাজির হতে বলা হয়েছে।