খুলনার তেরখাদায় জনরোষের স্বীকার হলেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা কামরুজ্জামান জামাল….
নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
খুলনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামালের গাড়িবহরে হামলা ও গুলির অভিযোগ উঠেছে। এসময় জামাল সহ আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান কালু ও আজগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাদশাহ মল্লিককে মারপিঠ করা হয় বলেও জানা গেছে। নেতৃবৃন্দসহ এ ঘটনায় মোট ৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাচিয়াদহ এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানাগেছে। পুলিশ গন্ডোগোলের ঘটনা স্বীকার করলেও গুলির বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল অভিযোগ করেন, তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধির উদ্দেশে গাড়িবহর নিয়ে রওনা হন। পথিমধ্যে গাড়িবহর উপজেলার ছাচিয়াদহ এলাকায় গেলে তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চুর ভাই সমীর বিশ্বাস ও রুকু বিশ্বাসের নেতৃত্বে তাদের বহরে হামলা এবং গুলি বর্ষণ করা হয়। এ সময় তারা কমপক্ষে ১৫টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। অপরপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু ভারতে গেছেন। তার ভাই রুকু বিশ্বাস ছাচিয়াদহ এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। গাড়িবহর যাওয়ার সময় জামালের লোকজন উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাইকে একা পেয়ে তার উপর চড়াও হয়। এ সময় তারা স্থানীয় কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও ভাঙচুর করে। সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জামাল ও তার বাহিনী এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন তারা।
এদিকে গতকালের ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষ একে উপরের দোষ চাপালেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা জানিয়েছন জামাল বর্তমানে আওয়ামীলীগ নেতা হলেও একজন অস্ত্র ব্যবসায়ী। র্যাবের কাছে একে-৪৭ রাইফেল বিক্রির সময় হাতে নাতে ধরা পড়েছিল। এলাকায় ঢুকে কিছু সমাজ বিরোধী সন্ত্রাসীকে নিয়ে মাঝে মাঝেই মহড়া দেন। বিশেষ করে স্থানীয় সাংসদ ও খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা যখন অনুপস্থিত থাকেন ঠিক সেই সময় তিনি এলাকায় ঢুকে আওয়ামীলীগে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করেন। তিনি দলীয় প্রোটোকল না মেনে ও স্থানীয় নেতৃত্বকে কিছু না জানিয়ে মাঝে মাঝেই তেরখাদা এলাকায় দলীয় নাম ব্যবহার করে তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের সাথে বিভিন্ন মনগড়া কর্মসুচিতে অংশ গ্রহন করেন। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেরখাদা উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় প্রকাশ্যে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গতকালের ঘটনা নেতৃবৃন্দের এই ক্ষোভের বহিপ্রকাশ মাত্র।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন খুলনায় অবস্থান করছেন। হামলা হয়েছে বলে শুনেছেন। তবে গুলির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তিনি আরও বলেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয় নিয়ে বিবাদমান দুটি পক্ষ একে অপরের উপর দোষারোপ করলেও কোন পক্ষই থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা করেনি। ফলে আতংক আরও বাড়ছে। এলাকার শান্তিপ্রিয় সাধারন মানুষ এই ঘটনার পাল্টা হিসেবে আবারও বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছেন।