টাইগারদের ‘নাগিন ড্যান্স’
স্পোর্টস ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় মজেছে দর্শকরা। ২ উইকেটে জিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠে গেল বাংলাদেশ। ‘নাগিন নাচ’ও শুরু করেছিল লঙ্কান সমর্থকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ী হলো টিম টাইগার। কানায় কানায় পরিপূর্ণ প্রেমাদাসার গ্যালারির সামনে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে কাঁদিয়ে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রান। নির্ধারিত ওভারে ১ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।আগামী ১৮ মার্চ শিরোপার লড়াইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে সাকিব আল হাসানের দল।
প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ১৬০ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিমের উড়ন্ত সূচনার পর ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ১১ রানে আকিলা ধনাঞ্জয়ার বলে কোনো রান না করেই ক্যাচ দেন লিটন দাস। অনেকদিন পর তিন নম্বর পজিশনে দেখা যায় সাব্বির রহমানকে। কিন্তু আবারও ব্যর্থ হন তিনি। ৮ বলে ৩ চারে ১৩ রান করে ধনাঞ্জয়ার বলেই স্টাম্পড হয়ে যান তিনি। ৩৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন তামিম-মুশফিক। কিন্তু আজ আর ইনিংস বড় করতে পারেননি ‘মি. ডিপেন্ডেবল’। ২৫ বলে ২৮ রান করে অপোনসোর বলে পেরেরার তালুবন্দি হন।
বাংলাদেশকে ২ উইকেটের ব্যবধানে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর এতেই শ্রীলঙ্কার ৭০তম জাতীয় দিবসের টুর্নামেন্ট নিদাহাস ট্রফির ১৮ মার্চের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত।
অবশ্য শেষ দুই বলের আগে এই ম্যাচে কম ক্লাইমেক্স হয়নি। এই ম্যাচটিতে ওয়াকওভার পেয়েই ফাইনালে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল শ্রীলঙ্কার। কিন্তু শ্রীলঙ্কা যতটা না জয়ের জন্য খেলছিল ততটাই মাঠের দুই আম্পায়ার শ্রীলঙ্কাকে জিতানোর চেষ্টায় ব্যস্ত ছিল।
পরিস্থিতি এতটাই ঘোলাটে হয়ে গিয়েছিল যে, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বলেছিলেন মাহমুদুল্লাহ আর নতুন ব্যাটসম্যান রুবেল হোসেনকে। তারা বের হবারও প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন।
তবে সেই সময়টায় বেরিয়ে গেলে বাংলাদেশ ‘ডিসকোয়ালিফাইড’ হতো, ওয়াকওভার নিয়ে ফাইনালে চলে যেতো শ্রীলঙ্কা। অবশেষে মাহমুদুল্লাহর অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জিতেই ফাইনালে উঠে গেল বাংলাদেশ।
এর আগে নিদাহাস ট্রফির অঘোষিত সেমিফাইনালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে বিপদে পড়ে যায় তারা। দলীয় ১৫ রানেই ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা টাইগার ক্যাপ্টেনের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন দানুশকা গুনাথিলাকা (৪)। এরপর মঞ্চে আবির্ভাব ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানের। তার বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন অপর ওপেনার কুশল মেন্ডিস (১১)।
উইকেটে সেট হওয়ার আগেই মেহেদী মিরাজের কৃতিত্বে রান-আউট হয়ে যান উপুল থারাঙ্গা। তিনি ৫ বলে মাত্র ৫ রান করেছেন। টুর্নামেন্টে বেশ ভালো খেলে চলা দাসুন শানাকা গোল্ডেন ডাক মেরে পরিণত হয়েছেন মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকারে। কাটার মাস্টারের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক। ৩২ রানে ৪ উইকেট পতনের পর মঞ্চে আবারও মিরাজ। আগের উইকেটটা রান-আউট হওয়ায় তার নামের পাশে যোগ হয়নি। এবার জীবন মেন্ডিসকে (৩) মুস্তাফিজের তালুবন্দি করে উইকেটটি নিজের নামের পাশে লেখান এই অল-রাউন্ডার।
এমতাবস্থায় থিসারা পেরেরা আর কুশল পেরেরা মিলে হাত খুলে মারতে থাকেন। ৪১ রান থেকে দুজনে মিলে দলের স্কোরকে একশ পার করেন। ৩২ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল। তাকে ব্যক্তিগত ৬১ রানে মেহেদী মিরাজের ক্যাচে পরিণত করেন সৌম্য সরকার। অপর হাফ সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক থিসারা পেরেরা ৩৭ বলে ৫৮ রান করে রুবেলের শিকার হন। নির্ধারিত ২০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৫৯ রান।