টাঙ্গাইলে নথখোলা ঝিনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে ব্রিজ সহ অন্যান্য স্থাপনা
মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের নথখোলা এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে ঝিনাই নদী। এ নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতু এবং তার দুপাশে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এ নদীর দু‘পাড়ে রয়েছে অসংখ্য বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। টাঙ্গাইলের ঝিনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ বালু উত্তোলন করছে। এলাকাবাসী জানায়, এ বিষয়ে প্রশাসনের লোকজনকে বারবার জানালেও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদীর পাশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নদী পাড়ের মানুষদের থাকার মতো কোনও জায়গা থাকবে না। বিগত বছরে এ নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করার ফলে ইতোমধ্যে একটি শহীদ মিনার নদী গর্ভে বিলীনসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাংশ এবং নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকাবাসী। এ বছরও শুরু হয়েছে এ নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন। অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলন করায় ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেই সঙ্গে নদীর পাড় ঘেঁষে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ও দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বালু উত্তোলনের ফলে ধুলাবালির কারণে সড়ক দিয়ে চলাচলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষদের। এ নিয়ে প্রতিবাদ করেও কোনও ফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। বালু ব্যবসার কাজে নিয়োজিত ট্রাকের টোকেন সরবরাহকারী তাবুতে বসে থাকা একজন গর্বের সাথে বলেন প্রশাসনের লোকজন আসে ঘুরেফিরে দেখে আবার চলে যায়। ক্যামেরা হাতে অনেকেই আসে, ছবি তুলে আবার চলে যায়। সবাইকে ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা চলছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নথখোলা ঝিনাই নদী থেকে বেকু দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। আর ভারী সারি ট্রাক গুলো বালি নিয়ে যার যার গন্তব্যে রওনা দিচ্ছে। স্থানীয়রা জানায় প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও মাহিন্দ্র ট্রাক্টর দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বালু বিক্রি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানায় প্রতিদিন প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মাটি বিক্রি হয়। অভিযোগ আছে, প্রায় সারা বছর ধরেই কোনও না কোনও প্রভাবশালী মহল এ নদী থেকে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে নদী ভাঙনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বর্ষার পানি আসতে শুরু করলেই যেকোনো মুহূর্তে দেখা দিতে পারে এই ভাঙন। এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম নাসির নামে একজনের সাথে তাদের মুঠোফোন থেকেই কথা কথা হয় তিনি বলেন এ বিষয়ে সংসদ সদস্য সহ, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালুর ব্যবসা চালানো হচ্ছে। সাক্ষাতে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন তিনি ব্যস্ত আছেন, এ বিষয়ে কথা বলার কিছু নেই। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ঝিনাই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনও অনুমতি কিংবা নদী খনন প্রকল্প নেই। যারা এ নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।