টাঙ্গাইলে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুরকে গণ ধোলাই॥ ১বছরের কারাদন্ড॥
মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
ছাত্রী ও অভিভাবকদের নিয়ে নানা রকম আপত্তিকর মন্তব্য করায় টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। আজ ০১ অক্টোবর সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুল (৪২) ওই বিদ্যালয়ের সহকারি ইংরেজী শিক্ষক। সে কালিহাতী উপজেলার পারখী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকদের অশালিন মন্তব্য ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবলু। এরই ধারাবাহিকতায় রোবাবার নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয়। ওই দিনই সকল ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ছাত্রীদের স্কুল থেকে বের করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষর নেন। স্কুল ছুটি শেষে ছাত্রীরা তার অভিভাবকদের জানালে আজ ০১ অক্টোবর সোমবার সকালে অফিস কক্ষে বিদ্যালয়ের সহকারি ইংরেজী শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে সাঈদুর কৌশলে পালানোর চেষ্টা করে। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকরা সাঈদুরকে ধরে গণ পিটুনি দেয়। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই সাঈদুর রহমান বাবুল তাদের বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব ও অশালিন মন্তব্য করে আসছিল। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারকে জানানোর পরও তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ গ্রহণ করেনি। সোমবার শিক্ষার্থীরা সকালে ক্লাস বর্জন করে ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা সাঈদুর রহমান বাবুল ও প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার জানান, শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে সাঈদুর রহমান বাবুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান বলেন, টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে শ্লিলতাহানী ও ইভটিজিং এর দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১৮৬০ দন্ডবিধির ৫০৯ ধারায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে কোন অভিভাবক যদি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন তাহলে পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ বলেন, বিন্দুবাসিনী সরকারী বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে। নয়তো বিভিন্নভাবে হয়রানী করে। আগে শিক্ষকরা সম্মান অর্জন করতো। এখন অবৈধভাবে টাকা অর্জন করে। এই সিন্ডিকেটের বেশীরভাগ শিক্ষদের বিলাসবহুল কয়েকটি করে ফ্লাট বাসা ও গাড়ী রয়েছে। অনেকেই যৌথভাবে বিলাসবহুল সুউচ্চ অট্রালিকা বিল্ডিং তৈরী করছে। তাদের ব্যাংক একাউন্টে জমছে টাকার পাহাড়। মান সম্মানের ভয়ে অনেকেই শ্লিলতাহানীর ব্যাপার চেপে যায়। এ ব্যাপারে দুদক’সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবকগণ।