টিপু সুলতানের বংশধররা কেউ কেউ রিকশা চালান
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ ইঙ্গ মহীশূর বা শ্রীরঙ্গপত্তনমের যুদ্ধে পরাজিত হন মহীশূরের শাসক হায়দার আলির পুত্র টিপু সুলতান। তাঁকে হত্যা করে ব্রিটিশরা।
খোদ ব্রিটিশ সরকার যার ভয়ে কাঁপত, এতটাই সমীহ করতো‚ যাকে নেপোলিয়ন বোনাপার্তের সঙ্গে একাসনে বসান ব্রিটিশ ইতিহাসবিদরা। তিনিই টিপু সুলতান। তার উত্তরসূরীরা এখন কলকাতার বাসিন্দা।
কেউ কেউ এতটাই সঙ্গীন অবস্থায় আছেন‚ অন্নসংস্থানের জন্য রিকশা টানছেন। কেউ অন্যের বাড়িতে ঠিকে ঝি হয়ে কাজ করছেন।
টিপু সুলতানকে হত্যা করার পর ব্রিটিশরা তাঁর একাধিক স্ত্রী‚ ১২ জন পুত্র-সহ পরিবারের মোট ৩০০ জন সদস্যকে কলকাতায় নির্বাসনে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি তাঁদের ওপর তৈরি হয়েছিল একটি তথ্যচিত্র। আধ ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের ওই তথ্যচিত্রের নাম ‘Tipu Sultan : The Misery of History’।
সেখানে দেখানো হয়েছে ‘ প্রিন্স‘ আনোয়ার আলি শাহ-কে। টিপুর পরবর্তী সপ্তম প্রজন্মের উত্তরসূরী। সংসার চালাতে রিকশা চালান।
স্ত্রী সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দিতে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের উপরে রিক্সার প্যাডেলে চাপ দেন তিনি। ভাগ্যের পরিহাসে এই রাস্তা যাঁর নামে‚ সেই প্রিন্স গুলাম মহম্মদ আনোয়ার শাহ ছিলেন তাঁর প্রপিতামহ।
আনোয়ার আলি-র বাকি ভাইরাও কেউ রিক্সা চালান। কেউ সেলাইয়ের কাজ করেন। কেউ ছোট কারবার চালান। সবাই থাকেন ঘিঞ্জি বস্তির ঘুপচি কামরায়।
অথচ কলকাতাতেই রাজার হালে থাকার কথা তাঁদের। কারণ এই শহরে বিস্তর সম্পত্তি ছিল টিপু সুলতানের।
আজকের রয়াল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাব‚ টালিগঞ্জ ক্লাব সব ছিল মহীশূরের সুলতান টিপুর। কিন্তু এখন তার দেখভালের দায়িত্ব প্রিন্স গুলাম মহম্মদ ট্রাস্টের। নামমাত্র ভাড়ায় লিজ নেওয়া আছে গল্ফ ক্লাব এবং টালিগঞ্জ ক্লাব।
সংবাদমাধ্যমে টিপুর উত্তরসূরীদের অভিযোগ‚ ট্রাস্টের মাধ্যমে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। আবার ট্রাস্টের অভিযোগ‚ টাকা দিলে নয়ছয় করেন টিপুর বংশধররা। তাছাড়া ট্রাস্টের মূল দায়িত্ব হল টিপু সুলতানের নামাঙ্কিত মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করা।
এছাড়াও আজকের পার্ক স্ট্রিট‚ চৌরঙ্গি‚ থিয়েটার রোড এবং দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ চাষ জমির মালিক ছিলেন টিপু সুলতান। কিন্তু তাঁর বংশধররা বঞ্চিতই থেকে গেছেন।
কলকাতায় টিপু সুলতানের বংশধররা সবাই যে দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থায় আছেন তা নয়। কেউ কেউ মধ্যবিত্ত জীবনও যাপন করছেন। কিন্তু কারওর জীবনেই ‘রয়্যাল‘ শব্দটার ছিটেফোঁটাও নেই।
অথচ ভারতে এখনও রাজবংশের উত্তরসূরীরা আছেন‚ যাঁরা‚ রাজত্ব চলে গেলেও প্রাসাদে আছেন।
রাজার হালেই নবাবি করছেন। তফাৎটা হল‚ যাঁরা ব্রিটিশদের সঙ্গে আপস করে মাথা নুইয়েছিলেন ‚তাঁরা টিকে গেছেন। কিন্তু যাঁরা ব্রিটিশ শাসনের প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁদের গরিমা ধুলোয় মিশে গেছে।
উৎস- ইন্টারনেট
- কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।