দেবীগঞ্জে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে প্রেমিকা লাঞ্চিত
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর সম্প্রতি প্রেমিক বিয়ে করতে টালবাহানা শুরু করায় কিশোরী প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে উপস্থিত হয়। কিন্তু প্রেমিকের পরিবার তাদের সম্পর্ককে অস্বীকার করে প্রেমিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের রামগঞ্জ বিলাসি নগরপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত প্রেমিক হানিফ ইসলাম (২৫) নগরপাড়া এলাকার হাসমত আলীর ছেলে। আর মারধরের শিকার কিশোরী (১৮) পার্শ্ববর্তী প্রধান পাড়া এলাকার হানু মিঞার মেয়ে।
শারীরিকভাবে লাঞ্চনার শিকার কিশোরী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ২ বছর ধরে হানিফ এবং কিশোরী শায়লার (ছদ্মনাম) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি শায়লা হানিফকে বিয়ের ব্যাপারে চাপ দিতে থাকলে হানিফ টালবাহানা করে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। এতে শায়লা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বিষয়টি তিনি পরিবারে জানান। এরপর শায়লার পরিবার থেকে হানিফের পরিবারের নিকট তাদের বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু হানিফের পরিবার শায়লাকে পুত্রবধূ করে আনতে অস্বীকৃতি জানান। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কিশোরী শায়লা উপায়ন্তর না পেয়ে ৩০ আগস্ট (শুক্রবার) পরিবারের অগোচরে প্রেমিক হানিফের বাসায় বিয়ের দাবিতে উপস্থিত হন।
শায়লাকে বাড়িতে দেখে হানিফ, তার বাবা হাসমত এবং মা সুফিয়া বেগম মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে শায়লা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হানিফের পরিবার তাকে বাসার বাইরে রেখে আসেন।
স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে শায়লাকে উদ্ধার করে দেবীগন্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বর্তমানে শায়লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: অর্জুন মেয়েটির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল আছে বলে নিশ্চিত করেন।
ঘটনার পরপরই উপজেলা আইন সহায়তা কেন্দ্রের (আসক) সদস্যরা প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য শায়লা ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এবিষয়ে আসকের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, “বিষয়টি অবগত হওয়ার পরই আমরা নির্যাতিত মেয়ে ও তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। আপাতত মেয়েটির ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমরা হানিফের পরিবারের সাথে হানিফ ও শায়লার বিয়ের ব্যাপারে মধ্যস্থতা করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত আলোচনা ব্যর্থ হলে আমরা মেয়েটিকে মামলা দায়েরে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করব।”
ঘটনার ব্যাপারে জানতে হানিফের বাবা হাসমত আলীকে মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শাহা আলম জানান, বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ প্রদান করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।