প্লিজ, মায়ের ধর্ষকদের শাস্তি দিন
প্লিজ, মায়ের ধর্ষকদের শাস্তি দিন
সিরাজী এম আর মোস্তাক
নোয়াখালী জেলায় সুবর্ণচরে ৪সন্তানের মাকে নরপশুরা ধর্ষণ করেছে। সে মা এখন হেয়, লান্থিত ও কলঙ্কিত। শুধু ধর্ষিতা মা নয়; বাংলাদেশের নারী ও সমাজ কলঙ্কিত। সে শুধু ৪সন্তানের মা নয়; ধর্ষক নরপিশাচ ছাড়া দেশের ১৭কোটি নাগরিক সবারই মা, বোন ও মেয়ে। কেউ কি তার মায়ের চিহ্নিত ধর্ষকদের ক্ষমা করতে পারে? আমাদের মাননীয় দেশনেত্রী শেখ হাসিনা মায়েরই জাত। তিনি কি তাঁর মেয়ের ধর্ষকদের ক্ষমা করতে পারেন? ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ ধর্ষিতাকে বোন সম্বোধন করে তার কপালে হাত রেখে ধর্ষকদের শাস্তির শপথ নিয়েছেন। ধর্ষকদের শাস্তি দাবিতে অসংখ্য র্যালি ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখনো চিহ্নিত ধর্ষকদের শাস্তি হয়নি এবং অনেকে আটকও হয়নি। ধর্ষকদের শাস্তির সম্ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়েছে। শোনা যাচ্ছে, মূল ধর্ষকেরা বিদেশে পালানোর সুযোগ পেয়েছে। এভাবে বিশ্বজিৎ হত্যার বিচারে দেখা গেছে, চিহ্নিত ঘাতকদের বিদেশে পাঠিয়ে আদালতে তাদের ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। আর সাধারণ আটককৃতদের যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। মায়ের ধর্ষকদের ক্ষেত্রেও কি তাই হবে? ধর্ষিতা মায়ের কষ্ট ও বেদনা কি কারো বিবেকে নাড়া দেবেনা? ধর্ষিতা মা কি এখন থেকে কলঙ্কিত জীবন যাপন করবে? দয়া করে বিষয়টি ভাবুন। ধর্ষকদের আটক বা সাজানো বিচারের নামে প্রহসন থেকে বিরত থাকুন। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করুন। যেন আর কোনো মা-বোন ধর্ষিতা না হয়। আর যেন বাংলাদেশের নারী ও সমাজ কলঙ্কিত না হয়।
যারা মাকে ধর্ষণ করেছে, ওরা অতি নিকৃষ্ট। সাধারণ ব্যভিচারীর চেয়েও নিকৃষ্ট। ওরা মানবতার শত্রু। ওরা মানবতা বিরোধী অপরাধী। পবিত্র কোরআনে সাধারণ ব্যভিচারেও কঠোর শাস্তি বর্ণিত হয়েছে। বিবাহিত ব্যভিচারী বা ব্যভিচারিনীর শাস্তি, পাথর মেরে হত্যা করা। অবিবাহিতদের শাস্তি, একশ বেত্রাঘাত করা। ধর্ষণে একইসাথে ব্যভিচার ও জুলুম সংঘটিত হয়। এক্ষেত্রে শুধু ধর্ষকের শাস্তি হয়, ধর্ষিতার নয়। ধর্ষণের শাস্তি ব্যভিচারের শাস্তির চেয়ে কঠোরতর। মায়ের ধর্ষকদের ক্ষেত্রে এ শাস্তি কার্যকর করুন। তাহলে আর কোনো মা-বোন ধর্ষিতা হবেনা। বাংলাদেশের নারী ও সমাজ কলঙ্কিত হবেনা। ধর্ষিতা মা সমাজে হেয় হবেনা। ধর্ষিতা মা ও দেশবাসী সবাই স্বস্তি পাবে।
মায়ের ধর্ষকদের শাস্তি দিবে কে? সম্প্র্রতি মাদক বিরোধী অভিযানে টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামের মতো অসংখ্য ব্যক্তি নির্বিচার ক্রসফায়ারে নিহত হলো, দেশের আদালত তাতে নিরব ছিল। এখন ধর্ষণের ঘটনাতেও আদালত নিরব রয়েছে। এটিই কি বিচারবিভাগের অবস্থা? নির্বিচার ক্রসফায়ারের ঘটনায় তারা প্রশাসনের অধীন ছিলেন, এখন ধর্ষণের ঘটনায় কার অধীন হয়েছেন? এমতাবস্থায়, আমরা কার কাছে মায়ের ধর্ষকদের শাস্তি দাবি করবো? কে করবে মায়ের ধর্ষকদের বিচার? সরকার, আদালত নাকি সচেতন নাগরিক সমাজ?
যাই হোক, প্লিজ মায়ের ধর্ষকদের শাস্তি দিন। ধর্ষিতা মায়ের কষ্ট ও বেদনা অনুধাবন করুন। ধর্ষকদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করুন। ধর্ষকমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ুন।
- প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।