শাহিন মামুন এর কবিতা- নারী
নারী
শাহিন মামুন
তোমরা পুরুষেরা বলো, নারী তুমি ছলনাময়ী।
আমি বলি তুমি শোন হে পুরুষজাতি!
আমি নারী নই ছলনাময়ী
আমি নারী অতিমানবিনী
শুধু প্রযোজন হলে, একটু হই বহুরূপী
তোমাদেরই তরে, এই বিশ্বের বুকে।
যেদিন আমি এসেছিলাম, এই পৃথিবীর বুকে
ছিলাম বাবা-মায়ের কাছে আদরের কন্যে
ভাইয়ের কাছে ¯েœহের বোনরূপে।
সময়ের ব্যবধানে হয়েছি তোমাদেরই
কোন পুরুষের জীবনের অর্ধাঙ্গী
অতপর তারই সন্তানেরই মা-জননী।
এবার বলো হে পুরুষজাতি!
আমি নারী ছলনাময়ী না বহুরূপী?
আমি নারীই সেদিন এসেছিলাম তোমাদের
পুরুষ শাসিত সমাজে, ধর্মীয় গোরামী আর
কুসংস্কারের শৃঙ্খল ভেঙ্গে দিতে
অবরোধবাসিনী নারী সমাজকে
শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া হয়ে।
আমি নারীই ছিলাম সদা জাগ্রত
ছিল মম শির সদা উন্নত
৫২-৭১, অতপর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে
তোমাদের পুরুষের মাঝে মিটিং-মিছিলে
নয়তো বা কবিতা কিংবা উপন্যাসের মাঝে
সুফিয়া, জাহানারা, নূরজাহান হয়ে।
আমি নারীই তোমাদের পুরুষের মতোই
নিয়েছিলাম অস্ত্র হাতে তুলে
রনাঙ্গণে ব্রিটিশ-পাকিস্তানীদের তাড়াতে
প্রীতিলতা, তারামন আর সেতারা হয়ে।
আমি নারীই মতিয়ার এসেছিলাম
অগ্নিকন্যা রূপে ৭১’ এ ঢাকার রাজপথে
তোমাদের পুরুষেরই মাঝে।
আমি নারীই দেশের প্রয়োজনে হয়েছি
কখনো খালেদা-হাসিনা,
কখনো বা ইন্দিরা-মমতা পৃথিবীর বুকে।
এবার বলো হে পুরুষজাতি!
আমি নারী ছলনাময়ী না বহুরূপী?
আমি নারীই এসেছিলাম আরবের বুকে
আল্লাহ-রাসূল (সঃ) এর বাণী রক্ষার্থে
ইসলাম ও মুসলিমের বিনাশ ঠেকাতে
হযরত আয়শা-হাফছা (রাঃ) হয়ে।
আমি নারীই সনাতন হিন্দু ধর্ম মতে
অবতীর্ণ হই যুগেযুগে, পৃথিবীর বুকে
যখন বেড়ে যায় অধর্ম, গ্লানি মানুষের মাঝে
দশহাত নিয়ে, শক্তির প্রতীক হয়ে
দূর্গতিনাশিণী, দেবী দূর্গাদেবী রূপে
পৃথিবীর বুকে অসূরকে বধ করে
পূণরায় ধর্ম স্থাপন করতে।
এবার বলো হে পুরুষজাতি!
আমি নারী ছলনাময়ী না বহুরূপী?